ইনসাইড বাংলাদেশ

গোখরার খামার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/02/2018


Thumbnail

মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম সাপ। যে কেউ সাপের কথা শোনলেই গা শিউরে উঠে। তবে নিষ্ঠা আর সঠিক কলাকৌশল জানা থাকলে ভয়কে জয় করা যায় সহজেই। সারা বিশ্বে সাপের বিষের ব্যাপক চাহিদা। যে কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় ইতিমধ্যেই সাপের খামার চালু হয়েছে । এবার গাজীপুরের কাপাসিয়ার কয়েক তরুণ মিলে গড়ে তোলেছেন গোখরা সাপের খামার।

সরজমিনে দেখা গেছে, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা শহর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে বরুন গ্রামে ৫ বাই ৫ ফিটের দুটি পাকা ঘরে চলছে সাপ লালন-পালন। একেক সাইজের এবং একেক প্রজাতির সাপগুলো রাখা হয়েছে আলাদা। সাপগুলো এমনভাবে গিজি গিজি অবস্থায় পেচিয়ে মেঝেতে পড়ে আছে, যা দেখলে গা শিহরে ওঠার মতো। সংরক্ষিত হওয়ার পরও অনেক দর্শনার্থী উঁকি মেরে সাপ দেখে কৌতুহল মেটায়।

ব্যতিক্রমী এই সাপ খামারের উদ্যোক্তা তিনজন। বরুন গ্রামের তিন বন্ধু প্রদীপ দাস, মাসুদ ও কাউসার সাপ পালনের জন্য সাপের খামার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন।

সাপের খামার গড়ে তোলার পেছনে প্রদীপ দাস বলেন, ২০১৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষা শেষে তিন বন্ধু কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। পরে তিন বন্ধু ব্যতিক্রমী সাপের খামার গড়তে সিদ্ধান্ত নেয়। আর যেই কথা সেই কাজ। পরে সাভারের বক্তাপুর বেদে পল্লী থেকে ৬টি গোখরা সাপ কিনে আনেন। একেকটি সাপ সাতশ’ টাকায় কেনা হয়েছিল।

পরে তিন বন্ধু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে সাপ খোঁজ আনেন। এভাবে একটি-দুটি করে ২৫টি সাপ সংগ্রহ করেন তিন বন্ধু। প্রদীপদের সাপের খামারে ইতিপূর্বে ২০টি ডিম দেয় গোখরা সাপ। কিন্তু একটি ডিমও ফুটেনি। তবে এতে তিন বন্ধু পিছপা হননি। চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের সাপের খামার। এলাকার অনেকেই সাপ পালনে উৎসাহ দিচ্ছেন বলে জানায় প্রদীপ দাস।

গোখরার খামারের অপর উদ্যোক্তা ও প্রদীপের বন্ধু মাসুদ বলেন, খামারের সাপের প্রধান খাবার ইদুর, ব্যাঙ, মুরগীর বাচ্চা ও ডিম। এসব খাবার সংগ্রহ করতে লোকবল এবং অর্থের দরকার। কিন্তু খামার থেকে আপাতত কোনো আয় না হওয়ায় কষ্ট হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, হিংস্র এই প্রাণী যে কোনো সময় যে কাউকে দংশন করতে পারে। তবে এমনটি যেন না ঘটে এজন্য যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করা হয়। খামারি কাউসার বলেন, সরকারি নীতিমালা থাকলেও তারা পাচ্ছেন না অনুমোদন।

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, আমি নিজে কয়েকবার প্রদীপের সাপের খামার পরিদর্শন করেছি। অনুমোদনের জন্য আমরা সহযোগিতা করতেছি। তিনি আরও বলেন, দেশে সাপের বিষের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয়ভাবে সাপের খামার করতে উৎসাহিত ও পৃষ্ঠপোষকতা করা হলে দেশের মুদ্রা সাশ্রয় হবে এবং খামারিরাও লাভবান হবেন।

কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাকছুদুল ইসলাম বলেন, সাপের খামার ব্যতিক্রমী ব্যবসা। ব্যতিক্রমী এই সাপ খামারীদের উৎসাহিত এবং সহায়তা করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে।


বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭