ইনসাইড বাংলাদেশ

সর্বস্তরে বাংলা প্রচলনে হাইকোর্টের রায় উপেক্ষিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/02/2018


Thumbnail

উচ্চ আদালতের রায় ঘোষণার পরও সাইনবোর্ড, নামফলকে বাংলায় লেখা নিশ্চিত করা যায়নি। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কিন্ডারগার্টেন, শিল্প-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ সাইনবোর্ড এখনো ইংরেজিতেই দেখা যায়।

সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা’। ১৯৭১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমি ঘোষণা করছি আমাদের হাতে যেদিন ক্ষমতা আসবে, সেদিন থেকেই দেশের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু হবে।’ ১৯৭১ সালে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ঘোষণা দেন, বাংলা হবে দেশের সরকারি ভাষা। এরপর কেটে গেছে প্রায় পাঁচ দশক, এখনো সর্বস্তরে বাংলাভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়নি ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বেশির ভাগ স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি হাসপাতাল, বিভিন্ন কোম্পানি, দোকান-শপিংমল তাদের নামফলক, সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ডে বড় বড় করে ইংরেজি অক্ষরে লেখা। এমনকি বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নামফলক ইংরেজিতে দেখা যায়। মোটর সাইকেল, প্রাইভেট গাড়ি, বাস, ট্রাকের নম্বর প্লেটও পুরোপুরি বাংলায় চালু হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদের রক্তের মাধ্যমে যে চেতনা, তার হাত ধরে স্বাধীনতা আসে। তখন কথা ছিল, সবকিছু হবে বাংলা ভাষায়। দপ্তরগুলোতেও বাংলা ভাষা চালু করা হয়। তখনকার ব্যাংকগুলোর নাম পর্যন্ত বাংলায় পেয়েছি আমরা। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দৃশ্যপট পাল্টে যেতে থাকে। বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতেও সংবিধান লেখা হয় এবং বলা হয়, বাংলা ও ইংরেজি সংবিধানের কোনো বিষয় বুঝতে সমস্যা হলে ইংরেজিরটাই সঠিক বলে বিবেচনা করা হবে। তখনই মূলত ইংরেজিসহ বিভিন্ন বিদেশি ভাষার আধিপত্য তৈরি হতে থাকে।’

বাংলাদেশের সর্বত্র বাংলা ভাষা ব্যবহার করতে বলা হলেও বিলবোর্ড ও সাইনবোর্ডে ইংরেজির দাপট রয়েছে এখনো। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ একটি রিট আবেদন করেন। শুনানি শেষে ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এক আদেশে দেশের সব প্রতিষ্ঠানের (দূতাবাস, বিদেশি সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র ছাড়া) নামফলক, সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ব্যানার ইত্যাদি বাংলায় লেখা বাধ্যতামূলক করতে নির্দেশ দেন। ওই বছরের মে মাসেই সরকার বিজ্ঞাপন জারি করে এসব ক্ষেত্রে বাংলা লেখা বাধ্যতামূলক করে। কিন্তু হাইকোর্টের এই আদেশ ২০১৮ সালে ভাষার মাস পর্যন্ত উপেক্ষিতই হয়ে আছে।

যে জাতি ভাষার জন্য বুকের রক্ত দিতে পারে, সেই দেশেই আবার সর্বস্তরে বাংলা ভাষার পরিবর্তে ইংরেজি ভাষার ব্যাবহার প্রত্যেক বাঙালির জন্যই লজ্জার বিষয় এবং বাংলা ভাষা ও শহিদের প্রতি চরম অবহেলার শামিল।


বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭