ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

শান্তি ফেরানো নাকি পশ্চিমাদের চোখ রাঙানির মোক্ষম জবাব?


প্রকাশ: 20/03/2023


Thumbnail

আন্তর্জাতিক আদালতের তরফে যুদ্ধাপরাধী ঘোষণার মাঝেও জিনপিংকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দীর্ঘদিন বাদে প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে দেখা হতে চলেছে বলে কথা।  আজই  রাশিয়া যাচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তাঁকে স্বাগত জানাবেন পুতিন। টানা তৃতীয়বারের মত চীনের প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম বিদেশ সফরে যাচ্ছেন শি। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তরফে সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী বলে ঘোষণা করা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর একদিকে যেমন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন, সেখানে পুতিনের পাশেই দাঁড়াতে পারেন শি বলে জানা গিয়েছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের এই সফরকে রাশিয়া অত্য়ন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে, কারণ এই সফরের মাধ্যমেই পশ্চিমী দুনিয়ার কাছে রাশিয়া বার্তা দেবে যে তাদের পাশে শক্তিধর বন্ধু দেশ রয়েছে। আজই মস্কোয় পৌঁছবেন শি। দুই দেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব বাড়াতে পুতিন ও জিনপিং বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারেন বলে জানা গেছে। দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে একাধিক ইস্যু নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা থাকলেও, প্রধান আলোচ্য় বিষয় হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এমনটাই সূত্রের খবর।

রাশিয়া সফরের আগেই সম্প্রতি চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানিয়েছিলেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে শান্তি স্থাপকের ভূমিকা পালন করতে পারে চিন। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনও চিনের এই ইচ্ছাকে স্বাগত জানিয়েছেন।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা এক বছর পেরিয়ে গেছে। যদিও এখনও সেখানে যুদ্ধবিরতি হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই, তবে যুদ্ধের তীব্রতা আগের থেকে কিছুটা কমেছে। তবে ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় এখনও অতর্মকিত হামলা চালাচ্ছে রুশ সেনাবাহিনী। ইউক্রেন সেনাও প্রতিরোধ করছে। আন্তর্জাতিক মহলের বিভিন্ন চেষ্টা সত্ত্বেও রুশ আগ্রাসন বন্ধ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আজ চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর মস্কো সফর। সেখানে গিয়ে শান্তিস্থাপকের ভূমিকা নিতে পারে চীন। অন্তত এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। রাশিয়া সফর গিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে জিনপিং কথা বলতে পারেন বলেও গুজব ছড়িয়েছে। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া দ্বন্দ্বে শুরু থেকে রাশিয়ার পাশে রয়েছে চীন। সরাসরি রাশিয়াকে সাহায্য না করলেও পশ্চিমী দুনিয়ার আর্থিক নিষেধাজ্ঞার সময়ে মস্কোর পাশে ছিল বন্ধু বেইজিং।

রাশিয়া চীনের পুরনো বন্ধু। বিশেষত আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির জোটের বিরুদ্ধে যদি কোনও অক্ষ ঘঠিত হয়, তাতে প্রথম দুই নাম রাশিয়া ও চীন। ইউক্রেনে হামলার পর পশ্চিমী দুনিয়া এক ঘরে করার চেষ্টা করেছে রাশিয়াকে। অন্য দিকে তাইওয়ানে আমেরিকার উচ্চপদস্থ পদাধিকারদের সফর আরও কাছাকাছি এনেছে এই দুই দেশকে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে জিনপিংয়ের রাশিয়া সফরের ঘোষণা করা হয়ে। সেই সফরের ব্যাপারে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের  মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন জানিয়েছিলেন, শান্তি স্থাপনে উদ্যোগ নেবেন চীনা প্রেসিডেন্ট। এই সফরের ব্যাপারে বেইজিংয়ের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াং ওয়াইয়েই বলেছেন, “যুদ্ধ বন্ধ করা সকলেরই ইচ্ছা। কারণ পশ্চিমী দুনিয়া ও আমেরিকা ইউক্রেনকে যতদিন ধরে সাহায্য করবে ভেবেছিল, তা পারবে না। কিন্তু চীন দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করার ক্ষমতা রাখে। ইউক্রেন ও রাশিয়ার বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু হতে পারে।”

যদিও চীন রাশিয়া-ইউক্রেনের দ্বন্দ্ব মেটাতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে আমেরিকা ও ইউরোপের একাংশের বিশেষজ্ঞ মহলের। এ নিয়ে চীননের পররাষ্ট্র নীতির উপরে কাজ করা আমেরিকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বলেছেন, “ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে বেইজিং খুবই নগন্য উদ্যোগ নিয়েছে। রাশিয়ার উপর চাপ তৈরি বা রাশিয়াকে প্রকাশ্যে যুদ্ধ বন্ধ করতে কখনও বলেনি চীন।”

তবে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়না জারির করার পর জিংপিন যাচ্ছেন সেখানে। আজ চীনা প্রেসিডেন্টের এই রাশিয়া সফরে নজর রাখছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়া।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭