ইনসাইড থট

পশ্চিমাদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের উদাহরণ ড. ইউনূস


প্রকাশ: 13/03/2023


Thumbnail

নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী ড. ইউনূস সারা বিশ্বেই একজন পরিচিত মুখ। আমাদের দেশেও অবশ্যই তিনি পরিচিত। সম্প্রতি তাকে নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশ্বের ৪০ জন বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এক খোলা চিঠি লিখেছেন। ওয়াশিংটন পোস্টে প্রায় কোটি টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন আকারে গত ৭ মার্চ এ খোলা চিঠিটি প্রকাশিত হয়। নোবেল পুরষ্কার দেয়ার পেছনে; বিশেষ করে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার দেয়ার পেছনে যে রাজনীতি কাজ করে ড. ইউনূস তারই একটি উজ্জ্বল প্রমাণ। আমেরিকাতে যেমন টাকা দিয়ে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করা যায় নোবেল দেয়াও এখন অনেকটা লবিস্ট নিয়োগের মত। পার্থক্য হল, টাকার পরিবর্তে তাদের নোবেল পুরষ্কার দেয়া হয়।

ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং আইন অনুযায়ী ২০১১ সালে যখন ড. ইউনূসকে বয়সজনিত কারণে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব থেকে অবসরে পাঠানো হয়। এ নিয়ে তিনি নানা রকম আইনি প্রক্রিয়া, এমনকি বিদেশীদের শরণাপন্ন হলেও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেননি। এখন পত্রিকায় জায়গা কিনে ৪০ জন কেন ৪০ লক্ষ লোকও যদি বিজ্ঞাপন দেয় তাহলে কি তাদের কথামত বাংলাদেশের আইন পরিবর্তন করতে হবে?

বর্তমানে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, অর্থপাচারসহ নানা অভিযোগ তদন্তাধীন। গ্রামীণ টেলিকমের ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা কীভাবে অন্য অ্যাকাউন্টে গেছে সেটিও দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। এই তদন্ত থেকে বাঁচতেই মূলত তিনি লবিস্ট নিয়োগ করেছেন। যারা এই এই ৪০ জনকে একত্রিত করেছে। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে যে, আইন সবার জন্য সমান এবং বাংলাদেশের আইন বাংলাদেশের মতই চলবে। লবিস্ট দিয়ে আইন পরিবর্তন করা যাবে না কিংবা আইনি কার্যক্রমও বন্ধ রাখা যাবে না। 

আনেক আগে সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল যার নামে সেই সায়দাবাদী হুজুর একটি পাউডার আবিষ্কার করলেন। সেই পাউডারের বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছিলেন স্বৈরাচারী শাসক এরশাদের অনেক মন্ত্রীরা। সেই সময় এটি নিয়ে বিদেশে অনেক সমালোচনা হয়। আমার মতে এই ৪০ জন যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন তারা সেই সায়দাবাদী হুজুরের পাউডারের মডেলের মত। মডেলদেরতো পশ্চিমারা অনেকে অনেক চোখে দেখেন। তাহলে এদেরকে আলাদাভাবে দেখবেন কেন? আমি মনে করি এটি পশ্চিমাদের এমন ডবল স্ট্যান্ডার্ড ছাড়া কিছু নয়। 

সাংবাদিকদেরও অনেক সময় প্রভাবিত করা হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশে সাধারণ মানুষ কিন্তু কোনটা বিজ্ঞাপন কোনটা খবর সেটা আলাদা করতে পারে না। তারা মনে করে ওয়াশিংটন পোস্টে এসেছে। কিন্তু আসলেতো ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন এসেছে। যে কেউ টাকা থাকলেই বিজ্ঞাপন দিতে পারে। যেসব লোকের নামে বিজ্ঞাপন এসেছে তাদের প্রতি আমার দুঃখবোধ হয় যে, তারা একটি দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ না রেখেই একটি বিবৃতি দিয়ে দিলেন? বাংলাদেশ কি তাদের প্রজা? একসময় বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হত। কিন্তু দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে যাচ্ছি। সুতরাং এই বাংলাদেশ আর আগের বাংলাদেশ নেই। আপনারা এমন খেলা আগেও অনেক খেলেছেন। যতটুকু সম্মান আছে সেটা যদি রাখতে চান তাহলে এসব বন্ধ করুন। 

তারা পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্রে কোন কাজ হয়নি। পদ্মাসেতু ঠিকই হয়েছে এবং আমার মনে হয় ড. ইউনূসও পদ্মা সেতুতে ঠিকই উঠেছেন। সুতরাং, বাংলাদেশকে এবং সরকার প্রধান শেখ হাসিনাকে অবমূল্যায়ন করার কোন সুযোগ নেই। কিছুদিন আগেও আলেস বিলিয়াতস্কি নামের একজন শান্তিতে নোবেল বিজয়ীকে চোরাচালানের দায়ে ১০ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। নোবেল পাওয়া মানেই যে কেউ আইনের উর্ধে নয় এটিই তার প্রমাণ। এই ৪০ জন বরেণ্য ব্যক্তি কিভাবে ড. ইউনূসের বিজ্ঞাপনের মডেল হবার জন্য রাজি হলেন সেটিই আমার বোধগম্য নয়। অবশ্য পশ্চিমাদের দিয়ে সব সম্ভব। কারণ তাদের একমাত্র ধর্ম হচ্ছে ‘মানি’ (অর্থ)। টাকা হলে তাদের পক্ষে সব সম্ভব। আমি সবাইকে অনুরোধ করব যে, আপনারা আপনাদের সীমারেখা যতই ভং করুন না কেন তাতে বাংলাদেশকে কিছুই করতে পারবেন না। বাংলাদেশ যে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে তা কারো কাছে নত হবে না। যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন বাংলাদেশ স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। এসব বিজ্ঞাপনে আমরা দেশের সাধারণ মানুষেরা বিন্দুমাত্র ভীতু নই। বরং আপনাদের হুঁশিয়ার দিতে চাই যে, আপনাদের এখন সময় এসেছে আয়নাই নিজেদের চেহারা দেখার। আয়না না থাকলে বাড়িতে বড় আয়না কিনুন। কারণ আয়নাই এখন আপনাদের সব সমস্যার সমাধান করতে পারবে। সুতরাং, আমি আপনাদের আয়না বেগম অথবা আয়না সাহেব নাম দিতে চাই।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭