ইনসাইড টক

‘বাংলাদেশ-আমেরিকা সম্পর্কে মিডিয়ার ভূমিকা অতিরঞ্জিত’


প্রকাশ: 28/03/2023


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠিকে খুব গুরুত্ব দেয়ার কিছু নেই। কারণ এটি একটি গতানুগতিক চিঠি। গতানুগতিক এই কারণে যে, সেই চিঠির মূল উদ্দেশ্য হল ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন। শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে সেখানে কিছু প্রসঙ্গ টানা হয়েছে। এটুকুই মাত্র।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা শুভেচ্ছা বার্তায় গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ। 

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, একটি বিষয় খুব স্পষ্ট সেটি হল, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আমাদের পক্ষে ছিল না। তারা পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল। সেজন্য স্বাভাবিক ভাবেই আমেরিকা এখন বাংলাদেশের ব্যাপারে ভালো কথা বলবে। এটা স্বাভাবিক চিঠিতে যে সমস্ত বিষয় নিয়ে কথা বলা হয়েছে সেগুলো আমরা ভালো করেই জানি। বাংলাদেশের যে সমস্ত বিষয়ে ঘাটতি আছে সেটিও বাংলাদেশ ভালো করে জানে এবং সেই ঘাটতি রাতারাতি সমস্যা হবে না। তবে এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, আজকে বাংলাদেশের যত উন্নয়ন হয়েছে সেখানে জনগণের অংশ গ্রহণ ছিল না। অবশ্যই এই উন্নয়নে জনগণের একটা সক্রিয় অংশগ্রহণ আছে। সুতরাং জনগণের অংশগ্রহণের দিকেই আমাদের বেশি নজর দেয়া দরকার। আমেরিকা একটা বিবৃতি দিল আর আমরা সবাই সেটা নিয়ে লাফালাফি করলাম এটা ঠিক নয়। জো বাইডেনের চিঠির বিষয়টি আমেরিকাও এতোটা গুরুত্ব দিয়ে দেখে না। 

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের স্বাধীনতা দিবসে আমেরিকা যে বিবৃতি দিয়ে থাকে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটিই হয়েছে। মিডিয়া এটাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। কেন দিয়েছে সেটা আমার বোধগম্য নয়। এটা একটা গতানুগতিক একটি চিঠি। একজন গবেষক হিসেবে এর বাইরে এই চিঠির গুরুত্ব আমার কাছে নেই।

আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বহুমাত্রিক উল্লেখ্য করে ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, একাধিক খাতের সঙ্গে এই সম্পর্ক জড়িত। সুতরাং আমেরিকা বাংলাদেশের কোনো একটি বিষয় নিয়ে সমালোচনা বা কথা বলছে বলেই সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে সেটা ভাবা অবান্তর। আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সহজে খারাপ হয়ে যাবে সেটা ভাবার কোনো অবকাশই নেই। কারণ সম্পর্ক কখনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে কেন্দ্র করে হয় না। আমেরিকা-বাংলাদেশ সম্পর্কে আমরা যত না লাভবান হই, তার চেয়ে বেশি লাভবান হয় আমেরিকা। বাংলাদেশ আমেরিকা থেকে যত না ব্যবসা বাণিজ্য করে তার থেকে অনেক বেশি ব্যবসা বাণিজ্য করে থাকে আমেরিকা। কাজেই দুই একটি বিষয়কে ইস্যু বানিয়ে শুধু শুধু গুরুত্ব দেয়া উচিত নয়। গুরুত্ব দেয়ার বিষয়টি মিডিয়া তৈরি করে থাকে তাদের স্বার্থের কারণে। দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে মিডিয়ার ভূমিকা অতিরঞ্জিত। কিন্তু আমাদের পেশাদারিত্বের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। ছোট ছোট বিষয়গুলো এতো গুরুত্ব দিয়ে হিতে বিপরীত হতে পারে। তখন আমেরিকা সুযোগ নিতে চাইবে। কিন্তু প্রকৃত বিষয় হল আমরা কোনো একটি বিষয়কে যত গুরুত্ব দিয়ে থাকিেআমেরিকা নিজেরাও এতো বেশি গুরুত্ব দেয় না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭