ইনসাইড গ্রাউন্ড

ইসরায়েল বিরোধীতার জন্য বড় শাস্তি পেলো ইন্দোনেশিয়া


প্রকাশ: 08/04/2023


Thumbnail

ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ শুরু হতে দেড় মাসও বাকি নেই। বয়সভিত্তিক এই বিশ্বকাপের আয়োজক ছিলো ইন্দোনেশিয়া। সাড়ে তিন বছর ধরে প্রতিযোগিতাটি আয়োজনের প্রস্তুতিও নিয়েছে এশিয়ার দেশটি। তবে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির ইসরায়েল বিরোধী অবস্থানের কারণে বড় শাস্তি পেয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটিতে চলমান ইসরায়েল বিরোধী আন্দোলনের কারণে প্রতিযোগিতাটির আয়োজক স্বত্ত হারিয়েছে তারা। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে টুর্নামেন্টটি মাঠে গড়ানোর বিষয়টিও এখন অনিশ্চয়তার মুখে।

এক বিজ্ঞপ্তিতে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের আয়োজক স্বত্ব থেকে ইন্দোনেশিয়াকে বাদ দেয়ার কথা জানায় ফিফা। যদিও আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বর্তমান পরিস্থিতিকে এর কারণে হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সাথে ফিফার আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কবলেও পড়েছে ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। অনগ্রসর ফুটবলের উন্নতির জন্য পিছিয়ে থাকা দেশগুলোকে অর্থ দিয়ে থাকে ফিফা। সংস্থাটি জানায়, পরবর্তী নোটিশের আগ পর্যন্ত ফিফার ফরোয়ার্ড ফান্ডের অর্থ পাবে না ইন্দোনেশিয়া।

ইউরোপের বাছাইপর্ব উতরে ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের মূলপর্বে জায়গা করে নিয়েছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের কারণে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ইন্দোনেশিয়ায় ইসরায়েল বিরোধিতা এমনিতেই প্রবল। ফলে আসন্ন বয়সভিত্তিক বিশ্বকাপটিতে তাদের বয়কট করার দাবি উঠে। দেশটির সাধারণ জনগণ ও রাজনীতিবিদদের একটি অংশ ইসরায়েল বিরোধিতায় সরব হন। রাজধানী জাকার্তায় কয়েক দফায় বিক্ষোভ হয়। ইউক্রেনে আক্রমণের জন্য কাতার বিশ্বকাপ থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ করেছিলো ফিফা। আর ফিলিস্তিনে ধারাবাহিক হামলার পরও অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে ইসরায়েলের খেলার সুযোগ পাওয়াকে ফিফার দ্বিচারিতা’ বলে মন্তব্য করেন বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব স্ট্রাগলের সেক্রেটারি জেনারেল হাসতো ক্রিস্তিয়ান্তো। 

তবে অংশগ্রহণকারী সব দলের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বিষয়ে সব সময়ই আশ্বস্ত করা হয়েছিলো প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো ও দেশটির ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে। তবে বিশ্বকাপের অন্যতম ভেন্যু বালির গভর্নর ওয়াইয়ান কোসতা সেখানে ইসরায়েলকে আতিথেয়তা দেবে না বলে চিঠি পাঠানোর পর আয়োজক স্বত্ত বাতিলের ঘোষণা দেয় ফিফা।

তবে ফিফার এই সিদ্ধান্তে বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে ইন্দোনেশিয়া। ব্রাজিল ও পেরুকে টপকে ২০১৯ সালের অক্টোবরে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের আয়োজকের দ্বায়িত্ব পায় ইন্দোনেশিয়া। দেশটির শীর্ষ গণমাধ্যম ভয়েস অব ইন্দোনেশিয়া জানায়, বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে বাজেট ছিলো ৩ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার। এর পাশাপাশি স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য পাবলিক ফান্ড থেকে খরচ হয়েছে আরও ২ কোটি ১০ লাখ ডলার। নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ৫টি স্টেডিয়াম ও ২০টি অনুশীলন ভেন্যু প্রস্তুত করতে খরচ হয়েছিল প্রায় ১২০ লাখ মার্কিন ডলার।

শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, ফিফার এই সিদ্ধান্তে কাজ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছিলো এসব মানুষের। এছাড়াও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, পর্যটন ও ভেন্ডর মিলিয়ে আরও বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশটি।

দেশটির ইসরায়েল বিরোধী এমন অবস্থান অবশ্য নতুন কিছু নয়। ইসরায়েলের সঙ্গে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ১৯৫৮ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে অংশ নেয়নি ইন্দোনেশিয়া। ১৯৬২ সালে এশিয়ান কাপের আয়োজক ছিলো দেশটি। সেবার ইন্দোনেশিয়া সরকার ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নাম প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় ইসরায়েলের খেলোয়াড়রা। ২০০৬ সালে তেল আবিবে অনুষ্ঠিত ফেড কাপ টেনিস টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয় ইন্দোনেশিয়া।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭