ইনসাইড পলিটিক্স

আরও অনেক সাদিক-জাহাঙ্গীর আছে আওয়ামী লীগে: তাদের কি হবে


প্রকাশ: 17/04/2023


Thumbnail

পাঁচ সিটি করপোরেশন মনোনয়নে আওয়ামী লীগ একটা স্পষ্ট বার্তা দিল। সাদিক আব্দুল্লাহ বা জাহাঙ্গীর আলমের মত ব্যক্তিদেরকে আগামী নির্বাচনের দূরে রাখা হবে। সাদিক আব্দুল্লাহ এবং জাহাঙ্গীর আলমের মত ব্যক্তিদেরকে নির্বাচনের টিকিট দেবে না আওয়ামী লীগ। সাদিক আব্দুল্লাহ এবং জাহাঙ্গীর এর মধ্যে কতগুলো সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য ছিল। এদের এই সমস্ত বৈশিষ্ট্যের মধ্যে ছিল যে তারা জনগণের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করত, জনগণকে তারা প্রজা মনে করত, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করত, নেতাকর্মীদেরকে ক্ষমতার দাপট দেখাত এবং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিভিন্ন অন্যায়-অনিয়ম তারা করত। এই সমস্ত অভিযোগগুলোকে আমলে নিয়েই সাদিক আব্দুল্লাহ এবং জাহাঙ্গীর আলমকে নির্বাচনের মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। 

বিশেষ করে ক্ষমতার দাপট দেখানো, ক্ষমতার অপব্যবহার করা, পেশি শক্তি প্রদর্শন এবং মাস্তানির জন্য সমর্ধিক সমালোচিত ছিল। মজার ব্যাপার হল যে জাহাঙ্গীর মেয়র থেকে আগেই পদচ্যুত হয়েছেন তাঁর অপকর্মের জন্য। কিন্তু সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়র পদে বহাল ছিলেন যখন মনোনয়ন দেয়া হয়। তিনি বহাল থাকা অবস্থায় তাকে যখন মনোনয়ন দেওয়া হয়নি তখন উল্লসিত হয় বরিশালবাসী। তারা বিজয় মিছিল পর্যন্ত করেছে। সাদিক আব্দুল্লাহ দুর্ব্যবহার এবং তাঁর কর্তৃত্ববাদী আচরণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করেছে বলেই তারা উল্লসিত হয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল যে এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ যে বার্তাটি দিল সে বার্তা কি সারা দেশের জন্য প্রযোজ্য? 

আওয়ামী লীগের এরকম বিভিন্ন জায়গায় বহু সাদিক আব্দুল্লাহ এবং বহু জাহাঙ্গীর রয়েছে যারা। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় মাথাব্যথার কারণ হিসেবে দাঁড়াতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগ বহু ভালো কাজ করেছে, বহু উন্নয়ন করেছে কিন্তু কিছু কিছু স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের জনগণের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, খারাপ আচরণ, ক্ষমতার দাপট হম্বিতম্বি ইত্যাদির কারণে আওয়ামী লীগের ইমেজ নষ্ট হয়েছে। যার প্রভাব আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভয়ংকর ভাবে পড়তে পারে। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগের মধ্যে বারবার করে বলা হচ্ছে যারা সাদিক আব্দুল্লাহ মত ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে, জাহাঙ্গীর আলমের মতো যারা দলকে বিভক্ত করছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে এবং ব্যবস্থা নিতে হবে। 

আওয়ামী লীগ সাম্প্রতিক সময় বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার ওপর একাধিক জরিপ পরিচালনা করেছে। এই জরিপ গুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে যেখানে যেখানে এমপিরা জনগণের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন, ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন, কর্মীদেরকে অবহেলা করেছেন সেখানে সেখানে আওয়ামী লীগের অবস্থান অত্যন্ত নাজুক এবং দুর্বল হয়ে পড়েছে। এরকম অন্তত ৯২টি আসন চিহ্নিত করা হয়েছে যে আসনগুলোতে প্রার্থীদের নেতিবাচক তৎপরতার কারণে আওয়ামী লীগের অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। আর এই কারণেই দলের মধ্যে আরও যারা সাদিক আব্দুল্লাহ এবং জাহাঙ্গীর আলমের মতো নেতা আছেন তাদেরকে চিহ্নিত করা দরকার, তাদেরকে অন্তত দল থেকে দূরে সরিয়ে রাখা দরকার বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। 

আওয়ামী লীগের একজন নেতা স্বীকার করেছেন, সাদিক আবদুল্লাহ একাই শুধু বরিশালে ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করেননি, বেশ কিছু এলাকায় এমপিরা তাদেরকে এলাকাগুলোতে ত্রাস এবং সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। এই জায়গা থেকে যদি উত্তরণ না ঘটানো যায় তাহলে সামনের দিনগুলোতে আওয়ামী লীগের জন্য অনেক খারাপ খবর অপেক্ষা করছে। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি সব সময় এসব ব্যাপারে সচেতন। তিনি যথা সঠিক সময়ে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে এতোটুকু কার্পণ্য করেন না। সাদিক আব্দুল্লাহ বা জাহাঙ্গীরদেরকে যে তিনি প্রশ্রয় দেন না সিটি নির্বাচনে তার প্রমাণ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাদিক আব্দুল্লাহ বা জাহাঙ্গীর এর মত যারা আছে তাদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা ধারণা দিচ্ছেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭