ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান না খালেদা জিয়া?


প্রকাশ: 18/04/2023


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সর্বশেষ বৈঠকে কি কথা হয়েছে তা নিয়ে নানামুখী গুঞ্জন চলছে। যদিও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিকভাবে এই বৈঠক সম্পর্কে কোনো কথাই বলেননি। তবে বৈঠকে উপস্থিত খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার ওই বৈঠকের অনেক তথ্যই জানেন। যদিও তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

একাধিক সূত্র বলছে, এই বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বেগম খালেদা জিয়া, শামীম এস্কান্দার ছাড়াও সরকারের অন্তত দুইজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক সমঝোতার অংশ হিসেবে খালেদা জিয়ার মধ্যস্থতায় সরকারের সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল বলে একাধিক সূত্র ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের বৈঠকের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এমনকি রাজনৈতিক সমঝোতার ব্যাপারে সরকার এখন পর্যন্ত কোনো বক্তব্য রাখেনি। বেগম খালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কাঠামো এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। তবে বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘমেয়াদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা এক-এগারোর মতো পরিস্থিতি কোন অবস্থাতেই চান না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়া এটাও বলেছেন যে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করবে, বিএনপি রাজনীতি করতে পারবে না। বেগম খালেদা জিয়া তাইতো দীর্ঘ মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয় বরং মাত্র ৯০ দিনের জন্য একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি অন্য কোন কাজ করে বিশেষ করে রাজনৈতিক সংস্কার বা অন্যান্য অন্যান্য বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে তাহলে সেটি কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না বলেও বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় বর্তমান সময়ে একটি রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টা চলছে। সেই সমঝোতার সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠকের কোন সম্পর্ক নেই বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে। বরং বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠক বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে যাওয়ার একটি অংশ বলেই সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। উল্লেখ্য যে, বিএনপি ঘোষণা করেছে তারা নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। একইসাথে বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো বির্নিমাণের লক্ষ্যে ২৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। 

বিএনপির নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করছেন যে আওয়ামী লীগ সরকারকে পতন ঘটিয়ে একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হবে এবং এইসব নির্দলীয় সরকার দীর্ঘদিন দায়িত্বে থাকবে এবং নির্বাচন ব্যবস্থা পুনর্গঠনসহ  সংবিধানিক কাঠামো পরিবর্তনের সহ বিভিন্ন বিষয়গুলো তদারকি করার পরই একটি নির্বাচন দেবে। সুশীল সমাজের সাথে বিএনপির একাধিক আলোচনায় সুশীল সমাজের অন্তত দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় চেয়েছে যে সময়ে তারা অনির্বাচিতভাবে দেশ পরিচালনা করবে এবং সংবিধান সংশোধন, নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার সহ রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মাণের মৌলিক কার্য সম্পন্ন করবেন। আর এরকম একটি পরিকল্পনার কথাই বেগম জিয়াকে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দীর্ঘদিন থাকলে বিএনপির আরও ক্ষতি হবে এবং এরকম আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত দিকে যাওয়া যাবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ৩ মাসের বেশি যেন না হয় সে ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়া স্পষ্ট সতর্ক বার্তা দিয়েছেন। এক-এগারোর অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকেও বিশ্বাস করা যাবেনা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭