ইনসাইড বাংলাদেশ

অনির্বাচিত সরকার: সুশীলরা কি পিছু হটছে?


প্রকাশ: 17/04/2023


Thumbnail

আওয়ামী লীগ বিএনপির বাইরে সুশীল নিয়ন্ত্রিত একটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার পরিকল্পনা থেকে কি দূরে সরে গেছে সুশীলরা? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুশীল সমাজ এবং প্রথম আলো-ডেইলি স্টার মিডিয়া গোষ্ঠী এ রকম একটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই রাজনীতিতে একটি অনিশ্চয়তা এবং অস্পষ্টতা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে সে জায়গা থেকে সুশীলরা পিছু হঠেছে বলে একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। বরং তারা একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে আপাতত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অব্যাহত রাখার পক্ষেই বাস্তবতাকে মেনে নিয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ফলে নির্বাচন না হয়ে একটি অনিশ্চিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাদের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা আপাতত নেই। একাধিক কারণে এই সুশীল সমাজ এই অবস্থান থেকে সরে এসেছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য যে, ২০১৮’র নির্বাচনের পর থেকেই সুশীল সমাজ নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আড়ালে অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার একটি প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বাংলাদেশে সুশাসনের অভাব, মানবাধিকার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন ইস্যু উত্থাপিত হয়েছিল। এই সমস্ত ইস্যুর পাশাপাশি বাংলাদেশে ২০১৮’র নির্বাচনে অনিয়ম, ত্রুটি ইত্যাদি বিষয়গুলো সমানে আনা হয়েছিল। সবকিছু মিলিয়ে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল, যাতে পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে ধারণা তৈরি হয় যে, বর্তমান সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।

আর এটি করতে গিয়েই ফাঁকে ফাঁকে পশ্চিমা দেশুগুলোর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছিল সুশীল সমাজ। আর এ কর্মকান্ডে সুশীলদেরকে পৃষ্টপোষকতা এবং মদদ দিয়েছিল ১/১১’র অন্যতম কুশীলব দুটি পত্রিকা প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার। তারা নিরন্তরভাবে সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অন্যান্য ইস্যুগুলোকে তুলে ধরেছিল- গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য। তারা একের পর এক বিভিন্ন রকম কাজ করছিল- যেন বর্তমান সরকারের উপর আস্থা নষ্ট হয়ে যায়। অন্যদিকে বিএনপিকে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে উস্কে দেওয়ার কাজটি সফলভাবে করেছে সুশীল এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম। এ রকম পরিস্থিতিতে বিএনপি ঘোষণা করে যে, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী কোনো নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবে না।                

আর এই দাবিতে আন্দোলন শুরু করলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে একটি অশ্চিয়তা তৈরি হয়। এ নিশ্চয়তার মধ্য দিয়েই আওয়ামী লীগ নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। কিন্তু সকলের মধ্যেই সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, বাংলাদেশে একটি অনির্বাচিত সরকারকে আবার আনার ষড়যন্ত্র এবং প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু হঠাৎ করেই গত কিছু দিন ধরে এই প্রক্রিয়ায় ভাটার টান দেখা গেছে। যে সমস্ত কারণে এই প্রক্রিয়ায় উৎসাহ এবং উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে - 

১. দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা: সুশীলরা মনে করছেন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন বেশ চ্যালেঞ্জিং। এর মধ্যে দায়িত্বগ্রহণ করলে তারা খুব ভালো অবস্থানে যেতে পারবে না। 

২. শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা এবং নেতৃত্ব: সুশীলরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর বিকল্প কেউ নেই। তার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। এ রকম অবস্থায় তাকে সরিয়ে কোনো সরকার গঠন করা হলে, সেই সরকারটি গ্রহণযোগ্য হবে না। 

৩. আমলা এবং সশস্ত্র বাহিনীর সমর্থন: এ ধরনের অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আনার ক্ষেত্রে সাধারণত সামরিক এবং বেসামরিক প্রশাসনের সমর্থন লাগে। কিন্তু সে রকম সমর্থন আপাতত সুশীলদের তেমন পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। 

এ সমস্ত বাস্তবতার কারণেই সুশীলরা তাদের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে। তবে অনির্বাচিত সরকারের পরিকল্পনা থেকে সরে আসলেও আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা বিরোধী নীলনকশা বাস্তবায়ন থেকে তারা সরে আসেনি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭