প্রকাশ: 30/04/2023
আজ রবিবার (৩০
এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবার
কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ড। কিন্তু তারপরও পরীক্ষার
প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়ানোর হচ্ছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপহস অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমগুলোতে।
শিক্ষা বোর্ডের
কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী তারা এমন ৪টি গ্রুপের সন্ধান পেয়েছে যেখানে প্রশ্নফাঁসের
গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এ গ্রুপগুলোর তথ্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি)
দেওয়া হয়েছে। আজকের মধ্যেই এসব গ্রুপ নিষ্ক্রিয় করা হবে বলে জানা গেছে।
ফেসবুকে
SSC Question Out All Board 2023 এবং 'SSC Question প্রশ্ন ফাঁস' গ্রুপসহ অন্তত
চারটি গ্রুপ খুলে প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। প্রথম পেজটি খোলা হয় তিন দিন আগে,
অন্যটি গত ১৯ এপ্রিল। পেজ দুটিতে বলা হয়েছে, ‘প্রশ্ন নিতে হলে অবশ্যই চলতি বছরের এসএসসি
পরীক্ষার্থী হতে হবে, প্রশ্ন কারও সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না, পরীক্ষার এক দিন আগে প্রশ্ন
দেওয়া হবে, তবে বিশেষ প্রয়োজনে পরীক্ষার কিছুদিন আগে নিলে দাম কম-বেশি হবে, সব বোর্ডে।’
‘মূল বোর্ড
কপি পাওয়া যাবে, প্রশ্ন পাওয়ার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মেসেজ দিতে হবে। বাড়তি
সতর্কতাস্বরূপ অন্য কারও কাছ থেকে প্রশ্ন কিনে প্রতারিত হলে এই গ্রপ দায়িত্ব নেবে
না।’
আবার বিশেষ
দ্রষ্টব্যে বলা হয়েছে , ‘অনেক সময় সাইবার ক্রাইমের সদস্যরা তথ্য নেওয়ার জন্য প্রশ্ন
কিনেছে, এতে কর্তৃপক্ষ অনেক সমস্যায় পড়েছে। সে কারণে আগে থেকেই টাকা জমা দিতে হবে।’
অন্যদিকে ফেসবুকের
আরেকটি গ্রুপে বলা হয়, ‘যাদের পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালে নয়, তাদের চিন্তার কোনো কারণ
নেই। অগ্রিম টাকা ছাড়াই ফাঁসকৃত প্রশ্ন ও উত্তর সবার আগে পরীক্ষার আগের রাত ১২টার
মধ্যে দেওয়া হবে। কমন পড়লে টাকা দিতে হবে।’
তবে জুড়ে দেওয়া
হয়েছে কিছু শর্ত। এগুলো হলো— ‘এসএসসি পরীক্ষার্থী ছাড়া কেউ প্রশ্ন পাবে না; পরীক্ষার্থীর
প্রবেশপত্রের ছবি দিতে হবে; প্রশ্ন নেওয়ার আগে বাধ্যতামূলক নিজের নাম, বাবার নাম ও
ছবি দিতে হবে; প্রশ্ন কেউ কোথাও শেয়ার করলে বা বিক্রি করলে পরের দিন তাকে আর প্রশ্নপত্র
দেওয়া হবে না এবং গ্রুপ থেকে বাদ দেওয়া হবে; প্রশ্ন পেতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে
যোগ দিতে হবে, এ জন্য ইনবক্সে 'অ্যাড মি' লিখে প্রশ্ন চেয়ে ইনবক্সে মেসেজ দিতে বলা
হয়েছে।’
যদিও শিক্ষা
মন্ত্রণালয় বলছে, নানামুখী সিকিউরিটি কারণে প্রশ্ন ফাঁসের কোনো সুযোগ নেই। কারণ প্রশ্নফাঁস
করা কঠিন কিন্তু গুজব ছড়ানো সহজ।
শিক্ষা বোর্ডের
কর্মকর্তা জানান, পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্ন ফাঁস করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ উপজেলায়
একাধিক প্রশ্ন সেট পাঠানো হয়েছে। কোন সেটে পরীক্ষা হবে তা নির্ধারণ হবে পরীক্ষা শুরু
হওয়ার ২৫ মিনিট আগে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট পূর্বে প্রশ্নের সেট কোড সচিবকে জানানো
হবে। সেই অনুযায়ী কেন্দ্র সচিব, ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের
প্যাকেট বিধি অনুযায়ী খুলবেন।
তাই কারও কাছে
প্রশ্ন গেলে ২৫ মিনিট আগে যাবে, তার আগে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর ২৫ মিনিট আগেও
প্রশ্ন ফাঁস করার সুযোগ নেই। কারণ প্রশ্ন সরবরাহসহ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ স্মার্টফোন
ব্যবহার করতে পারবেন না।
এছাড়াও আরও
অনেক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে যার ফলে প্রশ্ন ফাঁস করা অসম্ভব এবং ফেসবুকে
যেসব গ্রুপে প্রশ্ন ফাঁসের বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, এটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
২০১২-২০১৬ সাল পর্যন্ত পাবলিক পরীক্ষা মানেই ছিল
প্রশ্ন ফাঁসের মহড়া। নানামুখী তৎপরতায় প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে না পেরে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী
নুরুল ইসলাম নাহিদ একাধিক প্রশ্ন কেন্দ্র পাঠিয়ে ২৫ মিনিট আগে লটারিতে প্রশ্নের সেট
নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরপর থেকে প্রশ্ন ফাঁস শূন্যের কোটায় নেমে আসে।
এখন প্রশ্ন ফাঁস নেই বললেই চলে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭