ইনসাইড বাংলাদেশ

স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর সেই ছবি পুরোটাই ভুয়া


প্রকাশ: 27/03/2023


Thumbnail

আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো- সাত বছরের শিশুর হাতে দশ টাকা দিয়ে দৈনিক প্রথম আলোর ফটো সাংবাদিক ছবি তুলেছেন বলে দাবি ওই শিশু ও তার পরিবারের। 

এমনকি তার নাম পরিচয়ও ভুল দেয়া হয়েছে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে এমন খবর প্রচারকে বাসন্তীর জাল পরানো ছবির সাথে তুলনা করেছেন কেউ কেউ। 

আইনজীবীরা বলছেন, এটি অপরাধ। যদিও দেশের অন্যতম বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলো এটিকে তেমন বড় ঘটনা হিসাবে দেখছে না। 

দৈনিক প্রথম আলোর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ভাইরাল হওয়া খবরের ছবি ছিলো, ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে এক শিশু। নাম জাকির হোসেন। 

শিশুটির উদ্ধৃতি ছিলো এমন- ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো’। 

সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে গিয়ে ছবিটি দেখাতেই সবাই ছবির শিশুকে চিনতে পারলো। তবে, নাম ভুল ছেপেছে দৈনিক প্রথম আলো। শিশুটির নাম জাকির নয়, সবুজ।

তখনও সবুজ স্মৃতিসৌধে আসেনি। কারণ সবাই জানে স্কুল পড়ুয়া সবুজ পড়াশেষে বাড়ি ফিরে গোসল আর খাওয়া দাওয়া সেরে মার সাথে স্মৃতিসৌধে ফুল বেচতে আসে। 

তাই কুরগাঁও পাড়ায় সবুজের বাড়িতে কথা হয় তার মা মুন্নী বেগমের সাথে। তিন সন্তানের মধ্যে মেজো সবুজের নাম কিভাবে জাকির হোসেন হলো, আর তার প্রথম শ্রেণীতে পড়ুয়া সন্তানকে কেন দিনমজুর বলা হলো তাতে তিনি অবাক। 

জানালেন, রাজমিস্ত্রী বাবা আর তার আয়ে এ বছরই লাগোয়া বাথরুমসহ ঘর ভাড়া নিয়েছেন। ঘরের টিভি বন্ধক রেখেছেন সাত হাজার টাকায়। যেন ঈদটা ভালোভাবে করা যায়। ভাতের জোগাড় হয়। আর ছোট সবুজ কেমন করে জানবে বাজারের খবর।

লাগোয়া বাথরুম থেকে গোসল সেরে বের হওয়া সবুজকে দেখে বোঝা গেল বাজার স্বাধীনতা আর চাল ডালের রাজনীতি বোঝার বয়স থেকে সে এখনও বহুদূরে। ছবি আর ছাপানো কথায় তার অপার বিস্ময়। প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সবুজ আহমেদের কাছেও কোন জবাব নেই। 

প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, ১৭ মিনিট পরেই নিউজটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হবার বিষয়টি তাদের জানার কথা নয়।

স্বাধীনতা দিবসে এমন খবরকে ১৯৭৪ সালে দৈনিক ইত্তেফাকে জাল পরানো বাসন্তীর ছবির মতোই চক্রান্ত বললেন শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী। 

যদিও এটিকে এত সরল করে দেখার সুযোগ নেই বলে মনে করেন জেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখানে যেন কোনো অজুহাত না হয়। এদিকে এই ঘটনার প্রতিকার চেয়েছেন সবুজের প্রতিবেশীরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭