ইনসাইড থট

‘তামাশা নয়, নির্বাচন হবে উৎসবমুখর’


প্রকাশ: 05/03/2023


Thumbnail

সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে, আগত সাধারণ নির্বাচন কোন তামাশার বিষয় হবে না। আমি নিজেও তার কথার সাথে একমত যে, নির্বাচন কোন তামাশার বিষয় নয়। আমাদের দেশে একমাত্র জিয়াউর রহমান সাহেব যখন ‘ইয়েস-নো’ ভোট করেছিলেন বা এরশাদ সাহেব করেছিলেন, তাদের আমলাতান্ত্রিক সময় ছাড়া, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের আমলে নির্বাচন কোন তামাশার বিষয় হয়নি। নির্বাচন হয়েছে গণতান্ত্রিক উপায়ে। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক দেশে ফেরার আগে সব সময় কারফিউ চলত। তিনি দেশে ফিরে এসে আন্দোলন করে কারফিউ বন্ধ করলেন। তারপর জনগণের ভোটের অধিকার আদায় করে তিনি নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হলেন এবং যখন সময় শেষ হলো, তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর করলেন। এর পরবর্তী নির্বাচনে হেরে গেলেন। তিনি বিরোধী দলে থাকলেন। এর পরের ইতিহাস সবাই জানে। ২০০১ সালে বিএনপি নির্বাচনে জেতার পর খালেদা জিয়া এবং তার কু-পুত্র তারেক জিয়া কিভাবে এ দেশে অত্যাচার চালিয়েছে এবং অত্যাচারের মাধ্যমে এ দেশের গণতন্ত্রকে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

এরপর এক-এগারো আসলো। এক-এগারো এসে আর্মি সরকার আর যাই করুক একটি কাজ ভাল করেছে যা ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। সেটি হচ্ছে, প্রায় দেড় কোটি মিথ্যা জাল ভোট তারা বের করতে পেরেছে এবং সেগুলো তারা বাতিল করেছে। ফলে নির্বাচন সুষ্ঠ হয় এবং দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হন। এরপর যতগুলো নির্বাচন হয়েছে প্রত্যেকটি নির্বাচনে তিনি নির্বাচনের মাধ্যমেই জয়লাভ করেছেন এবং নির্বাচন নির্বাচনের মতোই হয়েছে।

এখন কারো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা কিংবা না করা এটা অবশ্যই তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। বিশ্বের অনেক দেশেই আছে বিশেষ করে ইউরোপের কিছু কিছু দেশে ভোট দিতেই হবে। না দিলে যুক্তি কারণ ছাড়াই ফাইন হয়। আর আমেরিকাসহ অধিকাংশ দেশে নির্বাচনে ভোট দেয়া না দেয়া যার যার খুশি। অনেক জায়গায় দেখা যায় ৩০ পার্সেন্ট ভোটও হয় না। কিন্তু নির্বাচনকে কেউই, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ কখনোই তামাশা হিসেবে গ্রহণ করে না। 

বাংলাদেশে ১৪ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি হিসেবে বাংলার আনাচে কানাচে আমাকে যেতে হয় এবং আমি দেখেছি প্রতিটি লোক আগামী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা কোন তামাশা দেখার জন্যে তাকিয়ে নেই। এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। এবং এটুকুও বলতে পারি যে, নির্বাচন হবে এবং সঠিক সময়ে হবে। এ বছরের শেষে অথবা আগামী বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হতে পারে। এবং নির্বাচন কমিশন খুব স্পষ্ট করে বলেছেন যে, তাদের দায়িত্ব হচ্ছে বর্তমানে যে সংবিধান ওই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। এ সংবিধানে তামাশার নির্বাচন হওয়ার কোন সুযোগ নেই। যেহেতু তামাশার নির্বাচনের কোন সুযোগ নেই, সুতারং তামাশার নির্বাচন তো হবেই না। এখন আমার মনে হয়, উনারা উল্টা-পাল্টা বলা শুরু করেছেন। কারণ যতদিন যাচ্ছে ততই বিএনপির পায়ের নিচে থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। তাই তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে এবং তাদের সাথে দুইটি পত্রিকা এবং কিছু অর্থনৈতিকভাবে লাভবান বুদ্ধিজীবী- যারা নিজেদেরকে সুশীল নাম দিয়েছে, তারাও বিএনপিকে বিভ্রান্ত করছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা নিয়ে সংবিধান পরিবর্তন করার যে প্রচেষ্টা করা হচ্ছে বিশ্বের কোথাও এরকম নজির নেই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন সঠিকভাবে না হলে তার প্রতিবাদের ভাষা আছে, অনেক কিছু আছে। কিন্তু সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে, এ রকম পৃথিবীতে আমার চোখে অন্তত পড়েনি। সুতারং নির্বাচন আর সংবিধান দুইটো আলাদা বিষয়।

আমি জানি যে, এ নির্বাচনে অনেক পানি ঘোলা করে আবার বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু দেশের জনগণ, বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তারা কিন্তু এখন রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত সচেতন। তারা নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছে। এ থেকে বোঝা যায়, নির্বাচন তামাশা হবে না। বরং নির্বাচন হবে উৎসবমুখর। উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য বিএনপির উচিত সোজা পথে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রচেষ্টা চালানো। সঠিক সময়ে সংবিধান অনুযায়ী উৎসবমুখর পরিবেশেই নির্বাচন হবে এবং এই সংবিধান পরিবর্তনের সামান্যতম কোন সম্ভাবনা নেই।  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭