প্রকাশ: 23/03/2023
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডে নিজেদের করে নিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। আইরিশদের বিপক্ষে দাপট দেখাচ্ছেন ইবাদত হোসেন-তাসকিন আহমেদরা। পাওয়ার প্লেতে হাসান মাহমুদের পর এই দুই পেসারের গোলার মুখে বিধ্বস্ত হয়েছে আইরিশরা।
শুরুটা করেছিলেন হাসান মাহমুদ। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে অফ স্টাম্পের বাইরে একটি গুডলেংথ ডেলিভারিতে তুলে নেন স্টিফেন ডোহেনির উইকেট। ১২ রানে প্রথম উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আইরিশদের রানের চাকা আটকে রাখে বোলাররা। প্রথম ৮ ওভার থেকে মাত্র ২২ রান তুলতে পারে আইরিশরা। সেই চাপ সামলে উঠার আগেই আবার আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ।
৯ম ওভারের প্রথম বলে এলবিডব্লুয়ের ফাঁদে ফেলেন আগের ওভারে জীবন পাওয়া স্টারলিংকে। ওভারের চতুর্থ বলটি রক্ষণাত্নক ভঙ্গিতে খেলেন হ্যারি টেক্টর। বোলার হাসান মাহমুদ ভেবেছিলেন ব্যাট লেগে বল প্যাডে আঘাত করেছে। আবেদনও করেন নি আউটের। তবে মুশফিকুর রহিম ছিলেন আত্নবিশ্বাসী। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। রিপ্লেতে দেখা যায় ব্যাটে লাগার আগে হাসানের বলটা ছুঁয়ে গেছে টেক্টরের প্যাড। দুর্দান্ত এক রিভিউয়ে তৃতীয় উইকেট তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
পরের ওভারের তাসকিন আহমেদের বলে পরাস্ত হন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবিরনি। ২৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে আয়ারল্যান্ড। কার্টিস ক্যাম্ফার ও লরকান টাকারের ব্যাটে ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে সফরকারিরা। দুই ব্যাটসম্যানই দেখেশুনে খেলতে থাকেন স্বাগতিক বোলারদের। ১৪তম ওভারে ইবাদত হোসেনকে তিনটি চার মেরে চাপ কমানোর চেষ্টা করেন টাকার। তাদের জুটিতে ভর করে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে আয়ারল্যান্ড।
শুরুতে খানিকটা অস্বস্তিতে থাকলেও দ্রতই ছন্দ খুঁজে পান ইবাদত। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে লেগ বিফোরের শিকার হয়ে লরকান টাকার সাজঘরে ফিরলে ভাঙে আইরিশদের প্রতিরোধ। পঞ্চম উইকেটে ৪২ রানের জুটি গড়েন দুজনে। ওভার দা উইকেট থেকে করা ইবাদতের বলটা অ্যাঙ্গেল করে ভিতরের দিকে ঢোকে। সময়মতো ব্যাটে বল ছোয়াতে পারেন নি টাকার। সরাসরি বল লাগে তাঁর বুটে। আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ নেন টাকার। তবে তা কাজে আসেনি। টাকারের বিদায়ে ক্রিজে আসেন জর্জ ডকরেল। তবে এসেই সতীর্থকে অনুসরণ করে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। ইবাদতের ফুল লেংথের বল স্টাম্প ভেঙে দেয় তার। ৬৮ রানে ৬ উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন ইবাদত। ধস নামে সফরকারিদের ব্যাটিং অর্ডারে।
ইবাদতের পর ঝলক দেখান তাসকিন আহমেদ। ২২তম ওভারে তাসকিন আহমেদের শর্ট বলে বড় শট খেলার চেষ্টা করেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। তবে তার সে চেষ্টা সফল হয়নি। উল্টো সোজা উপরে উঠে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে নাসুম আহমেদের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এক বল পরই মার্ক অ্যাডায়ারের স্টাম্প উপড়ে যায় তাসকিনের ফুললেংথ ডেলিভারিতে। শঙ্কা জাগে একশোর নিচেই অলআউটের।
সতীর্থদের এই যাওয়ার আসার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন কার্টিস ক্যাম্ফার। রানের আশায় তাই শট খেলার চেষ্টা করা ছাড়া ক্যাম্ফারের খুব বেশি কিছু করারও ছিল না। হাসান মাহমুদের শর্ট বলে পুল করেছিলেন তিনি। তবে সেটি বাউন্ডারি লাইন পার করতে পারেন নি। ডিপ ফাইন লেগে থাকা তাসকিন আহমেদের হাতে ধরা পড়েন। দলের রান যখন ৯৬ তখন নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন তিনি। খেলেন ৪৮ বলে ৩৬ রানের ইনিংস, যা আইরিশদের পক্ষে সর্বোচ্চ।
এরপর আর বেশিদূর যেতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। হাসান মাহমুদের করা ২৯তম ওভারের প্রথম বল গ্রাহম হিউমের প্যাডে লাগে। আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। তাতে ফল আসে স্বাগতিকদের পক্ষে। ১০১ রানে অলআউট হয় আইরিশরা।
ক্যারিয়ারের প্রথমবার ৫ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখান হাসান। তাসকিন ৩টি ও ইবাদত নিয়েছেন বাকি দুই উইকেট। এতে বেশ কয়েকটি নজির গড়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথমবার ইনিংসের সবকটি উইকেট নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করেছেন বাংলাদেশের পেসাররা। এর আগে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮টি উইকেট নিয়েছিলেন পেসাররা। ওয়ানডে ম্যাচে কোন বাংলাদেশের কোন স্পিনারের উইকেট না পাওয়ার প্রথম ঘটনা এটি। এমনকি এদিন বোলিংয়েই আসেন নি সাকিব আল হাসান।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭