প্রকাশ: 09/03/2023
তিন
ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের
প্রথম ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজের শুভ সূচনা করলো বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জস বাটলারের ৬৭
রানে ভর করে ইংলিশদের সংগ্রহ
দাঁড়ায় ১৫৬ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে চার উইকেট হারিয়ে ১২ বল হাতে
রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে দুই ইংলিশ ওপেনার জস বাটলার ও ফিল সল্ট। নাসুম এবং তাসকিনের করা প্রথম দুই ওভার থেকেই সংগ্রহ করে ১৮ রান। তৃতীয়
ওভারেই বোলিংয়ে পরিবর্তন আনেন সাকিব। নাসুমের পরিবর্তে আনেন মুস্তাফিজুর রহমানকে। মুস্তাফিজের এসে দেন মাত্র ৫ রান।
তিন
বোলার দিয়েই পাওয়ার প্লে শেষ করেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব। তবে দুই ওপেনার জস বাটলার ও
ফিল সল্টের সাবধানী শুরুতে খুব একটা সুযোগ তৈরি করতে পারেনি টাইগার বোলাররা। কিন্তু নাসুম আহমেদের করা পাওয়ার প্লে’য়ের শেষ ওভারে দুই সুযোগ মিস করেন সাকিব, নাসুম দুইজনেই। ফলে শেষ পর্যন্ত পাওয়ার প্লে’তে কোন উইকেট
না হারিয়ে ইংলিশদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫১ রান।
পাওয়ার
প্লে শেষে টাইগার বোলারদের উপর চওড়া হওয়ার চেষ্টা করেও খুব একটা সফল হতে পারেনি ফিল সল্ট। ইনিংসের দশম ওভারে নাসুম আহমেদের শেষ ওভারে লিটনের হাতে ধরা পড়েন ফিল সল্ট। আউট হওয়ার আগে ৩৫ বলে ৩৮
রানের ইনিংস খেলেন সল্ট। দশ ওভার শেষে
এক উইকেট হারিয়ে ইংলিশদের সংগ্রহ ৮০ রান।
তিনে
নামা ডেভিড মালানকে বেশিক্ষণ টিকতে দিলেন না টাইগার অধিনায়ক
সাকিব। ইনিংসের ১২তম ওভারে সাকিবের বলে উড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন মালান। তবে বাউন্ডারি লাইনে থাকা নাজমুল শান্তকে পার করতে পারেন নি তিনি। ধরে
পড়েন শান্তর হাতে। দলীয় ৮৮ রানে ইংল্যান্ড
হারায় তাদের দ্বিতীয় উইকেট। আউট হওয়ার আগে ৭ বলে ৩
রান করেন মালান। এক প্রান্তে থাকা
ইংল্যান্ড অধিনায়ক তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২০তম টি-টোয়েন্টি অর্ধশতক।
১৫ ওভার শেষে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১২৬ রান।
শুরু
থেকে টাইগার বোলারদের উপর আগ্রাসী খেলা বাটলার ক্রমশই ভয়ংকর হয়ে উঠেন। চারে নামা বেন ডাকেটের সাথে গড়েন ৪৭ রানের পার্টনারশিপ।
এ রান করতে দুইজনে খেলেছেন মাত্র ২৬ বল। তবে
দলীয় ১৩৫ রানে বেন ডাকেটকে বোল্ড করেন মুস্তাফিজ। ইনিংসের ১৬ তম ওভারের
শেষ বলে প্যাভিলিয়নের ফিরে যান ডাকেট। আউট হওয়ার আগে ১৩ বলে ২০
রান করেন বাঁহাতি এ ব্যাটার। পরের
ওভারেই বিধ্বংসী বাটলারকে ফেরান হাসান মাহমুদ। ৪২ বলে ৬৭
রানের এক অসাধারণ ইনিংস
খেলেন বাটলার। বাটলারকে ফিরিয়ে ইংলিশদের চেপে ধরে টাইগাররা।
বাটলারকে
ফেরানোর ওভারে হাসান মাহমদু দেন মাত্র ১ রান। শেষ দিকে টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি মঈন আলি-স্যাম কারেনরাও। ইনিংসের ১৯তম ওভারে মাত্র চার দিয়ে কারেনের উইকেট তুলে নেন হাসান মাহমুদ। ২০ তম ওভারে ক্রিস ওকসের উইকেট নিওয়ে তাসকিন আহমেদ দেন নয় রান। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভার শেষে ইংলিশদের সংগ্রহ হয় ১৫৬ রান।
জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ১৫৭ রানের এমন টার্গেটে ব্যাট করতে নামেন টাইগারদের দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও ৮ বছর পর দলে সুযোগ পাওয়া রনি তালুকদার। ওয়ানডেতে দুইবার স্যাম কারেনকে উইকেট দেওয়া লিটন এবার কারেনের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ডাউন দ্য ট্র্যাকে এসে মিড উইকেট অঞ্চল দিয়ে অসাধারণ এক চার দিয়ে শুরু করেন রান।
এরপর
কারেনের চতুর্থ বলে চার মারেন রনি তালুকদারও। প্রথম ওভারে ১০ রান নেন
দুই ওপেনার। দ্বিতীয়্ ওভারে ক্রিস ওকসের উপর একাই চওড়া হন আট বছর
পর জাতীয় দলে ডাক পাওয়া রনি। দুই চারের সাহায্যে ক্রিস ওকসের ওভারে তুলে নেন ১১ রান। তৃতীয়
ওভারে বোলিংয়ে পরিবর্তন আনেন বাটলার। তাতেও কোন কাজে আসেনি। জোফরা আর্চার ও দিয়ে যান
১১ রান।
টাইগারদের
উইকেট নিতে মরিয়া হয়ে উঠে বাটলার। চার নম্বর ওভারে নিয়ে আসেন আদিল রশিদকে। ইংল্যান্ডের এ অভিজ্ঞ বোলার
এসেই সফল। দলীয় ৩৩ রানে তুলে
নেন রনি তালুকদারের উইকেট। বোল্ড হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে ১৪ বলে ২১
রানের ইনিংস খেলেন রনি।
রনির
বিদায়ের পরের ওভারে ফিরে যান আরেক ওপেনার লিটন কুমার দাস। দলীয় ৪৩ রানে পঞ্চম
ওভারে জোফরা আর্চারের বলে আউট হন লিটন। ১০
বলে ১২ রান করে
প্যাভিলিয়নে ফিরেন ডানহাতি এ ব্যাটার।
দুই
উইকেট হারিয়ে ৬ ওভার শেষে
বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫৪ রান। অভিষিক্ত
তৌহিদ হৃদয় আর নাজমুল শান্ত
তান্ডব চালান মার্ক উড আদিল রশিদদের
উপর। ইনিংসের সপ্তম ওভারে মার্ক উডের বলে ১৭ রান তুলে
নেন সদ্য শেষ হওয়া বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক নাজমুল শান্ত। ওভার প্রতি গড়ে ১১ করে নিতে
থাকেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে মাঠ কাঁপানো এ দুই ক্রিকেটার।
দুইজনে মিলে গড়েন ৫০ রানের পার্টনারশিপও।
এ রান করতে দুই জনে খেলেছেন মাত্র ২৮ বল। ফলে
দশ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দুই উইকেট হারিয়ে ৯৮ রান।
এরপর
ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন নাজমুল শান্ত। সমালোচকদের মুক্ষম জবাব দেন বাঁহাতি এ ব্যাটার। ২৮
বলে খেলে ৮ চারের সাহায্যে
এ ফিফটি করেন শান্ত। এরপর ইনিংসের ১২ তম ওভারে
দলীয় ১০৮ রানে ফিরে যান তৌহিদ হৃদয়। ভেঙ্গে যায় শান্তর সাথে গড়া ৬৫ রানের পার্টনারশিপ।
মঈন আলির বলে আউট হওয়ার আগে আগে ১৭ বলে ২৪
রানের ইনিংস খেলেন হৃদয়। সাথের সতীর্থকে হারিয়ে বেশিক্ষণ টিকলেন না শান্তও। দলীয়
১১২ রানে মার্ক উডের ওভারে বোল্ড হন বাঁহাতি এ
ব্যাটার। খেলেন ৩০ বলে ৫১
রানের এক ঝড়ো ইনিংস।
শান্ত-হৃদয়
ফিরে গেলেও জয়ের জন্য কোন বেগ পেতে হয়নি টাইগারদের। শেষ পর্যন্ত সাকিবের ২৪ বলে ৩৪
রান ও আফিফের ১৫ রানে ভর করে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭