কোর্ট ইনসাইড

কেন পেছালো খালেদা জিয়ার খনি দুর্নীতি মামলার শুনানি?


প্রকাশ: 20/03/2023


Thumbnail

বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে ৩৭টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুর্নীতির দুই মামলায় তার ১৭ বছরের সাজা হয়েছে। গতকাল রোববার (১৮ মার্চ) ষোলো বছর আগে দায়ের করা নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। রাজধানীর কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের এজলাসে বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান রোববার খালেদা জিয়াসহ নয় আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

এদিকে আজ সোমবার (২০ মার্চ) বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১১ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য নির্ধারিত তারিখ হঠাৎ পিছিয়ে আগামী ২৯ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত। সোমবার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নবনির্মিত ২ নম্বর ভবনে অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত-২-এর বিচারক মো. আকতারুজ্জামান আসামীপক্ষের সময় আবেদন মঞ্জুর করে নতুন তারিখ ঠিক করেন। এ সময় বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী ছিলেন হান্নান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, এদিন মামলাটির অভিযোগ শুনানির দিন ধার্য ছিল। অভিযোগ গঠনের জন্য শুনানির আবেদন করা হলে বিচারক সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে নতুন দিন ধার্য করেন।

অন্যদিকে এই মামলাটির কার্যক্রম এর আগেও বেশ কয়েকবার পিছিয়েছে বা ঝুলে গেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। সূত্রটি মনে করছে, কোনো কারণে এই মামলাটির কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রিতা হচ্ছে। তাই প্রসঙ্গতই প্রশ্ন ওঠছে, কেন বার বার পেছানো হচ্ছে এইসব মামলার কার্যক্রম। নাইকো দুর্নীতি মামলাটিও ১৬ বছর ঝুলে আছে। অন্যদিকে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলাটি করা হয়েছিল। এই মামলাটিও ঝুলে আছে ১৫ বছর। এসব মামলায় নিশ্চয়ই কোন কারণে দীর্ঘসূত্রিতা হচ্ছে।    

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক সামছুল আলম ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। ওই বছরের ৫ অক্টোবর ১৬ আসামির বিরুদ্ধে দুদকের উপপরিচালক আবুল কাসেম ফকির অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

বড়পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলার বিবরণে জানা যায়, ১/১১-এর জরুরি অবস্থার সময়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ও তার মন্ত্রীসভার সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা করে। শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের তৎকালীন সহকারী পরিচালক সামছুল আলম।

মামলায় মন্ত্রীসভার বৈঠকে খালেদা জিয়া সভাপতি হয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির অনুমোদন দিয়ে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি করেছিলেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছিল। পরে এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন খালেদা জিয়া। ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি ফরিদ আহাম্মদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি মামলার কার্যক্রম তিন মাস স্থগিত করেন। একই সঙ্গে মামলা ও কার্যক্রম কেন অবৈধ ও বেআইনি হবে না- জানতে চেয়ে সরকারকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়ে রুলও জারি করেন। পরবর্তী সময়ে মামলার স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এ মামলায় স্থায়ী জামিনে রয়েছেন খালেদা জিয়া। 

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মামলাটি অনেক চাঞ্চল্যকর একটি মামলা। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলাটির কার্যক্রম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে বার বার পিছিয়েছে। এর পেছনে আইনী কোনো জটিলতা থাকতে পারে। তবে আদালত আসামীপক্ষের আবেদনে প্রেক্ষিতে নতুন করে যে তারিখ নির্ধারণ করেছেন, সেই তারিখেই বোঝা যাবে আসলে কোন দিকে যাচ্ছে এই মামলার কার্যক্রম। তবে এখন দেখার বিষয় হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলো আবারও ঝুলে যায় কি না?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭