ইনসাইড পলিটিক্স

নাইকো দুর্নীতি মামলা: কী হবে বেগম জিয়ার?


প্রকাশ: 19/03/2023


Thumbnail

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। রোববার (১৯ মার্চ) কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামীদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৩মে দিন ধার্য করেছেন আদালত। আদালতের এই আদেশের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচার শুরু হলো। এই মামলার অভিযোগ গঠন এবং সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে আরও একটি মামলায় নতুন করে বেগম খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হতে চলেছেন বলে জানিয়েছে সূত্র। 

সূত্রটি বলছে, কেননা বেগম জিয়া এই নাইকো দর্নীতি মামলায় জড়িত ছিলেন এবং এটা প্রমাণ করা কোনো কঠিন কাজ হবে না। এর আগে আরও দুটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এসব মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে তাঁর অসুস্থতার কারণ বিবেচনায় সরকারের নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতাবলে দণ্ড স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবনে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর তাঁর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর’-এর ধারা-৪০১ (১)-এর ক্ষমতাবলে সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রথমবারের মতো শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি পান খালেদা জিয়া। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ মাসে সপ্তমবারের মতো বেগম জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হয়।        

এদিকে রোববার (১৯ মার্চ) খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার হাজিরা প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে। নাইকো দর্নীতি মামলার অন্যতম আসামী খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সি এম ইউছুফ হোসাইন ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনও এদিন আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন। এছাড়া সেলিম ভূঁইয়া আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। সরকার পক্ষে এই মামলার শুনানী করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল এবং বেগম জিয়া পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া।

জানা গেছে, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করা হয়। ২০১৮ সালের ৫ মে বেগম খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনে দুদক। এ মামলার অন্য সাত আসামি হলেন- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্র্যাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

সূত্র জানায়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এমনিতেই দুইটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার কারণেই আদালত তাকে সাজা দিয়েছেন। নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে- এ মামলাতেও তিনি সাজাপ্রাপ্ত হবেন- এটা সকলেরই জানা। যেসব মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন- এই মামলাগুলোও আপিল বিভাগে ঝুলে আছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, পর পর বেশ কয়েকটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে কি করবেন বেগম খালেদা জিয়া এবং তার রাজনৈতিক দল বিএনপিই বা তাকে দিয়ে কি করবেন? এরই মধ্যে বেগম জিয়ার রাজনীতিতে আসা নিয়েও ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছিল। বেগম জিয়াকে রাজনীতিতে নিয়ে আসতে হলে এসব মামলা থেকে কিভাবে তিনি অব্যাহতি পেতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে বিএনপিকে। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে বেগম জিয়ার অব্যাহতির জন্য কি করে বিএনপি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭