প্রকাশ: 13/03/2023
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির ডামাডোলে অনেকটাই রঙ হারিয়েছে টেস্ট ক্রিকেট। তবে এখনো মাঝেমধ্যেই রঙের পসরা সাজিয়ে বসে কোন কোন ম্যাচ। মাত্র কয়েকদিন আগেই ওয়েলিংটনে তেমন দৃশ্য দেখা গিয়েছিলো নিউ জিল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্টে। প্রথম ইনিংসে ফলো অনে পড়েও লড়াই করে ১ রানে ইংলিশদের হারিয়ে দিয়েছিলো কিউইরা। সপ্তাহখানেক ঘুরতেই এবার আরেকটি রোমাঞ্চের সাক্ষী হলো ক্রাইস্টচার্চ। এবারও জয়ী দল নিউ জিল্যান্ড। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ বলে ম্যাচ জিতেছে কিউইরা।
এই জয়ে কিউইরা ফিরিয়ে আনলো ৭৫ বছরের পুরনো স্মৃতি। টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৬ বছরের ইতিহাসে একমাত্র জয়টি এসেছিলো ১৯৪৮ সালের ২০ ডিসেম্বর। ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ বলে ম্যাচ জিতেছিল ইংল্যান্ড। ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয়বারের মতো এমন জয় দেখলো ক্রিকেট বিশ্ব।
টেস্টের পঞ্চম দিন জয়ের জন্য নিউ জিল্যান্ডের দরকার ছিলো ২৫৭ রান। আর শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ৯ ছিলো উইকেট। ২৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নিউজিল্যান্ড চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছে ১ উইকেটে ২৮ রান নিয়ে। তবে প্রকৃতির বাঁধায় শেষ দিনের প্রথম সেশন পুরোটাই ভেস্তে যায়। ভেজা আউটফিল্ড শুকিয়ে যখন খেলা শুরু হয়, ততক্ষণে ৩৭ ওভার নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি ৫৩ ওভারে আড়াই শর বেশি রান বা ৯ উইকেট তোলা-কোনোটিই সহজ বলে মনে হচ্ছিল না।
তবে লঙ্কান বাঁহাতি স্পিনার প্রবাথ জয়াসুরিয়া টম ল্যাথাম ও হেনরি নিকোলসকে ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচে উত্তেজনা নিয়ে আসেন। চতুর্থ উইকেটে ড্যারিল মিচেলকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন কেন উইলিয়ামসন। তাদের ১৪২ রানের জুটিতে জয়ের সুবাস পেতে থাকে কিউইরা। তবে দল যখন জয় থেকে ৫৩ রান দূরে, তখন আবার শ্রীলঙ্কাকে স্বপ্ন দেখান আসিথা ফার্নান্দো। মিচেলকে বোল্ড করে শুরু, পরের ওভারে দারুণ এক ইয়র্কারে টম ব্লান্ডেলকে ফেরান। চার ওভার পরে মাইকেল ব্রেসওয়েলকে তুলে নেন এই লঙ্কান পেসার। জমে উঠে খেলা। পেন্ডলামের মতো ম্যাচের ভাগ্য দুলতে থাকে দুই দিকেই। তবে কিউইদের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখে আরেক প্রান্তে থাকা কেইন উইলিয়ামসন। ব্রেসওয়েলের উইকেট হারানোর আগেই সেঞ্চুরি তুলে নেন উইলিয়ামসন।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য কিউইদের দরকার ছিলো ৮ রানের, শ্রীলঙ্কার ২ উইকেট। সে ওভারে নানা নাটকীয়তা শেষে দুই উইকেটে জয় পায় নিউ জিল্যান্ড। দিনের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে রান আউট হন ম্যাট হেনরি। শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ১ রান। আসিথা ফার্নান্দোর শর্ট বলটিতে পুল করতে চাইলেও বল ব্যাটে লাগাতে পারেন নি স্ট্রাইকে থাকা উইলিয়ামসন। তবুও এক রানের আশায় ছুটতে থাকেন ক্রিজের অপর প্রান্তে। স্ট্রাইক প্রান্তে কিপারের পর বোলারের ফিরতি থ্রোতে ভেঙে যায় নন স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প। দুই দলের ক্রিকেটারদের মাঝেই টানটান উত্তেজনা। তবে রিপ্লে দেখে টিভি আম্পায়ার নট আউটের সিদ্ধান্ত দিলে জয়ের আনন্দে মেতে উঠে স্বাগতিকরা।
এই জয়ে আরেকটি বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে ক্রাইস্টচার্চ। ১৯৪৮ সালে ডারবানে ইংল্যান্ডের দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জেতা ম্যাচেও শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিলো ৮ রান। আর শেষ বলের সমীকরণও ছিলো ১ রানের। সে ম্যাচেও বলে ব্যাটে বল লাগাতে পারেননি ইংলিশ ব্যাটসম্যান ক্লিফ গ্লাডউইন। এ ম্যাচেও তেমনটি হয়েছে কেইন উইলিয়ামসনের। কি অদ্ভূত মিল!
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭