প্রকাশ: 07/03/2023
সাকিব আল হাসান, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার কিংবা এই প্রজন্মের সবচেয়ে প্রতিভাবান অলরাউন্ডারের তকমা তার বহু পুরনো। হাল সময়ের সেরা ক্রিকেটারদের সাথে তুলনা করা হয় তার। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দিয়ে আসছেন ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই। তার অলরাউন্ডিং পারফর্ম্যান্সের উপর ভর করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের ফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। গতকালই যার দৃষ্টান্ত দেখা গেলো আরো একবার। চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে দুই বিভাগেই সেরা পারফর্মার হয়ে ম্যাচ সেরার পুরষ্কারও উঠেছে তার হাতে। তবে সব ছাপিয়ে এই ম্যাচ দিয়ে ক্রিকেটের আরেকটি এলিট ক্লাবে প্রবেশ করেছেন সাকিব।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টাইগারদের ৫০ রানের জয়ে ব্যাট হাতে ৭৫ রানের ইনিংসের পর বল হাতে নিয়েছেন ৪ উইকেট। আগে ব্যাট করা বাংলাদেশের আড়াইশোর কাছাকাছি সংগ্রহের ভিতটাও গড়ে দিয়েছেন তিনি। প্রথম ৫৫ বল থেকে অর্ধশতক পূরণ করা সাকিব পরের ১৬ বল থেকে নিয়েছেন আরো ২৪ রান। ফিফটির আগে মেরেছেন ৩টি বাউন্ডারি, আর পরে তার ব্যাট থেকে এসেছে আরো ৪টি বাউন্ডারি। ব্যাটিং করেছেন একশোর উপরে স্ট্রাইকরেটে। পরে বোলিংয়েও সাফল্যের শুরুটা হয়েছে তার হাত ধরেই। ফিল সল্টকে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভেঙে দেয়ার পর মিনি ধস নামিয়েছেন ইংলিশদের ব্যাটিং অর্ডারে। আর শেষ দিকে রেহান আহমেদের উইকেট নিয়ে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩০০ উইকেটের মালিক হয়েছেন সাকিব।
নতুন এই রেকর্ডটি যে অনেকদিন তার দখলে থাকছে সেটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। কারণ তার ধারেকাছে নেই এই তালিকায় শীর্ষ পাঁচের কেউই। আবার এদের তিনজনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন অনেক দিন হলো। যদিও ২৬৯ উইকেট নিয়ে সাকিবের পরে থাকা সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো বিদায় না নিলেও তার ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ২০৭ উইকেট নিয়ে তিন নম্বরে রয়েছেন বর্তমান নির্বাচক প্যানেলের অন্যতম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক। বর্তমানে জাতীয় দলে খেলছেন এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে এই তালিকায় থাকা একমাত্র ক্রিকেটার মুস্তাফিজুর রহমান। ১৪২ উইকেটে নিয়ে চারে আছেন তিনি। আর পাঁচ নম্বরে থাকা রুবেল হোসেনের শিকার ১২৯ উইকেট। দেশের মাটিতে সাকিবের উইকেট সংখ্যা ১৭৮। প্রতিপক্ষের মাঠে ৭৮ এবং নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ৪৪টি উইকেট পেয়েছেন এই অলরাউন্ডার। এরমধ্যে হোম অব ক্রিকেট মিরপুরেই ১৩১টি উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। ওয়ানডেতে সাকিব সর্বোচ্চ ৮২ উইকেটে নিয়েছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
শুধু দেশের ক্রিকেটে নয় সাকিব মাইলফলক ছুঁয়েছেন সামগ্রিক হিসেবেও। ক্রিকেট ইতিহাসের তৃতীয় অলরাউন্ডার হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে ৬ হাজার রান ও ৩০০ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখালেন তিনি। তার আগে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন যে দুজন তারাও প্রতিনিধিত্ব করেছেন এশিয়ার। শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি সনাৎ জয়সুরিয়া ও পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি। লঙ্কান গ্রেটের নামের পাশে রয়েছে ১৩ হাজার ৪৩০ ও ৩২৩টি উইকেট। আর ৮ হাজার ৬৪ রানের সাথে ৩৯৫ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করেছেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। তবে এই ডাবল অর্জনে একটি জায়গায় দুজনকেই পেছরে ফেলেছেন সাকিব। এই কীর্তি গড়তে ২২৭ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। সেখানে ৩১৪ ম্যাচ আফ্রিদির ও জয়াসুরিয়ার লেগেছিলো ৩৯৭ ম্যাচ।
রানের সংখ্যায় জয়সুরিয়া অনেক এগিয়ে থাকলেও উইকেটের হিসাবে তাকে ছাড়িয়ে যেতে সাকিবের খুব বেশি সময় লাগার কথা না। আবার রানের হিসেবে আফ্রিদির থেকে খুব বেশি পিছিয়ে না থাকলেও, উইকেটের হিসাবে বেশ খানিকটাই পিছিয়ে রয়েছেন তিনি। তবে নিজের পারফর্ম্যান্সের ধার ধরে রাখতে পারলে ক্যারিয়ার শেষে তার রান ও উইকেট সংখ্যা কোথায় গিয়ে দাড়াবে তা অনুমান করা মুশকিল। তবে রেকর্ড ভাঙা-গড়াই যার কাজ, সেই সাকিব আল হাসানের সামনে হাতছানি রয়েছে আরেকটি মাইলফলকের। ওয়ানডে ক্রিকেটে ২৪ রান করলেই ৭ হাজার রানের মালিক হয়ে যাবেন এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭