ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন নিয়ে দর কষাকষি করতে চায় তারেক, সরকারের না


প্রকাশ: 17/04/2023


Thumbnail

লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া তার আইনগত বৈধতার জন্য সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি করতে চান। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ দর কষাকষির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তারেক জিয়া পক্ষে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কিভাবে নির্বাচন করা যায়, তার একটি পথ খুঁজে বের করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিএনপিতে যারা রাজনীতি করছেন, তাদের যে কারো সাথে আলোচনা হতে পারে, কিন্তু পলাতক কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সরকার আলোচনা করবে না। এ রকম পরিস্থিতিতে তারেক জিয়ার পরিকল্পনা আরেক দফা ভেস্তে যেতে বসেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। এ দাবিতে তারা এখনও পর্যন্ত অটল রয়েছে। তবে এ রকম পরিস্থিতি যে কোনো সময় পাল্টে যেতে পারে বলেই বিভিন্ন মহল মনে করছেন। কারণ বিএনপির মধ্যে একটি বড় অংশ এখন নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং বেগম খালেদা জিয়া গতকাল মির্জা ফখরুল ইসলামকে তার বাসভবনে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর, বিএনপির রাজনীতিতে নানা রকম গুঞ্জন এবং চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

বিভিন্ন মহল মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরামর্শে এবং নানা রকম কৌশলগত কারণে বিএনপিকে নির্বাচনে যেতেই হবে। খালেদা জিয়া বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করবার জন্য কাজ করছেন এবং এটি সরকারের সঙ্গে এক ধরনের সমঝোতার অংশ হিসেবেই করছেন বলে অনেকেই ধারণা করেন। বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনের পরে বিদেশে যাবেন- এ রকম একটি শর্তে তিনি নির্বাচনে যাওয়ার জন্য বিএনপিকে নির্দেশনা দিবেন বলেও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এ রকম নির্দেশনা না দিলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দূতাবাসগুলো বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছে এবং অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন যেন নিশ্চিত হয়, সেটি তারা দেখবেন বলেও বিএনপিকে আশ্বস্ত করছেন।

গতকাল বিএনপির তিন নেতাকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস আমন্ত্রণ জানান এবং সেখানে নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন। অবাধ, সুষ্ঠু, নির্বাচনের পথগুলো নিয়ে তাদের মতামত শোনা হয়। এ রকম পরিস্থিতিতে তারেক যখন মূল রাজনীতির মানচিত্রের বাইরে চলে যাচ্ছেন, তখন তার মাধ্যমে সরকারকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের ব্যাপারে তারেক জিয়া সরকারের সাথে আনুষ্ঠানিক সংলাপ করতে চায় বলে বলা হয়েছে। এই আনুষ্ঠানিক সংলাপে তারেক জিয়া নেতৃত্বও দিতে চান এবং সরকারের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের দর কষাকষিও করতে চান বলে জানা গেছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, তারা কোনো পলাতক ব্যক্তির সঙ্গে সংলাপে আগ্রহী নয়। এবং তারেক জিয়াকে সংলাপ করতে হলে তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং আইনগত বাধাগুলোও দূর করতে হবে। তারপরেই তিনি এ ধরনের সংলাপে যোগ্য হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

এই নির্বাচনকে ঘিরে তারেক একটি অবস্থান তৈরি করতে চেষ্টা করেছিলেন- যাতে করে তিনি বিএনপির প্রধান নেতা হিসেবে আলোচিত হতে পারেন। বিশেষ করে সরকারের সঙ্গে একটি দর কষাকষির মাধ্যমে তিনি নিজের বৈধতার চেষ্টা করেছিলেন-  সরকার যেন তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির একজন নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দান করে। এর ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে চাপ সৃষ্টি তার জন্য সহজ হতো। কিন্তু সরকার তারেকের এ ফাঁদে পা দেয়নি। ফলে তারেক জিয়া এখনও রাজনীতিতে একজন পলাতক আগুন্তুক হিসেবেই রয়ে গেলেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭