ইনসাইড থট

স্ববিরোধীতা এবং অসৎ সাংবাদিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত মাহফুজ আনাম


প্রকাশ: 04/05/2023


Thumbnail

অনেক দিন পর টেলিভিশনে মুন্নি সাহা, মাহফুজ আনামসহ কয়েকজনের একটি পুরনো সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে আলাপ-আলোচনাটি দেখলাম। প্রসঙ্গ মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে আলোচনায় মাহফুজ আনমের বক্তৃতা। মাহফুজ আনাম মুখে গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়ে দেন, স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়ে দেন এবং আর্মি শাসন চান না। কিন্তু কাজ করেন ঠিক তার উল্টো। এই মাহফুজ আনাম নিজেই মুন্নি সাহার সামনে স্বীকার করেছেন যে, ডিজিএফআই-এর দেয়া রিপোর্টটি ভেরিফাই না করে ছাপানো একজন সম্পাদক হিসেবে আমার ভুল ছিল। উনার মত একজন বিজ্ঞ সম্পাদক এরকম কথা বলতে পারে আমি চিন্তাই করতে পারি না। কোনো মন্ত্রী বা এমপির কোন ভুল পেলেই তাঁরা কেন পদত্যাগ করেন না বলে হৈ হৈ পড়ে যায় তাদের পত্রিকায়। তাহলে আমি মাহফুজ আনামকে বলতে চাই, আপনি কেন পদত্যাগ করছেন না? এমন কথা বলার আগে তার পদত্যাগ করা উচিত ছিল। কিন্তু তিনি এখনও পদত্যাগ করেননি। এখনও তিনি মিথ্যাকে সাথী করে চলেছেন। এরা হলেন চরিত্রহীন সাংবাদিক, চরিত্রহীন সম্পাদক। কারণ হচ্ছে, তারা বিদেশ থেকে যে টাকা পায় সেই টাকা হালাল করতে যা ইচ্ছা তাই সংবাদ তৈরি করে। এরকম অনেক উদাহরণ আমি দিতে পারব। জনগণ চাইলে যাচাই করতে পারে।

আমি যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ছিলাম, আমাকে নিয়েও তারা কম লিখালেখি করেনি। কারণ আমি কখনোই তাদের আদর্শের সাথে একমত ছিলাম না। সিরাজুল হক তার আত্মজীবনীমূলক বইয়ে লিখেছেন, টাকার জন্য সাংবাদিকরা সত্যিকারের বেশ্যা হয়ে যায় এবং আমি এই কথা গাফফার চৌধুরীকেও বললাম। গাফফার চৌধুরী হেসে বললেন, এটা বুঝতে আপনার এতকাল সময় লাগলো! সুতরাং, মাহফুজ আনাম এবং মতিউর রহমান তারা টাকার কাছে বিক্রি। টাকার জন্য তারা যা খুশি সংবাদ প্রকাশ করে। মিথ্যা সংবাদ দিয়ে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করে।

বাংলাদেশে বর্তমানে একটি পত্রিকার চরিত্র দু’টো জিনিসের উপর নির্ভর করে। একটি হচ্ছে মালিকের উপর। বর্তমান সময়ে বেশীরভাগ গণমাধ্যমের মালিক হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। ফলে তাদের স্বার্থের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা কারোও থাকেনা। দ্বিতীয়ত, পত্রিকার সম্পাদক। তাদের উপরও অনেকখানি নির্ভর করে পত্রিকার চরিত্র। এই ক্ষেত্রে মাহফুজ আনাম হচ্ছেন সমসাময়িক সময়ে সাংবাদিক মহলে সবচেয়ে ধূর্ত। তিনি বললেন তার সম্পাদক জীবনে এটি একটি ভুল ছিল। কিন্তু এটা তো সামান্য ভুল নয়, তার বলা উচিত ছিল এটা তার জীবনে একটা কলঙ্ক এবং এই কলঙ্ক নিয়ে তিনি যদি পদত্যাগ করতেন তাহলে বোঝা যেত যে তিনি শুধু মুখে নয়, কাজেও নীতির সাথে আপোষ করেন না। কিন্তু তিনি সেটা করেননি। কারণ, তার বিভিন্ন জায়গায় এজেন্ট আছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা যেমন টাকা পায়। তেমনি বিভিন্ন জায়গায় তারাও টাকা দিয়ে এজেন্ট রাখে তাদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য।

মাহফুজ আনাম এবং প্রথম আলোর মতিউর রহমানের সাথে যদি তুলনা করা হয় তাহলে আমি মনে করি মতিউর রহমানের চেয়ে অনেক বেশি ধূর্ত মাহফুজ আনাম। তিনি মুখে অনেক মিষ্টি কথা বলেন। এক-এগারোর সময় আমি মাহফুজ আনামের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল। আমি জানি যে তার আর্মিদের সাথে সম্পর্ক আছে। তাই সেই সময় একটি বিষয়ে আমি তার সাথে আলাপ করতে গিয়েছিলেম। প্রায় এক ঘণ্টা তার সাথে আমার আলাপ হয়েছে এবং অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে তিনি আমার সাথে কথা বলেছেন। সেই আলাপে কোন ভেজাল ছিল না। তিনি প্রত্যেকটি জিনিস যেটি আমার দরকার ছিল সেটি আমাকে জানানোর চেষ্টা করেছেন। আমি তার ভেতর তখন কোন অসৎ উদ্দেশ্য দেখিনি। কিন্তু ঠিক পরদিনই সেই লোকের রুপ সম্পূর্ণ ভিন্ন। মাহফুজ আনামের কপটতা ভণ্ডামি ও মিথ্যাচারিতার স্বভাব বহু পুরনো। আমার মনে হয় তিনি বাংলাদেশে স্ববিরোধীতার জনক। সংবাদপত্র জগতে স্ববিরোধীতা এবং অসৎ সাংবাদিকতার দৃষ্টান্ত হিসেবে তিনি অমর হয়ে থাকবেন।

আপনারা ১/১১ এনেছেন। ১/১১কে স্থায়ী করার ষড়যন্ত্র করেছেন।  আবার আপনিই বলেন যে, আপনি সামরিক শাসন সমর্থন করেন না। শিক্ষিত মানুষ হয়ে এতটা নির্লজ্জ কথা আপনারা কিভাবে বলেন সেটা আমার বোধগম্য নয়। আপনাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনাদের আসল চরিত্র জনগণ জেনে গেছে। জনগণকে বোকা বানানো এখন আর এত সহজ নয়। তাই জনাব মাহফুজ আনাম, আপনাকে আমি অনুরোধ করবো সৎ পথে আসুন, সত্যের পথে আসুন। সবাইকেই একদিন পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হবে। কলঙ্ক নিয়ে কেউই পৃথিবী ত্যাগ করতে চাইবে না, আপনিও চাইবেন না। তাই সময় থাকতে কলঙ্ক পুরোপুরি না হলেও যতটুকু সম্ভব কমানোয় ব্যস্ত হয়ে পড়ুন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭