বিএনপিতে মির্জা ফখরুলদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, লন্ডন থেকে যে ‘ওহি’ নাযিল হয় সেটি মেনে নিতে বাধ্য হন ফখরুলরা। গত শুক্রবার দুপুরে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে গত মঙ্গলবার মির্জা ফখরুলের মহাসচিবের পদ নিয়ে বৈধতার প্রশ্ন তোলেন ওবায়দুল কাদের। কারণ নিয়মিত দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপির শেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আর কোনো কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়নি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মর্মবেদনা আমরা বুঝি। প্রকৃতপক্ষে বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মির্জা ফখরুলদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সুদূর লন্ডন থেকে যে ওহি নাযিল হয় কিংবা যে সিদ্ধান্ত আসে তা মুখ বুজে মেনে নিতে বাধ্য হন ফখরুল সাহেবরা। দণ্ডিত পলাতক আসামির প্রেসক্রিপশনে পরিচালিত হয় বিএনপি; অগণতান্ত্রিক ও অগঠনতান্ত্রিকভাবে কমিটি ভাঙে-গড়ে, বহিষ্কার-পুরস্কার নির্ধারিত হয় এবং কমিটি ও মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্য চলে। আয়নার সামনে নিজের অসহায়, নিরুপায় ও পরাধীন চেহারা দেখতে দেখতে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল সাহেব জনগণের বাক-স্বাধীনতাকে ওই একই ফ্রেমে বন্দি করে ফেলেছেন। তাই মির্জা ফখরুল সাহেব তোতা পাখির মতো সরকারের বিরুদ্ধে বিষাদ্গারে লিপ্ত থাকেন।’
‘ওহি’ নাযিল হওয়া নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরেও তীব্র প্রতিক্রিয়া আছে। বিশেষ করে বহিষ্কারের ক্ষেত্রে এই তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, শুধু ‘ওহি’ নাযিল হওয়ার মাধ্যমেই দল চলে না। বহিষ্কারের ঘটনাও ঘটে এই ‘ওহি’ নাযিল হওয়ার মধ্য দিয়ে। যা নিয়ে দলের ভেতর তীব্র প্রতিক্রিয়া আছে।
কিছুদিন আগে মাঠপর্যায়ের প্রায় আড়াই হাজার সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিকে ঢাকায় এনে দশ দিন ধরে মতবিনিময় সভা করেছে বিএনপি। এই সভায় দলকে আরও চাঙা করার পরামর্শ আসে। বৃহত্তর স্বার্থে বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়া সব নেতাকর্মীকে দলে ফিরিয়ে নিতে বলা হয়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে। চূড়ান্ত কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামার আগে বিভিন্ন জেলা ও ইউনিটে দ্বন্দ্ব নিরসন করে ঐক্যবদ্ধ হওয়া, সব বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, ঢাকাকে আরও সক্রিয় করাসহ বেশ কিছু পরামর্শ দেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু তৃণমূল নেতাকর্মীদের সেই পরামর্শ গ্রহণ করা হয়নি। উল্টো কিছুদিন আগে দলের একজন ভাইস চেয়ারম্যানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এটিই প্রথম কোনো ঘটনা নয়, এর আগে এই ‘ওহি’ নাযিল এর মাধ্যমে একাধিক সিনিয়র নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এতে দলের ক্ষতি হয়েছে। দলের মধ্যে গ্রুপিং বেড়েছে। পারস্পরিক সন্দেহ ও কোন্দালও বেড়েছে। কিন্তু দল কোনো ভাবেই লাভবান হয়নি।