ইনসাইড থট

তারেক জিয়ার পে-রোলে কারা কারা আছে?


প্রকাশ: 07/03/2023


Thumbnail

মার্চ মাস আমাদের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাস। বিভিন্ন কারণে মার্চ মাস আমাদের জন্য ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। ১৭ই মার্চ সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহন করেন। এই মহামানবের জন্ম না হলে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেতাম না। আজ ৭ই মার্চ। ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ আজ বিশ্বের সম্পদ। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা অপারেশন সার্চলাইটের নামে পুরো জাতিকে ধ্বংস করার জন্য তারা সেদিন ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালীদের উপর বর্বর আক্রমণ চালায়। আর ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানীরা কারাগারে নিয়ে যাওয়ার আগেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। অর্থাৎ ২৬শে মার্চ ১৯৭১ থেকে আমরা স্বাধীন জাতি। তবে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অধীনে ছিলাম। শেষে ১৬ই ডিসেম্বর আমরা বিজয়ের মাধ্যমে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করি এবং ১০ই জানুয়ারি জাতির পিতার বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে আসার মাধ্যমে স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়।

কিছুদিন আগে আমার এক অনুজ আমাকে বললো, মোদাচ্ছের ভাই আপনি ১৯৭৩ সালে আমি বিলেতে চলে গেলেও এই যে ১৯৭৩, ১৯৭৪ সালে যে সকল ঘটনা ঘটেছে তা তো আপনি দেখেছেন। সেখানে বসেও আপনি বাংলাদেশের খবর রেখেছেন। তখন পত্রিকার কাটিংগুলো যদি আপনি নজর দেন তাহলে দেখবেন তখনকার পুর্বদেশ, দৈনিক বাংলা, ইত্তেফাক, অবজারভার তারা সবসময় নেতিবাচক খবর দিত। যেমন পাটের গুদামে আগুন সেটি খুব বড়সড় ভাবে প্রচার করা হত। কোথাও হরতাল, এমনকি একজন এমপিকে ঈদের নামাজে বসে হত্যা করা হয়েছে। তখন জাতির পিতাকে এবং তার সরকারকে যতভাবে ব্যাস্ত রাখা যায় এবং যতরকম ক্ষতি করা যায় তার সব প্রচেষ্টা করা হয়েছে। এই পত্রিকাগুলো খুব গুরুত্ব দিয়ে সমস্ত জনগণের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে একটি নেতিবাচক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছে। এবার ২০২৩ সালে এসে মনে হচ্ছে যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ককে একদম নিশানা করে নেতিবাচক খবরগুলোকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। এটা সত্য অনেক নেতিবাচক ঘটনা ঘটছে যে কারণেই এই পত্রিকাগুলোর লিখতে সুবিধা হচ্ছে।

সম্প্রতিকালে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফলে ভুলভ্রান্তির ঘটনা ঘটেছে। কার ভুল সেটা পরের ব্যাপার। এটা কিন্তু কোন ছোট বিষয় নয়। এরকম বিভিন্ন যে ঘটনা ঘটছে তা দেখে আমার মনে হচ্ছে এই ঘটনাগুলো লন্ডনে বসে তারেক জিয়া তার এজেন্টদের দিয়ে এসব করাচ্ছে এবং খুব যোগ্য লোক দিয়েই এসব কাজ করানো হচ্ছে। যারা অনেকেই সরকারের ভেতরে এমনকি দলের ভেতরও প্রবেশ করেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করেছে বলে আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি। আমার বিশ্বাস ভুল প্রমাণিত হলে আমিই সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হবে। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত আমার এ বিশ্বাস থাকবেই। তা নাহলে একের পর এক নেতিবাচক ঘটনা কিভাবে ঘটে?

হেলথ সেক্টর সম্পর্কে তো আমি পুরোপুরি জানি। এই সেক্টরের বিভিন্ন জায়গায় যাদের বসানো হচ্ছে তাদের অধিকাংশই আমাদের লোক নয়, নেত্রীর লোক নয়। কঠিন সময়ে এরা সকলেই আমাদের ক্ষতি করবে। সুতরাং আমার মনে হয়, এখানে ভালো করে দেখার প্রয়োজন আছে।

আজকে চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে একের পর একজনকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। তদের ব্যাকগ্রাউন্ড কি দেখা হয়েছে? এটা কারা করছে? সেটা দেখা দরকার। নিউরোসাইন্স ইন্সটিটিউটে দেখা যাচ্ছে একের পর আত্মীয় দেখে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এভাবেতো হতে দেয়া যায় না।

এখন কমিউনিটি ক্লিনিককে ধ্বংস করার জন্যও তৎপরতা শুরু হয়েছে। এতদিন অপারেশন প্ল্যান (ওপিতে) চলতো এখন হঠাৎ করে এতো বছর পরে মন্ত্রণালয় থেকে এবং ডিজি অফিস থেকে আমার হাতে একটি কাগজ আসলো যে, তারা প্ল্যান করছে কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টের একমাত্র দায়িত্ব হবে বেতন দেয়া। তাহলে ২০১৮ সালে পার্লামেন্টে যে কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্ট আইন পাস হলো, এরপর আমি দ্বিতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান হলাম এবং আমার একটি বিরাট বোর্ড আছে, তাদের দায়িত্ব কি তাহলে শুধু আঙ্গুল চোষা? সব কাজ যদি মন্ত্রণালয় করে, ডিজি অফিস দিয়েই করা হয় তাহলে খামাখা ট্রাস্ট করার দরকার কি ছিলো? এইসব জায়গায় যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে এই সকল ষড়যন্ত্রের দিকে নজর দিতে হবে। নেত্রী যেমন একটি কথা বলেছিলেন, ‘গ্রামের গরীবের সুন্দরী বউ সকলের বাউস’। আমরা সকলে মিলে চেষ্টা করে কমিউনিটি ক্লিনিককে একটি পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। ৭৭১ জন এর কাছাকাছি কমিউনিটি হেলথ ওয়ার্কারকে এক টাকা ঘুষ ছাড়া চাকরি দিতে পেরেছি। এখন হঠাৎ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডিজি অফিস থেকে শুরু করে মন্ত্রী পর্যন্ত সকলের কাছেই এখন কমিউনিটি ক্লিনিক সেই গরীবের সুন্দরী বউ। এটার দিকে এখন তাদের খুব নজর পড়েছে। এতদিন তাদের এই দরদ কোথায় ছিল?

কমিউনিটি ক্লিনিক ইতোমধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ যে বেসিক কতগুলি প্রয়োজন সেই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। সুতরাং আমার এই মার্চ মাসের চিন্তা হচ্ছে যে, নেত্রীকে এবং তার নিকটজনদের কে খুব গভীরভাবে চিন্তা করে প্রতিটি মন্ত্রণালয়, প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আমাদের দেখতে হবে যে কোথায় কি হচ্ছে।

আরেকটি ঘটনা বলতে হয় যে, সাইন্সল্যাবে ভবনে যে বিস্ফোরণ হলো সেটা এখন বলা হচ্ছে যে সম্ভবত গ্যাস জমে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ২০২১ সালে মগবাজারেও এরকম জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা করেছিল। তাহলে আবার দুই বছর পর আরেক জায়গায় গ্যাস জমে আবার একই ঘটনা কেন ঘটে? এই ঘটনাগুলো আরেকটু ভিতরে যেয়ে দেখতে হবে।

এখন জীবন সায়াহ্নে উপস্থিত। এখন সব স্পষ্ট কথা বলব। এতে কে কি মনে করলেন তাতে আমি কিছুই মনে করি না। আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে দার্শনিক শেখ হাসিনার যে পথে চলছেন সেই পথ অনুসরণ করে শেষ নিঃশ্বাস নেওয়ার আগে আল্লাহর নাম নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে পারি। তাতেই সন্তুষ্ট হবো। সেটিই আকাঙ্ক্ষা। তার আগে এই সকল স্পষ্ট কথাগুলো যদি না বলি বিবেকের কাছে দায়ী থাকব। দায়ি থাকব বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কাছে। দায়ী থাকব নেত্রীর পথে চলি বলে দাবী করি সেই দাবির কাছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭