ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বোমাবর্ষণ বন্ধ না হলে আলোচনা নয়: সুদানের জেনারেল হেমেডটি


প্রকাশ: 29/04/2023


Thumbnail

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বোমাবর্ষণ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কোনো আলোচনায় যাবেন না বলে জানিয়েছেন সুদানের লড়াইরত দুই বাহিনীর একটি র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) প্রধান মোহাম্মদ হামদান হেমেডটি দাগালো।

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও আরএসএফ যোদ্ধাদের ওপর নির্বিচারে বোমাবর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

চলমান সহিংসতার জন্য সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানকে দায়ী করে জেনারেল হেমেডটি বলেন, আমরা সুদানকে ধ্বংস করতে চাই না।

প্রতিবেশী দেশগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘের কূটনৈতিক চেষ্টায় গত বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) সুদানে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সংকট নিরসনে প্রাথমিকভাবে সম্মতি দিয়েন সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান।

টেলিফোনে বিবিসি’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেনারেল হেমেডটি বলেছেন, তিনিও আলোচনায় রাজি। কিন্তু শর্ত হলো, যুদ্ধবিরতি মানতে হবে। তার কথায়, শত্রুতা বন্ধ করুন। এরপরেই কেবল আলোচনায় বসতে পারি।

হেমেডটি বলেছেন, জেনারেল বুরহানের সঙ্গে তার কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা নেই। তবে তিনি দেশটির ক্ষমতাচ্যুত শাসক ওমর আল বশিরের অনুগতদের সরকারে নিয়ে আসার অভিযোগ করে বুরহানকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে উল্লেখ করেন।

প্রায় তিন দশক ক্ষমতায় থাকার পর ২০১৯ সালে প্রবল গণআন্দোলনের জের ধরে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ যৌথভাবেই ওমর আল বশিরকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছিল।

বশিরের তিন দশকের রাজত্বকাল পরিচিত ছিলো ইসলামপন্থী আদর্শ ও শরিয়া আইন কার্যকরের জন্য।

“দু:খজনকভাবে বুরহান পরিচালিত হচ্ছে উগ্রবাদী ইসলামী নেতাদের দ্বারা,” হেমেডটি বলছিলেন।

২০২১ সালে তিনি ও জেনারেল বুরহান ক্ষমতা ভাগাভাগির একটি চুক্তি বাতিল করে দিয়েছিলেন।

কার্যত দেশটিতে বেসামরিক শাসন ফিরিয়ে আনা বিশেষ করে হেমেডটির এক লাখ সদস্যের শক্তিশালী আরএসএফকে সেনাবাহিনীতে নিয়মিতকরণের সময়সীমা নিয়ে তাদের মধ্যে সমঝোতা ভেঙ্গে পড়েছিলো।

“আমি আজকেই বেসামরিক সরকার পেতে চাই। আগামীকাল নয়। একটি পূর্ণ বেসামরিক সরকার। এটাই আমার নীতি,” বিবিসিকে বলছিলেন হেমেডটি।

আরএসএফ প্রধানের গণতন্ত্রের প্রতি এমন অঙ্গীকার প্রকাশ নতুন কোনো বিষয় নয়। যদিও বিশ্লেষকরা অতীতে গণআন্দোলন দমাতে এই বাহিনীকে নিষ্ঠুরভাবে ব্যবহারের কথাও উল্লেখ করে থাকেন।

হেমেডটি বলেন আরএসএফ যোদ্ধারা সেনাবাহিনীর সৈন্যদের শত্রু নয়। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন যে তারা গত ত্রিশ বছরের সরকারের ধ্বংসাবশেষ থেকে সুদানকে রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছিলেন।

“আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে লড়বো না। দয়া করে আর্মি ডিভিশনসে ফেরত যান এবং আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে লড়বো না”।

সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা

হেমেডটি যখন এসব কথা বলছেন, ঠিক তখন লড়াইয়ের কারণে লাখ লাখ মানুষ রাজধানী খার্তুমে আটকা পড়ে রয়েছে। সেখানে খাদ্য, পানি ও জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

জাতিসংঘ বলছে, আরএসএফ যোদ্ধারা লোকজনকে বাড়িঘর থেকে বের করে লুটপাট ও চাঁদাবাজি করছে।

তবে হেমেডটির দাবি, তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা আরএসএফের ইউনিফর্ম করে এগুলো করছে তার যোদ্ধাদের দুর্নাম রটানোর জন্য।

লুটপাটের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, ১৪ দিন আগে শুরু হওয়া সংঘাত থেকে মুক্ত রাখতে তার যোদ্ধারা শহরবাসীকে সহায়তার চেষ্টা করছে।

সুনাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দু’পক্ষে লড়াইয়ে এ পর্যন্ত অন্তত ৫১২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪ হাজার ১৯৩ জন। তবে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

খার্তুমের পাশাপাশি সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর আল জেনেইনা শহরে সহিংসতা খুবই খারাপ রূপ নিয়েছে। সেখানে আরএসএফ ও মিলিশিয়াদের গ্রুপগুলো লুটপাট এবং বাজার, ব্যাংক ও এইড ওয়্যারহাউজগুলোতে আগুন দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭