ইনসাইড গ্রাউন্ড

ডোনাল্ডের জাদুতে বাংলাদেশের পেস বিপ্লব


প্রকাশ: 24/03/2023


Thumbnail

স্পিনারদের দেশ, স্পিন আক্রমণই বোলিংয়ের মূল ভরসা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু হওয়ার পর থেকে স্পিন আক্রমণের জন্য আলাদা পরিচিতি পেয়েছে বাংলাদেশ। মোহাম্মাদ রফিক, মানজারুল ইসলাম রানা, আব্দুর রাজ্জাকরা নিজেদের স্পিন ঘূর্ণিতে ঘায়েল করেছেন বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের। উপমহাদেশের স্পিন সহায়ক কন্ডিশন ও উইকেটে স্পিনাররা পার্থক্য গড়ে দেন ম্যাচের। বাংলাদেশও ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মত বড় দলকে হারিয়েছে এই ঘূর্ণির পাকে ফেলে। তাই বলাই যায় বাংলাদেশের বোলিংয়ের বড় অস্ত্র এই স্পিন। সেই দলই কি না পেস বোলিংয়ে বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও তাসকিন আহমেদ-ইবাদতদের হাত ধরে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ।

মাশরাফি-রুবেলরা এক সময় পেস বোলিংয়ের আশার আলো জাগিয়ে ছিলেন। তবে সময়ের সাথে সাথে সে আলো বাড়েনি, উল্টো স্তিমিত হয়েছে। অগ্রজদের নিভু নিভু হয়ে যাওয়া সেই আলো আবার জাগিয়ে তুলেছে বর্তমান সময়ের পেসাররা। সাদা বিদ্যুৎ খ্যাত সাবেক প্রোটিয়া ক্রিকেটার অ্যালান ডোনাল্ড বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচের দ্বায়িত্ব নেয়ার পর রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছেন পেসাররা। একের পর এক ম্যাচে পারফর্ম্যান্স দিয়ে নজর কেড়েছেন, এনে দিচ্ছেন জয়। তাতে একদিকে স্পিনারদের উপর নির্ভরশীলতা মাত্রা যেমন কমেছে, তেমনি বোলিং আক্রমণেও এসেছে বৈচিত্র।

দ্বায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশের পেসারদের মানসিকতায় পরিবর্তন এনেছেন অ্যালান ডোনাল্ড। ২০২১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর দিয়ে বাংলাদেশ অধ্যায় শুরু করেছিলেন ডোনাল্ড। সেই সিরিজে পেস বোলিংয়ের নতুন দিনের গল্প লিখেছিলেন তাসকিন আহমেদ। প্রোটিয়াদের ওয়ানডে সিরিজ হারিয়েছে তাদের মাটিতেই। গতি আর সুইংয়ের পসরা বসিয়ে সিরিজ সেরা হয়েছিলেন তাসকিন। এক সময় গতিই ছিলো যার ভরসা, সেই তাসকিনের বোলিং আমূল পরিবর্তন করে তাকে পরিণত করেছেন বৈচিত্রময় এক বোলারে। 

টেস্ট বোলারের খেতাব গায়ে সেঁটে গিয়েছিলো ইবাদত হোসেনের। বোলিংও ছিলো খুবই সাদামাটা। সেই ইবাদত এখন হয়ে উঠেছেন পেস বোলিংয়ের অন্যতম ভরসার নাম। তরুণ শরিফুল ইসলাম এবং হাসান মাহমুদের ভয়ডরহীন বোলিংয়ের পেছনেও কৃতিত্ব এই প্রোটিয়া কোচের। আরেক পেসার খালেদ আহমেদের বোলিংয়ে দৃশ্যমান বদল এসেছে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেয়ার পাশাপাশি ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার মতো সামর্থ্য তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের পেস বোলিং বিভাগের। বর্তমানে জাতীয় দলের সাথে থাকা পেসারদের মধ্যে একমাত্র মুস্তাফিজুর রহমানও নিজেকে এখনো আগের রূপে ফেরাতে পারেন নি। তবে সময়ের সাথে সাথে সে প্রত্যাশা তিনি মেটাবেন এমন আশা করাটা বাড়াবাড়ি কিছু নয়।

আয়ারল্যান্ডকে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ১০ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথমবার কোন ম্যাচে সবগুলো উইকেট ভাগাভাগি করেছে পেসাররা। তাতে পেস বোলিংয়ে সুদিন ফেরার পালে বেশ জোর হাওয়া লেগেছে। এখন পর্যন্ত ৪০৯টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তাতে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৮টি উইকেট নিয়েছেন পেসাররা। এমন ঘটনা ঘটেছে মোট ১২ বার। কিন্তু স্পিনাররা ম্যাচে কোন উইকেট পাননি- এমন নজির এই প্রথম। এমনকি এই ম্যাচে স্পিনাররা হাত ঘুরিয়েছেন মাত্র ৪ ওভার। বোলিংয়ের আনাই হয়নি সাকিব আল হাসানকে। এমন সাফল্যের পর পেসারদের নিয়ে স্বপ্নটা দেখলে তাতে দোষের কিছু নেই। চলতি বছরের শেষে অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। স্পিনারদের পাশাপাশি পেসারদের এমন দাপটে বিশ্বকাপে ভাল কিছুর প্রত্যাশা করতেই পারে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ, অ্যালান ডোনাল্ড, পেস বোলিং, বিশ্বকাপ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭