ইনসাইড পলিটিক্স

বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়বে?


প্রকাশ: 05/03/2023


Thumbnail

আবেদন পেলে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। রোববার (৫ মার্চ) সরকারি মামলার ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রযুক্তি উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা জানান। আগামী ২৪ মার্চ খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে, নতুন করে সে মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এখনো কোনো আবেদন পাইনি। আবেদন পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেব।’

এদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এমন বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। কেউ বলছেন, ভেতরে ভেতরে বেগম জিয়া সরকারের সাথে আঁতাত করেই চলেছেন। তা না হলে বার বার তাঁর সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ছে কেন? আবার কেউ বলছেন, আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্য নীরব সম্মতির লক্ষণ। তার মানে বেগম জিয়ার পরিবার থেকে যদি আবেদন করা হয়, তাহলে সাজা স্থগিতের মেয়াদ ফের বাড়বে। আবার কেউ কেউ বলছেন, বেগম জিয়া ভেতরে ভেতরে সরকারের সাথে আঁতাত করে চললেও বেগম জিয়ার দল বিএনপি বাইরে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে- নির্বাচন বানচাল বা নির্বাচনকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এ কেমন রাজনীতি? -এমন প্রশ্নও রেখেছেন কেউ কেউ। তবে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে বড় প্রশ্নটি হলো বেগম জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ কি ফের বাড়বে?          

জানা গেছে, বেগম জিয়ার পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে গত বছর ১৯ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ ষষ্ঠ দফায় ৬ মাসের জন্য বাড়ানো হয়। বরাবরের মতো এই সময়েও ঢাকার নিজ বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা নেবেন এবং দেশের বাইরে যেতে পারবেন না- এমন দুটি শর্ত ছিল তার দণ্ড স্থগিতের পেছনে।

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর (রোববার) আইন বিচার ও সংসদ বিষযক মন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুটি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ছে। বর্ধিত ৬ মাস মেয়াদে খালেদা জিয়া ঢাকার নিজ বাসায় থেকে তার চিকিৎসা নেবেন এবং এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না- আগের মতো এই দুটি শর্তে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়েছে।

২০২২ সালের ১১ সেপ্টম্বর (রোববার) দুপুরে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বরাবর সাজা স্থগিতের এ আবেদনটি করেন। আবেদনটি বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বিজন কান্তি দাস স্বারাষ্ট্র মন্ত্রীর দপ্তরে পৌঁছে দিয়েছিলেন। আবেদনে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ করেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। এ সময় খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত ষষ্ঠ বারের মতো বাড়ানো হয়। 

উল্লেখ্য, বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর তাঁর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর’-এর ধারা-৪০১ (১)-এর ক্ষমতাবলে সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রথমবারের মতো শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি পান খালেদা জিয়া। ওই দিনই হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফেরেন তিনি। একই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। এরপর গত প্রায় তিন বছরে দফায় দফায় বাড়ে মুক্তির মেয়াদ। ৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া গত প্রায় তিন বছর ধরে গুলশানে নিজ বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭