ইনসাইড বাংলাদেশ

২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক প্রশ্ন


প্রকাশ: 21/03/2023


Thumbnail

বাংলাদেশে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাছে অবাধ ও সুষ্ঠু  হয়নি বলে বিবেচনা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে নির্বাচনে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরানো থেকে শুরু করে, বিরোধী দলের প্রার্থীদের এজেন্ট এবং ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখানোসহ নানা অনিয়মের খবরে এ ধারণা পোষণ করেছেন পর্যবেক্ষকেরা।

 ‘২০২২ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয় সোমবার (২০ মার্চ)। ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানে সংসদীয় সরকার পদ্ধতির কথা রয়েছে; যেখানে অধিকাংশ ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে ন্যস্ত। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা ও তাঁর দল পাঁচ বছর মেয়াদে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়ী হয়। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকেন। বিভিন্ন অনিয়মের খবরে এই নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাছে সুষ্ঠু ও অবাধ বলে বিবেচিত হয়নি।

নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে হয়রানি, ভীতি প্রদর্শন, নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং সহিংসতার অনেক বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়া গেছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, এইসবের ফলে অনেক বিরোধী প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকদের প্রচারণার জন্য র‍্যালি, সভা-সমাবেশ করা কঠিন হয়ে পরে। অবাধ প্রচারণা চালানোতে বাঁধা দেয়া হয় তাঁদের।

কম ভোটার উপস্থিতি, অনিয়ম, এবং প্রচারাভিযানে বাঁধা দেয়া এবং ভোটদানের সময় সহিংসতা বছরের বেশ কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে চিহ্নিত করেছে। এই সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক সহিংসতার ৪৭৯ টি ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে অন্তত ৭০ জনের মৃত্যুসহ ৬,৯১৪জন আহত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এখানে আরও বলা হয়, বিরোধী দলগুলিও কিছু সহিংসতা করলেও আন্তঃদলীয় সংঘর্ষের অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে এই সময়ের ব্যবধানে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্যদের বিরুদ্ধে বহু নির্যাতনের ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ তুলে ধরা রয়েছে মার্কিন এই প্রতিবেদনে। নির্যাতন ও দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যাপকভাবে দায়মুক্তি দেওয়ার অনেক খবর রয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন বা দুর্নীতিতে জড়িত কর্মকর্তা বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের চিহ্নিত করা, ঘটনার তদন্ত করা, তাঁদের বিচার ও সাজা প্রদানে হাতে গোনা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।

আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায় থাকাকালীন বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের দাবি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্যাতন, কারাগারের পরিস্থিতি, ধরপাকড়, আটক বা গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া ও কারাবন্দীদের সঙ্গে আচরণ, বিচারব্যবস্থা, মানবাধিকারকর্মী–নাগরিক সমাজ ও সরকার সমালোচকদের প্রতি হুমকি–হয়রানি–নির্যাতন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নাগরিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া গণমাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ, শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ ও সংগঠন করার অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, ‘শরণার্থীদের’ সুরক্ষা, মৌলিক সেবাপ্রাপ্তির সুবিধা, রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের স্বাধীনতা, দুর্নীতি, সরকারি কাজকর্মে স্বচ্ছতার ঘাটতি, বৈষম্য ও সামাজিক নির্যাতন, মানব পাচার, শ্রমিকদের অধিকারসহ নানা বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭