ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচনের মাঠে হেভিওয়েট আমলারা


প্রকাশ: 21/04/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্তত শতাধিক আমলা প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার আগ্রহ প্রকাশ করছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে তাঁরা মনোনয়ন লাভের জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আমলা আওয়ামী লীগের টিকিট পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। বাংলা ইনসাইডারের হিসেব অনুযায়ী এ পর্যন্ত প্রায় ৭৫ জন সাবেক আমলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার কাছে তাদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন এবং নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তাঁরা ইতোমধ্যে এলাকায় ঘোরাঘুরি শুরু করেছেন। 

অন্যদিকে এরকম ৩২ জন আমলার সন্ধান পাওয়া গেছে যারা অবসরের পর বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে কোনো না কোনো ভাবে সম্পৃক্ত এবং আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন। জাতীয় পার্টি থেকেও ১৩ জন সাবেক আমলা এখন সক্রিয় রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন গাজীপুর সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে অন্তত ২০ জন সাবেক আমলা নির্বাচন করতে পারেন নির্বাচনের মনোনয়ন লাভের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

শুধুমাত্র সচিব নন, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব পর্যায়ের অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তারা নির্বাচনের মাঠে দৃশ্যমান হচ্ছে না এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন লাভের জন্য তাঁরা সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রাখছেন। তবে এবারের নির্বাচনে কয়েকজন হেভিওয়েট আমলা ইতোমধ্যে দৃষ্টি কেড়েছে, যারা আমলাতন্ত্রের খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এখন তারা অবসরে আছেন কিন্তু নির্বাচনে আসতে চান এবং আগামী নির্বাচনে এই সমস্ত আমলারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যে সমস্ত হেভিওয়েট আমলারা আগামী নির্বাচনে আলোচিত হবেন এবং অংশগ্রহণ করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন;

আবুল কালাম আজাদ: প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব এবং পরবর্তীতে এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ জামালপুরের সন্তান। জামালপুর-৩ আসন থেকে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। বিভিন্ন জরিপে আবুল কালাম আজাদ এর নাম আসছে এবং তিনি এগিয়ে আসছেন। এই আসনটিতে আগে এমপি হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্যাগী পরীক্ষিত নেতা রেজাউল করিম হীরা। পরবর্তীতে মুজাফফর আহমেদকে এখানে মনোনয়ন দেয়া হয়। এবার এই আসনে মনোনয়ন পরিবর্তন করে সাবেক আমলা আবুল কালাম আজাদকে দেয়া হতে পারে। আবুল কালাম আজাদ এর জামালপুরে গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। জামালপুরে রাজনৈতিক দল মত নির্বিশেষে অনেকেই মনে করেন যে তার হাত ধরে জামালপুরে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। জামালপুরের একজন সত্যিকারের অভিভাবক হিসেবে তাকে মনে করা হয়। এ কারণে আবুল কালাম আজাদের আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অনেক বেশি সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। 

কামাল নাসের চৌধুরী: কামাল চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ছিলেন। পরবর্তীতে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির মূখ্য সমন্বয়কারী হিসেবে ভূমিকা পালন করেছিলেন। কুমিল্লার একটি আসন থেকে তাঁর নির্বাচন করার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ওই আসনে আওয়ামী লীগের একজন প্রবীণ নেতা রয়েছেন। যিনি মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। বিশেষ করে কমিটি বাণিজ্য করার অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার কারণে তিনি এবার মনোনয়ন থেকে বাদ পড়তে পারেন। তাঁর বদলে এবার মনোনয়ন পেতে পারেন কামাল কামাল নাসের চৌধুরী। 

কবির বিন আনোয়ার: কবির বিন আনোয়ার মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে তিনি মাত্র ১৯ দিন দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি অবসরে আছেন। তাঁর চাকরির অবসরের পর তাঁর চাকরি মেয়াদ তিন বছর পূর্ণ হয়নি। তিনি বর্তমান নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী নির্বাচনের অযোগ্য। কিন্তু এই আইনটিকে ইতোমধ্যে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। এই আইন যদি শেষ পর্যন্ত চ্যালেঞ্জ করে কবির বিন আনোয়ার শেষ পর্যন্ত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়। তবে কবির বিন আনোয়ার যে আসনে প্রার্থী হতে চান সিরাজগঞ্জের সেই আসনটিতে প্রার্থী পরিবর্তন করা হবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত।

সাজ্জাদুল হাসান: প্রধানমন্ত্রী সাবেক সচিব সাদ্দাদ হোসেন এখন নেত্রকোনার একটি আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং এই নির্বাচন করার জন্যই তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও গ্রহণ করেননি। তিনি ইতোমধ্যে নির্বাচনের জন্য নিজেকে যোগ্য ঘোষণা করেছেন। মনোনয়ন পেলে তিনি আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সেটি মোটামুটি নিশ্চিত। 

এছাড়াও আরও কয়েকজন সচিব যারা নির্বাচনের মাঠে বেশ সরগরম এবং তাঁরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭