ইনসাইড থট

স্বাধীনতা বিরোধী স্বত্বাধিকারীর নামে অনুমোদিত টিসিবি ডিলারদের নজরদারিতে আনা প্রয়োজন


প্রকাশ: 30/03/2023


Thumbnail

দিপারানী দাস একজন স্বল্প আয়ের মানুষ। চার সদস্যের সংসার। স্বামীর স্বল্প আয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। সংগত কারণেই স্ত্রী হয়ে সংসার পরিচালনায় স্বামীকে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে সরকারের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা গ্রহণ করতে বিভিন্নস্থানে দৌড়ঝাঁপ করতে হয়।

স্বল্প আয়ের মানুষের সহায়তায় সরকার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওএমএস ডিলারের মাধ্যমে  ন্যায্যমূল্যে চাল ও আটা বিতরণের ব্যবস্থা করেছে। বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে টিসিবি ডিলারের মাধ্যমে ভোজ্যতেল, ডাল, পেয়াজ, চিনিসহ বিভিন্ন নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিতরনের ব্যবস্থা রয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দুধ, ডিম, মাছ, মাংস ইত্যাদি পুষ্টিকর খাবার বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোটকথা খোলা বাজারের উপর চাপ কমিয়ে বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রন করার জন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ভিন্ন ভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।

এছাড়া সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রমজান মাসে নিম্নআয়ের মানুষের সহযোগিতায় এক কোটি সংখ্যক পরিবারকে স্বল্পমূল্যে চাউল সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আশ্রায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ পাকাবাড়ী উপহার প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বয়স্ক ব্যাক্তি, বিধবা, প্রতিবন্ধি সহ বিভিন্ন ধরনের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হৃদরোগ, কিডনি বিকলজনিত রোগ, লিভার সিরোসিস, জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা সহায়তায় আর্থিক সাহায্যে প্রদানের কর্মসুচি চালু করেছে।

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধকালে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা সহ সকল মুক্তিযোদ্ধাদের স্বচ্ছল জীবন যাপন করতে সম্মানজনক পরিমাণ মাসিক ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। শুধু তাই নয়, মাসিক ভাতা প্রদানের পাশাপাশি ঈদ, পূজা, বৈশাখী সহ বিভিন্ন ধরনের উৎসব ভাতার ব্যবস্থা রয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত প্রতিবেশী দেশসমূহ। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরকারের অসংখ্য সেবামূলক কর্মসুচী বাস্তবায়নের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়নেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরাও হাত গুটিয়ে বসে নেই। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন মাথায় রেখে, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তি ও স্বাধীনতা বিরোধী আন্তর্জাতিক শক্তি ইদানিং ষড়যন্ত্রের ঝাল বুনতে শুরু করেছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তি যৌথভাবে ষড়যন্ত্র করে ১৯৭৪ সালে কৃত্রিম খাদ্যসংকট সৃষ্টি করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। বর্তমানে তেমনিভাবে ঐ একই আন্তর্জাতিক শক্তির উস্কানিমূলক বিবৃতি দেওয়ার পাশাপাশি তথাকথিত সুশীলরা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কোরাচ গাওয়া শুরু করেছে। সরকারও ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই এর সহায়তায় কঠোর হস্তে অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রন করে দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে চেষ্টা করছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়, বানিজ্য মন্ত্রনালয় ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মসূচি বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করছে। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী এরই মাঝে বাজারে পণ্যের মূল্য স্বাভাবিক হচ্ছে।

সরকারের সকল ধরনের এমনি সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কদমতলী থানার বিভিন্ন এলাকায়ও। উল্লেখিত দিপারানী দাস টিসিবি ডিলারের নিকট থেকে সিটি করপোরেশন থেকে প্রাপ্ত নির্দিষ্ট কার্ড নিয়ে মালামাল সংগ্রহ করতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। সারাদিন লাইনে থেকে বিকাল বেলা দিপা রানীর কার্ডে মালামাল দেওয়া হয়েছে বলে সিল মেরে দেয়। কিন্তু মালামাল দেওয়া হবেনা বলে বিদায় করে দেয়। কোন উপায় না পেয়ে দিপারানী দাস স্থানীয় পূজা কমিটির নেতার সহযোগিতা চেয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ঐ টিসিবি ডিলার বিএনপি দলীয় কর্মী এবং ডিলারশিপ লাইসেন্স অনুমোদিত হয়েছে সাবেক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে। উল্লেখ্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরও বিএনপিদলীয় নেতা। ঐ ডিলারের বিরুদ্ধে দিপারানী দাসের মত আরও অনেককেই এমনি ‘মালামাল দেওয়া হয়েছে‘ সীল নিয়ে চলে আসতে হয়েছে। পরবর্তিতে যদিও পূজা কমিটির নেতাদের হস্তক্ষেপে দিপারানী দাসসহ অন্যান্যরা মালামাল পেয়েছে, এবং ঐ ডিলার ক্ষমা চেয়েছেন।

গতকাল ২৯ মার্চ বুধবার স্থানীয় কাউন্সিলর, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ, ডিলারদের নিয়ে বৈঠক করে বিষয়টি সুরাহা করেন। পরবর্তিতে স্থানীয় কাউন্সিলরের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে মালামাল বিক্রয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়া কত সংখ্যক পরিবারের মালামাল নির্দিষ্ট ডিলারের নামে বরাদ্দ হয়েছে, কত সংখ্যক লোককে মালামাল দেওয়া হয়েছে, ইত্যাদি প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই বাছাই করে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। উল্লেখ্য ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র টিসিবি অফিসে জমা দেয়া বাধ্যতামূলক।

এখানে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসছে। এমনি কয়েকটি ডিলারের সন্ধ্যান পাওয়া গেছে যারা টিসিবি মালামাল উত্তোলন করলেও যথাযথ ভাবে বিক্রয় করছেন না। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের মধ্যে মুখচেনা বিএনপিদলীয় নেতাকর্মীদের পণ্য দিচ্ছে। বাকীদের বিদায় করে দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।

বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন,  ইহা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭