প্রকাশ: 20/03/2023
টানা ৩৩ ঘণ্টার
বেশি বাস চালিয়ে
চালক জাহিদ হাসান
(৪৫) ক্লান্ত ছিলেন। চালক ক্লান্ত শরীরে চোখে ঘুম নিয়ে অতিরিক্ত গতিতে
বাস চালানোর জন্য এতো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ।
রোববার
(১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৬টার
দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা
ইমাদ পরিবহনের একটি বাস শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে খাদে পড়ে
যায়। এ সময় বাসটি
দুমড়েমুচড়ে যায়। এ দুর্ঘটনায়
২০ যাত্রী
নিহত হন এবং আহত হয়েছেন
কমপক্ষে ৩০ জন।
পুলিশ
ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, দুর্ঘটনায় নিহত ২০ জনের
মধ্যে ১৭ জনের মরদেহ
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি কক্ষে রাখা
হয়। বাকি দুজনের মরদেহ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা
হয়েছে। এর মধ্যে ১৭
জনের নাম-পরিচয় মিলেছে।
অন্যান্য
জেলার নিহতরা হলেন- মুকসুদপুরের মো. আমজাদ আলীর
ছেলে মাসুদ মিয়া (৩৫), খুলনার সোনাডাঙ্গার
শেখ আহমদ মিয়ার ছেলে
শেখ আব্দুল আল মামুন (৪২),
নড়াইলের লোহাগাড়ার বকু শিকদারের ছেলে
ফরহাদ হোসেন (৬৭), ফরিদপুর আলফাডাঙ্গা
এলাকার শহিদ মুরাদ আলীর
ছেলে ইসমাইল হোসেন (২৮), বনগ্রাম এলাকার
শামসুল শেখের ছেলে মোসতাক আহম্মেদ
(৪৭), ডুমুরিয়া এলাকার পরিমল সাদু খায়ের ছেলে
মহাদেব কুমার সাদু খা (৫৫),
আমতলা এলাকার শাহজাহান মোল্লার ছেলে আশফাকুজ্জামান লিংকন
(২৬) এবং বাগেরহাটের শান্তি
রঞ্জন মজুমদারের ছেলে অনাদি মজুমদার
(৩০)। বাসচালক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার
আলী আকবরের ছেলে জাহিদ হাসান
ও চালকের সহকারী মো. মিরাজ।
গোপালগঞ্জের
নিহত ৭ জন হলেন-
গোপালগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অনাদী
রঞ্জন মজুমদার (৫০), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও সদরের মাসুদ
মিয়ার মেয়ে সুইটি আক্তার (২২), সদরের মাসুম
মিয়ার ছেলে মোস্তাক শেখ
(৪১), টুঙ্গিপাড়ার মো. কাঞ্চন শেখের
ছেলে শেখ কবির হোসেন
(৫৭), ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
ও সদরের আবু হেনা মোস্তফার
মেয়ে আফসানা মিমি (২৫), একই উপজেলার
নওশাদ শেখের ছেলে সজীব (২৭),
গোপিনাথপুরের তৈয়ব আলীর ছেলে
হেদায়েত মিয়া (৫৫)। বাকিদের
নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
গতকাল
বিকেলে চালক জাহিদের ছেলে
রাতুল হাসান বলেন, মাসে দুই দিন
বাড়ি আসতেন বাবা। গাড়ি চালিয়ে তিনি
সব সময় ক্লান্ত থাকতেন।
গত পরশু ঢাকা, পিরোজপুর,
খুলনা রুটে পাঁচটি ট্রিপে
গাড়ি চালিয়েছেন। বাবা শনিবার রাতে
ফোনে জানান, তিনি অনেক ক্লান্ত
ছিলেন। রোববার ঢাকার থেকে এসে বাসায়
এক দিন বিশ্রাম নেবেন
এক কথাও বলেছিলেন। কিন্তু
বাবা আমাদের চিরতরে ফাঁকি দিয়ে চলে গেলেন।’
চালকদের
ব্যস্ত সূচি ও বিশ্রামের
ঘাটতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইমাদ
পরিবহনের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কোম্পানির বাস যারা চালান,
তাদের বিশ্রামের জন্য প্রতিটি জায়গায়
আমাদের ঘর রাখা আছে।
দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির চালক জাহিদ ক্লান্ত
ছিলেন, তিনি এমন কথা
আমাদের কাউকে জানাননি।’
ফরিদপুর
জোনের হাইওয়ে পুলিশ সুপার মাহাবুবুল হাসান বলেন, ‘বাসটির ফিটনেসেও যান্ত্রিক ত্রুটি রয়েছে। আমরা তদন্ত কমিটি
করেছি। তদন্ত শেষে বাসটির মালিকের
বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭