ক্লাব ইনসাইড

জাবি ছাত্রলীগ দ্বারা জাবির সিনেট সদস্য লাঞ্ছিত


প্রকাশ: 11/03/2023


Thumbnail

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চে উঠতে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ অতিথিকে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কর্মীরা৷ এসময় ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক দুই সভাপতি।

শুক্রবার (১০ মার্চ) রাত ১১ টায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ৩২ ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান চলাকালে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে মারধরের ঘটনা ঘটে।

প্রাথমিক সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তরা সকলেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগ কর্মী। জানা যায় তারা সকলেই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, ৩২ ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে মঞ্চে পারফর্ম করছিলেন সোলস ব্যান্ডের পার্থ বড়ুয়া৷ এসময় ছাত্রলীগ কর্মীরা মঞ্চে ওঠার চেষ্টা করে। তবে আয়োজকরা অনুষ্ঠানের স্বার্থে ঢুকতে বাধা দেয়৷ এসময় পার্থ বড়ুয়ার সাথে আসা লিটন নামের একজনকে মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা৷ এসময় প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন পরিস্থিতি থামাতে গেলে তাকেও মারধর করে তারা।

এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল পারভেজ এবং সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম শাফিন এগিয়ে আসিলে তাদেরকেও লাঞ্ছছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

এই মারধরের ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন রনি, উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক উৎস দত্ত, উপ-ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক অরবিন্দ ভৌমিক,
সহ-সভাপতি কে এম রহমান জাকারিয়া, উপ-আন্তার্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সবুজ রায়ের নেতৃত্বে দেয়। এসময় তাদের সাথে ২০-২৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী ছিলেন।

এসময় তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় এক সাংবাদিককেও লাঞ্ছিত করা হয়৷

প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, 'আমি দেখতে পেলাম অনেকগুলো ছেলে মিলে লিটনকে মাটিতে ফেলে মারধর করছে। এসময় আমি পরিচয় দিয়ে তাদের থামানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তারা আমার উপর চড়াও হয়ে আমাকে মারধর করা শুরু করে।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩২ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, :অতিথিকে মারধরের সময় সোহেল পারভেজ ও শাফিন ছেলেদের আটকানোর চেষ্টা করলে তাদেরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। এসময় প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিনকে বেধড়ক মারধর করে উপস্থিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।'

বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম শাফিন বলেন, 'ঘটনার সময় আমি দর্শক সারিতে ছিলাম। হঠাৎ করেই কিছু ছেলে মঞ্চে উঠে মারধর শুরু করে। আমি সোহেল ভাইসহ ঘটনা থামাতে গেলে আমাদের কথায় কর্ণপাত না করে উল্টো চড়াও হয়। ওরা পুরো তিনদফায় মারামারি করে৷ '

মারামারির সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে উৎস দত্ত বলেন, 'আমি তখন মুক্তমঞ্চের পাশে ছিলাম । এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে আমি শোনার পর মুক্তমঞ্চে গিয়ে দেখি আমার হলের জুনিয়ররা সেখানে ঝামেলা করতেছে। তাই আমি আমার দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে হলের সিনিয়র হিসেবে সেখান থেকে জুনিয়রদের পাঠিয়ে দেই। আমি এই মারামারিতে সম্পৃক্ত নয়। কেউ যদি বলে থাকে আমি সম্পৃক্ত তবে সেটা উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে বলেছে তারা।'

মারধরের ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ আসা আকাশ তুহিন বলেন, 'আমিতো উপস্থিত ছিলাম মুক্তমঞ্চে। কি ঘটেছে ভিতরের কাহিনী বিস্তারিত জানিনা। দেখলাম ঝামেলা হচ্ছে। এটা একটা রঙ ইনফরমেশন, আমি এমন কোন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না। আমি দর্শকদের সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম।'

মারধরের ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগী বাবুল হোসেন রনি, সবুজ রায়ের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা ফোন রিসিভ করেনি।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলে, 'আমি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ভাইয়ের বিয়ের দাওয়াতে এসেছি। এই অপ্রীতিকর ঘটনার খবর জেনেছি। ক্যাম্পাসে ফিরে এবিষয়ে ব্যবস্থা নেব।নিজের ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্বারা সাবেক দুই সভাপতি লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এরকম কিছু ঘটে থাকলে অবশ্যই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল হাসান বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম, মাত্র ক্যাম্পাসে এসেছি। মোবাইলে টুকটাক জেনেছি। বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নিবো।’


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭