ইনসাইড গ্রাউন্ড

মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে বাংলাদেশের লক্ষ্য ১১৮ রান


প্রকাশ: 12/03/2023


Thumbnail

তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড। প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটের দাপুটে জয়ে বেশ আত্নবিশ্বাসী হয়ে মাঠে নামে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশকে জয়ের জন্য ১১৮ রানের লক্ষ্য দিয়েছে ইংল্যান্ড।

সিরিজে সমতা ফেরানোর লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে আসা ইংল্যান্ডের শুরুটা ভাল হলেও ছন্দ ধরে রাখতে পারেন নি দুই ওপেনার। এদিন সফরকারিদের ব্যাটিং অর্ডারের শুরুতেই পরিবর্তন দেখা যায়। ফিল সল্টের সাথে জশ বাটলারের জায়গায় ইনিংস শুরু করেন ডেভিড মালান। তাসকিন আহমেদের করা প্রথম ওভার থেকে ১০ রান তুলে নেন দুই ব্যাটসম্যান। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে প্রথম সাফল্য পায় বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদের বলে হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মালান। উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পাশাপাশি সে ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে রানরেট কমিয়ে আনেন তাসকিন।

মালানের বিদায়ের পর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন ফিল সল্ট ও মঈন আলী। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ম্যাচে প্রথম স্পিনার আনে বাংলাদেশ। তবে নাসুম আহমেদের করা সেই ওভার থেকে ১৩ রান তুলে নেয় ইংল্যান্ড। তাতে স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ রেখে পাওয়ার প্লের শেষ করে সফরকারিরা। ৬ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাড়ায় ১ উইকেটে ৫০ রান।

৭ম ওভারে বোলিংয়ে এসেই দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব। দারুণ এক টার্নিং ডেলিভারিতে পরাস্ত হয়ে সাকিবের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফিল সল্ট। তার পরের ওভারে বোলিংয়ে এসেই ইংলিশ অধিনায়কের উইকেট তুলে নেন হাসান মাহমুদ। দারুণ এক ইয়র্কারে ভেঙে দেন বাটলারের স্টাম্প। টানা দুই ম্যাচে এই পেসারের কাছেই উইকেট হারালেন জশ বাটলার।

বাঁ-হাতি মঈন আলি স্ট্রাইকে থাকায় মেহেদী মিরাজকে ৮ম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে আনেন সাকিব। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে দেরি করেন নি সিরিজে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা মেহেদী। মাত্র ২ রান দিয়ে সে ওভারের শেষ বলে মঈন আলিকে প্যাভিলিয়নে পাঠান এই অফ স্পিনার। 

পাওয়ার প্লেতে ওভার প্রতি ৮ এর উপরে রান তুললেও, নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রথম ১০ ওভার শেষে ৬.৩০ তে নামিয়ে আনেন বাংলাদেশের বোলাররা। সেই সাথে তুলে নেন ৪ উইকেট। পাওয়ার প্লের পর স্কোরবোর্ডে ৭ রান যোগ করতেই ৩ উইকেট হারায় ইংলিশরা।

১২তম ওভারে আরেকটি চমক দেখান বাংলাদেশ অধিনায়ক। বোলিংয়ে আনেন নাজমুল হোসেন শান্তকে। তবে প্রথম বলেই বেন ডাকেটকে ফুলটস উপহার দিয়ে বাউন্ডারি হজম করেন শান্ত। সে ওভার থেকে ৯ রান তুলে নিয়ে খানিকটা চাপ কমায় ইংল্যান্ড। ১৩তম ওভারে নিজের কোটার শেষ ওভার করতে আসেন তাসকিন আহমেদ। ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ১ উইকেট পান তাসকিন।

পরের ওভারে আবার আরেক পার্টটাইম অফ স্পিনার আফিফকে আক্রমণে আনেন সাকিব। সে ওভার থেকেও সুবিধা আদায় করে নিতে পারেনি বাংলাদেশ।

তবে ১৫তম ওভারে ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে এক বলের ব্যবধানে দুই ইংলিশ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। দ্বিতীয় বলে স্যাম কারেন এবং চতুর্থ বলে ক্রিস ওকসকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন। ১৫ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাড়ায় ৬ উইকেটে ৯২ রান। এতে বড় সংগ্রহে আশা কমে আসে ইংলিশদের।

আগের ওভারে দলকে জোড়া উইকেট এনে দেয়া মেহেদী উইকেটের দেখা পেয়েছেন নিজের শেষ ওভারেও। একদম শেষ বলে তার বল উড়িয়ে খেলেন ক্রিস জর্ডান। তবে তা ঠিকমতো ব্যাটে-বলে না হওয়ায় বাউন্ডারি লাইনের অনেক ভেতরে রনি তালুকদারের হাতে ধরা পড়েন জর্ডান। দলীয় ১০০ রানে ৭ম উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে বোলিং শেষ করেন মিরাজ। আর ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে দলকে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে যান মেহেদী মিরাজ। এই ম্যাচের আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২৯ রানে ৩ উইকেট ছিলো তাঁর সেরা।

একাই যা খানিকটা লড়েছেন বেন ডাকেট। সতীর্থদের যাওয়া-আসার মিছিলে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন তিনি। স্পিনারদের বিপক্ষে বেশ কয়েকটি সুইপ-রিভার্স সুইপে রান বের করেছেন। তবে ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলেই মুস্তাফিজের একটি লাফিয়ে উঠা ডেলিভারিতে পরাস্ত হন এই বাঁ-হাতি ব্যাটার। বেশ খানিকটা দৌড়ে এসে শূন্যে ভেসে দারুণ এক ক্যাচ নেন শান্ত। যা বাংলাদেশের সমর্থকদের চোখে লেগে থাকবে অনেকদিন। ২৮ রান আসে ডাকেটের ব্যাট থেকে, যা ম্যাচে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ।

গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ে আজ দুর্দান্ত করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। তাদের শরীরি ভাষাতেই তা ছিলো স্পষ্ট। বেন ডাকেটের পর চতুর্থ বলে রেহান আহমেদ এবং শেষ বলে জফরা আর্চারের উইকেট হারিয়ে ১১৭ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭