ইনসাইড ইকোনমি

রিজার্ভ কমে ৩০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে


প্রকাশ: 03/05/2023


Thumbnail

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির পর ডলার সংকটে পড়ে দেশ। ডলার সাশ্রয়ের নানা উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবুও রিজার্ভের ওপর চাপ কমছে না। বরং আমদানি বিল পরিশোধে প্রতিনিয়তই রিজার্ভ থেকে বাজারে ডলার সরবরাহ করা হচ্ছে।

গত সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে আসে। ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনকে (বাফেদা) ডলারের দাম নির্ধারণে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

তবে সংকট নিরসনের পরিবর্তে গত বছরের মার্চ থেকে তা আরও প্রকট আকার ধারণ করে। এতে ডলারের মজুত কমছেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ ৩০ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার।

চলতি সপ্তাহের শেষে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সদস্যভুক্ত দেশ হিসেবে আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে ১ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার। আকু সদস্য দেশের মধ্যে রয়েছে- ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় তারা আকু থেকে বেরিয়ে গেছে।

সদস্য দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আকু আমদানি বিল পরিশোধ করে থাকে। আকু বিল পরিশোধের পর দেশের রিজার্ভ নামবে ২৯ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে।

আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী- আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরও ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বাদ দিতে হবে। তাহলে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৪ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, বৈশ্বিক মুদ্রাবাজারে স্বস্তি ফেরাতে আমদানি দায় কমানোর উদ্যোগসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবুও সংকট কাটছে না। ডলার বিক্রয়সহ অন্য খাতে ব্যয় কমাতে না পারলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়বেই। এসব কারণে অর্থনীতিতে সংকট কাটছে না।

এদিকে, মঙ্গলবারও (২ মে) বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে রিজার্ভ থেকে ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ বাংক। গত সপ্তাহে ডলারের দাম ছিল ১০৩ টাকা।

আইএমফকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী- আগামী জুনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম ১০৬ টাকা নির্ধারণ করতে পারে। রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের মধ্যে ব্যবধান দুই টাকায় নেমে আসতে পারে। যেটি আন্তর্জাতিক মানদন্ড হিসেবে বিবেচিত।

এতদিন প্রবাসী আয়ে (রেমিট্যান্স) ডলারের দাম ছিল ১০৭ টাকা। আর রপ্তানি আয়ে ছিল ১০৫ টাকা। এখন থেকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে আবারও ডলারের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবিবি ও বাফেদা। রোববার (৩০ এপ্রিল) এবিবি ও বাফেদার ভার্চুয়াল সভায় ডলারের দাম আরেক দফা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রতি ডলারে দাম পাবেন ১০৮ টাকা, যেটা আগে ছিল ১০৭ টাকা। একইভাবে রপ্তানিকারকরা রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম পাবেন ১০৬ টাকা, যা আগে ১০৫ টাকা ছিল।

নতুন এ সিদ্ধান্ত সোমবার (১ মে) থেকেই কার্যকর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাফেদার চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আফজাল করিম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, পর্যাপ্ত রিজার্ভ রয়েছে দেশে, যা দিয়ে পাঁচ মাসের বেশি আমদানি বিল পরিশোধ করা যাবে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদন্ড তিন মাস। তবে দেশের মধ্যে ডলারের সংকট তৈরি হয়েছে, ডলার সাশ্রয়ে নীতি অবলম্বন করায় আমদানি বিলও কমে এসেছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭