ইনসাইড পলিটিক্স

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান: বিএনপির ৫ পছন্দ


প্রকাশ: 03/03/2023


Thumbnail

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। বিএনপি আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে নতুন করে  সুসংগঠিত করার প্রস্তাবও করেছে। সেই প্রস্তাবের আলোকে সংবিধান সংশোধনের দাবি করেছে ক্ষমতার বাইরে ১৬ বছর থাকা দলটি। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ভাবে বলে দেওয়া হয়েছে, সংবিধান সংশোধন এবং সংবিধানের বাইরে গিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে কোন সুযোগ নেই। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন একটি মৃত ইস্যু। এই মৃত ইস্যুকে পুনরুজ্জীবিত করার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু বিভিন্ন মহলে বিএনপি আলাপ-আলোচনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে একাধিক ব্যক্তির নাম আলোচনা করছে। এ পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে অন্তত পাঁচজনের ব্যাপারে  আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানা গেছে। তবে আগের আদলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি করলেও বিএনপি সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান করার অবস্থান থেকে সরে এসেছে। 

বিএনপির অনেক নেতা বলছেন, তারা বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাননা জন্যই সেই জায়গা থেকে সরে এসেছেন এবং এই ধরনের ব্যবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়, সে বিতর্ক বিচারকে প্রভাবিত করে করে। এবার বিএনপি মনে করছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে কাঠামো তাতে একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তির নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা উচিত। আর এক্ষেত্রে বিএনপির পছন্দের কিছু ব্যক্তির নাম উচ্চারিত হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। বিএনপি নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা এবং বিভিন্ন কূটনীতিকদের সাথে আলোপ-আলোচনায় যে নামগুলো বলছেন তার মধ্যে রয়েছে;

১. ড. মুহাম্মদ ইউনূস: ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে বিএনপির সর্বাধিক উচ্চারিত নাম। বিএনপি নেতা ড. মঈন খান একাধিক কূটনীতিকদের সাথে বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান কে হতে পারেন- এরকম প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে পারেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম বিএনপি মার্কিন দূতাবাসের এক চা চক্রে আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে। 

২. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা: সাবেক আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি থাকা আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে বিএনপির আপত্তি নেই-এমন কথাও বিএনপির নেতাদের মুখে শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে বিএনপিতে যারা আইনজীবী হিসেবে পরিচিত তারা সাবেক বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান হিসেবে দেখতে চান বলে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা চলে যাবার পর আবদুল ওয়াহহাব মিঞা ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। 

৩. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান হিসেবে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নামও কেউ কেউ বলছে। তবে বিএনপির চেয়ে সুশীল সমাজের মধ্যে ড. দেবপ্রিয়কে নিয়ে আগ্রহ বেশি। তারা মনে করছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বার্ধক্যজনিত কারণে এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হওয়ার মতো অবস্থায় নেই। তাছাড়া ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও সমস্যা রয়েছে আওয়ামী লীগের মধ্যে। এই প্রেক্ষাপটে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সুশীলদের বিকল্প পছন্দ।

৪. হোসেন জিল্লুর রহমান: হোসেন জিল্লুর রহমানের নামও কোনো কোনো মহল থেকে আলোচনা হচ্ছে। ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ব্র্যাকের বর্তমান চেয়ারপার্সন হোসেন জিল্লুর রহমান ২০০৭ সালে ১/১১ সরকারের সময় উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেই সময় অনির্বাচিত সরকারের নির্বাচনী অভিযাত্রায় হোসেন জিল্লুর রহমান ভূমিকা রেখেছিলেন।

৫. আলী রিয়াজ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষকতা করা আলী রিয়াজও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে বিএনপির কারও কারও পছন্দ। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা এগুলোকে অলীক কল্পনা বলেছে। তারা বলছেন, বিএনপির আন্দোলনের কোনো খবর নেই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নাম ঠিক করছে! এ ধরনের প্রচেষ্টা কখনোই সফল হবেনা বলে তারা মনে করছেন। তারা বলছেন, বাংলাদেশে আর কোনো ভুতুড়ে সরকারকে ক্ষমতায় বসতে দেয়া হবে না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭