যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় স্কুলছাত্রী অনি রায়ের আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের বিচার দাবিতে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন গ্রামবাসী। মঙ্গলবার (২৮ শে মার্চ) মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে উপজেলা মোড়ে মহাসড়কে লাশ রেখে অবরোধ করেন তাঁরা।
এর আগে ময়নাতদন্ত শেষে কৃষ্ণনগর মিস্ত্রিপাড়ার বাড়ি থেকে লাশ নিয়ে মিছিল করেন আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী। এ সময় ‘আমার বোন মরলো কেন, খুনি সাকিব জবাব চাই, সামাদ স্যার জবাব চাই’ সহ নানা স্লোগান দেন তাঁরা।
নিহত অনি রায় উপজেলার হাসপাতাল রোড মিস্ত্রিপাড়া এলাকার কুয়েত প্রবাসী গৌতম রায়ের মেয়ে ও ঝিকরগাছা বদরুদ্দীন মুসলিম (বিএম) হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী । গত সোমবার নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে ওই স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করে।
যশোরের ঝিকরগাছায় স্কুলছাত্রী অনি রায়ের ‘আত্মহত্যা’র ঘটনায় প্ররোচণাকারীদের বিচার দাবিতে আজ যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক অবরোধ করে গ্রামবাসী ৷
নিহতের ভাই অর্ঘ্য রায় বলেন, ‘স্কুলে কোচিং শেষে আমার বোনকে রুমের ভেতর নিয়ে তিনজন ছেলে মারধর করে। সে সময় অনি রুম থেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বের হয়। সে ফুটেজ আমার কাছে আছে। পরে বাড়িতে এসে ঘরের দরজা আটকে মায়ের শাড়ি গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। আমার বোন আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
অনি রায়ের আত্মহত্যার কারণ জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সামাদ জানান, বিদ্যালয় থেকে ওই ছাত্রীর বাড়ির দূরত্ব ৩০০ গজের মতো। গতকাল সকালে বিদ্যালয়ের কোচিংয়ে এসে অসুস্থতার কথা বলে অনি রায় বাড়িতে চলে যায়। বিদ্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামেরায় এটার ফুটেজ রয়েছে।
প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘কেউ অনিকে কোনো কক্ষে নিয়ে মারধর বা নির্যাতন করেছে, এমন কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি। যে চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে, তাদের সমস্ত তথ্য পুলিশের কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। তবে ওই শিক্ষার্থীদের বিষয়ে অনি আগে কখনো কোনো অভিযোগ করেনি। অনি রায়ের আত্মহত্যায় যদি কারও প্ররোচনা থেকে থাকে, তাহলে তদন্তপূর্বক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
যাদের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে অনি রায়ের লাশ নিয়ে আধাঘণ্টা যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। এ সময় সড়কের দুই পাশে প্রায় শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। পরে থানার ওসির আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা।
ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। খুব দ্রুত এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা হবে।