ইনসাইড গ্রাউন্ড

ক্রিকেটার তৈরির পাইপলাইন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/02/2018


Thumbnail

বর্তমান বাংলাদেশ দল নির্বাচন দেখলে কেন যেন নির্বাচকদের মাঝে এক ধরণের অস্থিরতা দেখা যায়। যেমনটা দেখা যেত টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর শুরুর দিনগুলোতে। তখন দলে কে ঢুকছেন আর কেইবা বের হচ্ছেন তার হিসেব করতেই হিমশিম খেতে হতো। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দল নির্বাচন যেন আবারও সেই দিনগুলোর ইঙ্গিত দেয়। ত্রিদেশীয় সিরিজ, লঙ্কানদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে কতজন খেলোয়াড় নেওয়া হলো আর বাদ দেওয়া হলো, সেই হিসাব রাখতে গেলে হোঁচট খেতে পারেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।

তাই প্রশ্ন উঠেছে, দারুণ ছন্দে চলতে থাকা বাংলাদেশ দলের জায়গাগুলো হঠাত করেই কেন মিউজিক্যাল চেয়ারে পরিণত হচ্ছে? কেনইবা এত ‘এক্সপেরিমেন্ট’? আমাদের ‘পাইপলাইন’এ ভালো ক্রিকেটারের কি অভাব শুরু হয়ে গেলো? এসব প্রশ্নের উত্তর খুজতেই যেন ব্যস্ত দেশের ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট তারকা সাকিব, মি. ডিপেন্ডেবল মুশফিক কিংবা আজকের সৌম্য। এঁরা সবাই বিকেএসপি থেকেই উঠে এসেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের ক্রিকেটার তৈরীর মূল স্তম্ভ বিকেএসপি থেকে ভালো মানের ক্রিকেটার উঠে আসছে না। একই সঙ্গে দেশের জেলাভিত্তিক পর্যায়ে বিসিবির কার্যক্রমে নেই কোনো গতি। লিগগুলো সব ঢাকা কেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। আর এসব কারণেই সাকিব-তামিমরা যে পাইপলাইন দিয়ে আজ জাতীয় দলে সে পাইপলাইন আজ ধীরে ধীরে ভেঙে যাচ্ছে।

তাই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নতুন চিন্তা, বিদেশি কোচ দিয়ে সাহায্য করবে বিকেএসপিকে। লক্ষ্য একটাই ভালো মানের ক্রিকেটারদের একটা পাইপলাইন তৈরী করা, যারা পরবর্তিতে জাতীয় দল, এ দল কিংবা বয়সভিত্তিক দলগুলোকে সার্ভিস দেবে। আর বিকেএসপিও রাজি বিসিবির এই প্রস্তাবে। তাই কোচ নিয়োগের কাজও খুব দ্রুতই শুরু করতে চায় বিসিবি।

একটা পাইপলাইন না হয় তৈরী হল। কিন্তু সেই ক্রিকেটারদের খেলায় পরিপক্কতা আসার আগেই আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামিয়ে দেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত। বিষয়টা এমন যুদ্ধে এখনই নামতে হবে নাহলে সব হাতছাড়া! উদাহরণ হিসেবে- ‘ভবিষ্যতের সাকিব’ তকমাও পাওয়া আফিফ যখন নিজেকে আরও শাণিত করে নিতে প্রস্তুত হচ্ছে, ঠিক তখনই তাঁকে কেন টি-টোয়েন্টিতে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক করানো হলো। কিন্তু এক ম্যাচ খেলে দ্বিতীয় ম্যাচেই সে বাদ। যে খেলোয়াড়টিকে আমরা ‘ভবিষ্যতের সাকিব’বলছি, তাঁকে এক ম্যাচ খেলিয়েই বসিয়ে দেওয়া কতটা ঠিক? গত এক মাসে বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন মোট ২৮ জন ক্রিকেটার। যদিও দেশের হয়ে এক বছরে ৩১ ক্রিকেটারের খেলার অতীত রেকর্ড আছে। কিন্তু তখনকার বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ অনেক পার্থক্য। নির্বাচকরা সেটা বুঝতে মনে হয় ভুল করছেন।

তারওপর আমাদের ‘এ’ দলেরও কোনো কার্যক্রম নেই। তাহলে পাইপলাইনে থাকা ক্রিকেটাররা আন্তর্জাতিক সার্কিটে খেলতে নিজেদের শানিত করবে কোথায়?

সোজা কথা, পাইপলাইন তৈরীর পাশাপাশি নির্বাচকদের দলে নতুন রক্ত সঞ্চালনের অস্থিরতাটা বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে দ্রুততার সঙ্গে ‘এ’ দলের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরী করতে হবে। তাহলেই আর সাকিব কিংবা তামিমের ইনজুরিতে ভূত দেখার মত চমকে উঠতে হবে না টাইগার টিম ম্যানেজমেন্টকে। নাহলে পরিণতি কি হতে পারে তা এই শ্রীলঙ্কা সিরিজই দেখা গিয়েছে।

বাংলা ইনসাইডার/ডিআর/জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭