ইনসাইড টক

আদৌ কাজে ফিরতে পারব কিনা নিশ্চয়তা নেই: শারমিন আঁখি


প্রকাশ: 07/04/2023


Thumbnail

চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি (শনিবার) মিরপুরের একটি শুটিং বাড়ির মেকআপ রুমে বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন ছোট পর্দার এই অভিনেত্রী শারমিন আঁখি। দীর্ঘ দুই মাস হাসপাতালে থাকার পর অবশেষে বাসায় ফিরেছেন অগ্নিদগ্ধ এই অভিনেত্রী। সম্প্রতি তিনি কিছুটা সুস্থ হলে বাসায় ফেরার অনুমতি পান। তবে আরও ৬ মাস তাকে বিশ্রামে থাকতে হবে। এসময় তার শরীরে আলো লাগানো যাবে না। একেবারে আলোহীন হয়ে বন্দি থাকতে হবে অভিনেত্রীকে। বাংলা ইনসাইডারের সাথে আলাপ কালে এই অভিনেত্রী জানান সেই ঘটনার নানা কথা। 

আঁখি বলেন,  আমি পুরনো নিউজগুলো দেখছি, হেডলাইনগুলো পড়ছি আর ভাবছি একটা মানুষ মৃত্যুশয্যায় আর আমরা কি অসুস্থ খেলায় মেতেছিলাম, মানুষটাকে আগে বাঁচতে দে তারপর যা খুশি নিউজ কর। আমি মরে গেলেও তার লাশের পচা গন্ধের চেয়েও বিশ্রী গন্ধ আমরা নিউজ করে ছড়িয়ে দিতে পারি।

আমি তো কোনো অভিযোগ এখনো জমা দেই নাই। তাহলে আমার বিরুদ্ধে এত খোব কেনো? একজন সংস্কৃতিকর্মী হয়েও নারী বৈষম্যের স্বীকার হতে হচ্ছে। এমনিতেই মেয়েদেরকে দোষ দেওয়ার জন্য সবাই বসে থাকে। তার উপর মিডিয়ার মেয়েরা খারাপ এই টেগ লাইন তো আছেই। কয়েকটা ক্লিক আর ভিউ পাওয়ার জন্য কিছু অসুস্থ মানুষ মন গড়া নিউজ করে গেছে যখন আমি হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছি। ওই হাউজ আমাকে সামাজিকভাবে হেরাসমেন্ট করে কিছু হলুদ সাংবাদিকতাকে ইনফ্লুয়েন্স করে গেছেন।

আমি যে বেঁচে আছি এটাই তো মিরাকেল, মরে যাওয়ায় পসিবিলিটি ৮০%  ছিল উল্লেখ করে এই অভিনেত্রী বলেন, আমি মিডিয়াতে কাজ করি মানে তো এই নয় যে আমি এলিয়েন। আমার সাথে যে অন্যায় হয়েছে তার বিচার পাওয়ার অধিকার তো আমার আছে। আমি যে বেঁচে আছি এটাই তো মিরাকেল, মরে যাওয়ায় পসিবিলিটি ৮০%  ছিল। তখন তো এটেম্পট টু মার্ডার (প্রমাণ সাপেক্ষে) কেস হতে পারত। 

আগামী এক বছর আমার কাজ বন্ধ, আদৌ কাজে ফিরতে পারব কিনা নিশ্চয়তা নেই। ওই হাউজ মালিকের বিরুদ্ধে বিশাল অংকের ক্ষতি পূরণের মামলা হতে পারত, সব বাদ দিলাম, নেগলিজেন্স এক্টে মামলা হতে পারত। অথচ উনি এখন বলে বেড়াচ্ছে আমি কিছুই করতে পারব না। আমাকে এভাবে উস্কাচ্ছে কেনো আমি বুঝতে পারছি না!

আমাকে অপছন্দ করেন যেই কলিগরা (নাম উল্লেখ করলাম না), যারা বিভিন্ন সেটে আমাকে নিয়ে মন গড়া কথা বলছেন, ডবল স্ট্যান্ডার্ড আচরণ কইরেন না। আমার জায়গায় নিজেকে একবার দাঁড় করিয়ে দেখেন বুকে কাঁপুনি আসে কিনা, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে এক মুহূর্তের জন্য ভিজুয়াল করে দেখেন আপনার মুখটা পুড়ে খত বিক্ষত, দুই হাত মুখের সামনে ধরে ভাবেন আপনার হাতের চামড়া নেই। 

তখন আপনাদের ভোতা অনুভূতিগুলো হয়ত জাগ্রত হবে। আমার মেল কলিগরা, জাস্ট এক সেকেন্ডের জন্য চোখ বন্ধ করে চিন্তা করেন আপনার লাইফ পার্টনার অগ্নিদগ্ধ দেখবেন আপনার পায়ের তলার মাটি সরে যাবে। আমাদের জীবনে যে কি যুদ্ধ করতে হচ্ছে তার হয়ত ১% এই লেখা পড়লে বুঝতে পারবেন- বাকিটা বুঝবেন না।

সাংবাদিক ভাই বন্ধু এবং শুটিং সেটে যেই সব অসুস্থ কলিগরা মন গড়া গসিপ করছেন তাদের কাছে প্রশ্ন- একটা পারমাণবিক সিগারেটের এত শক্তি একটা ওয়াশরুমে ব্লাস্ট ঘটাতে পারে? আমরাই তো সিগারেটের আগুনকে বিস্ফোরণের কারণ বলছি। ওয়াশরুমে জমে থাকা গ্যাসের কোনো দোষ নাই!

ওয়াশরুম বিস্ফোরিত, বিস্ফোরণে ওয়াশরুমের দরজার অস্তিত্ব নেই আর আমি ভেতরে অগ্নিদগ্ধ। ওয়াশরুমের বেসিনে একটা সিগারেট ভর্তি প্যাকেট পাওয়া গেছে, প্যাকেটটা পুড়েনি! ফ্লোরে একটা অক্ষত লাইটার পাওয়া গেছে, এত বড় অগ্নিকাণ্ডে লাইটারটা গলেনি, ফুটেও যায়নি!  

পাশেই সিগারেটের আধাপোড়া টুকরো পাওয়া গেছে, বিস্ফোরণে এক টুকরো ফোম আর কাগজের তৈরি সিগারেটের অক্ষত রয়ে গেছে! দরজা উড়ে গেছে, একটা মানুষ পুড়ে গেছে আর এই তিনটি আলামতে আগুনের আঁচও কেনো লাগেনি এই প্রশ্নের উত্তর কি কেউ আমাকে দিতে পারবেন? 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭