ইনসাইড বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগে জামাতিদের পুনর্বাসন, নেপথ্যে এমপি নদভী


প্রকাশ: 19/03/2023


Thumbnail

বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার ২০ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর। সম্প্রতি এক স্মরণ সভায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল, অভিযোগ উঠেছিল নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধর করার। ঘরোয়া আলোচনা মাধ্যমে যা সমাধানযোগ্য ছিল তা তিনি জনসম্মূখে আনার মধ্য দয়ে দলের মধ্যে গ্রুপিং রাজনীতি করছেন বলেও কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন। স্মরণ সভায় দেয়া তার বক্তব্যের জেরে স্থানীয় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে, আলোচনা হচ্ছে তার উত্থান নিয়ে।

স্থানীয় নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার আগে তিনি জামায়াতের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। জামায়াতের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি বেশ আশাবাদীও ছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি জামায়াতের মনোনয়ন পাননি। এই আশাবাদের কারণ হল জামায়াতে ইসলামীর তদানীন্তন কেন্দ্রীয় মজলিশে সুরার সদস্য মুমিনুল হক চৌধুরী এমপি নদভীর শশুর। এই মুমিনুল হক চৌধুরীর কন্যা রিজিয়া রেজা চৌধুরী ২০০২-০৪ সালে জামায়াতের অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্রী সংস্থার চট্ট্রগাম মহানগর শাখার সভানেত্রী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি মহিলা জামায়াতের একজন সংগঠক ছিলেন। জামায়াতের মনোনয়ন না পেয়ে তিনি বিএনপির দরোজায় ধর্ণা দেন কিন্তু ফলাফল শূন্য। এরপর তিনি এলডিপির দরোজায়ও কড়া নাড়েন। এক-এগারো সরকারের সঙ্গেও তার ঘনিষ্টতার কথা শোনা যায়। 

এরপর আকস্মিকভাবে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে যান নেজামুদ্দিন নদভী। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ নির্বাচিত হলেও তিনি জামায়াতে ইসলামীর ভাবধারা বা আদর্শ থেকে এতটুকু বিচ্যূত হননি। আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়েও তিনি জামায়াতে ইসলামীর আদর্শকে ধরে রেখে কাজ করে চলছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে আওয়ামী লীগের মূলধারার সঙ্গে তার বিশাল বিরোধ এবং দূরত্ব তৈরি হয়। এই সুযোগে এমপি নদভী আওয়ামী লীগে জামায়াতে ইসলামী নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করেছেন বলে স্থানীয় একাধিক নেতা দাবি করেন।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি গোপনে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ বিরোধীদের পৃষ্টপোষকতা দিয়ে থাকেন। স্বজনপ্রীতির চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে নিজের ভাইপোকে মাদার্শা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, জামায়াত নেতা মুমিনুল হক চৌধুরীর সন্তান ও সাংসদের শ্যালককে চরতীতে চেয়ারম্যান নির্বাচন করিয়ে আনেন। জামায়াত সংশ্লিষ্ট তার বংশধরদের আরও কয়েকটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান, মেম্বার বানাতে বেআইনীপন্থা ও অনৈতিক হস্তক্ষেপ করেন। এছাড়া বিজয়ী প্রার্থী সামশুল আলমের বদলে নিজের পছন্দের প্রার্থী কালুকে বিজয়ী ঘোষণা করিয়ে নিয়েছেন এমন নজির তার নিজ ইউনিয়ন মাদার্শা ২ নং ওয়ার্ডেই আছে।

এদিকে তিনি যেমন জামায়াতে ইসলামী নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করছেন অন্যদিকে তার প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়েছে সাতকানিয়া উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রিদুয়ানুল হক, সাতকানিয়া উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম সুমন, সাতকানিয়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্ববায়ক হারেজ মোহাম্মদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম শিকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মাস্টার আবুল কাসেম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কলিমউল্লাহ চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগ নেতা মো. আইয়াছ, মো. আরিফ খান, চরতী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা খোকা তালুকদার, আমিলাইষ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. আরমানসহ অসংখ্যক নেতাকর্মীকে। যাদের বিরুদ্ধে এমপি নদভী ফৌজদারী মামলা রুজ করেছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭