ইনসাইড পলিটিক্স

সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপির ভাঙন ডেকে আনবে?


প্রকাশ: 03/04/2023


Thumbnail

দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এসব সিটি করপোরেশনগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল এবং সিলেট। গাজীপুর সিটি নির্বাচন ২৫ মে, খুলনা ও বরিশাল ১২ জুন সিলেটে এবং রাজশাহীতে ২১ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

সোমবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে কমিশনের ১৭তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বিস্তারিত জানান ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের আগে পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই পাঁচটি সিটির মধ্যে দুইটিতে বিএনপির প্রার্থীরা অংশগ্রহণের জন্য মাঠে নেমে গেছেন বলে জানিয়েছে সূত্র। সূত্রটি বলছে, এর একটি হলো সিলেটের গত দুই নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এবং বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি ইতিমধ্যেই তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে নজরানা নিয়ে লন্ডনে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি চেষ্টা করছেন সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করতে তারেককে রাজি করানোর। এবং আরেকটি হলো রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সাবেক মেয়র ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তিনিও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুর মাধ্যমে লন্ডনে অবস্থানরত তারেকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। 

এদিকে আওয়ামী লীগ যে ‘উকিল’ মডেল তৈরি করেছিল, তাতে শতভাগ সার্থক দলটি। এই মডেলের মাধ্যমে বিএনপির কোনো একজনকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেয়ার ব্যাপারে-  গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও সার্থক হয়েছিল আওয়ামী লীগ। সেই মডেলেরই প্রস্তুতি হিসেবে নারায়ণগঞ্জে তৈমুর আলম খন্দকার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কুমিল্লার বিএনপি নেতা ও সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

আসছে পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যদি বিএনপির এসব প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে যান, তাহলে বিএনপির নির্বাচন বয়কটের যে বাঁধা, সে বাঁধাটা ভেঙ্গে যাবে বলেও জানায় সূত্র। 

একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপির অনেক প্রার্থী, বিএনপির যে দাবি ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না’- সে অবস্থানে থাকবে না। বরঞ্চ তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জের তৈমুর আলম খন্দকার, কুমিল্লার মনিরুল হক সাক্কু, সাবেক সংসদ সদস্য ও খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। তারা তারেকের নেতৃত্বের বিরোধীতা করার জন্যও সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। এখন বাস্তবিক পক্ষে বিএনপির এসব প্রার্থীরা যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে যান, তাহলে বিএনপির নির্বাচন থেকে দূরে থাকার যে গ্রুপটা রয়েছে, সে গ্রুপটা দুর্বল হয়ে পড়বে। এটাই বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।   

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির অনেক প্রার্থীই ইতিমধ্যে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ্রগ্রহণ করেছেন। সে কারণে কেউ কেউ দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন, আবার কেউ কেউ দল থেকে পদত্যাগ করেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তবে একটি বিষয় ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে যে, বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরোধীতা করছেন। তারা অনেকেই নির্বাচনমুখী। কিন্তু দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার ভয়ে অনেকেই চুপচাপ রয়েছেন, দলীয় কার্যক্রমে নিজেদের নিষ্ক্রিয় করে রেখেছেন।

তবে বিএনপির যেসব নেতারা ইতিমধ্যেই বহিষ্কৃত হয়েছেন, তাদের আর কোনো ভয় নেই। তারা যে কোনো নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে সদা প্রস্তুত। যে কারণেই বিএনপিতে যে গ্রুপটি নির্বাচন বিমুখ রয়েছে, সে গ্রুপটিও ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছে। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, আসছে পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির কোন কোন প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭