ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব নেবে না আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 05/05/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি আসবে কি আসবে না সেটি একান্তই বিএনপির দলীয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ কোনো হস্তক্ষেপ করবে না—এমনটি বলেছে আওয়ামী লীগ কূটনীতিকদের। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সংলাপে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার গুরুত্ব পায়। আর এই আলোচনায় সরকার আগামী নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ করার জন্য যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তার একটি ফিরিস্তি তুলে ধরে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাফ জানিয়ে দেন যে কোনো রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আনার না আনার দায়িত্ব বর্তমান সরকার গ্রহণ করবে না। এটি ওই দলের দলীয় সিদ্ধান্ত। একটি দলের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না বলেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ মার্কিন অংশীদারিত্ব সংলাপে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ব্যাপকভাবে প্রাধান্য পায় এবং সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত যে সমস্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেছে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করে। বিশেষত নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার সরকারি অঙ্গীকার, অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার এই বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। 

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে রূপ পরিকল্পনা করেছে তাতে স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে যে নির্বাচনকালীন সরকার হবে সীমিত এবং রুটিন কাজের মধ্যে দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনকালীন সময়ে যারা সরকারের মন্ত্রী থাকবেন (প্রধানমন্ত্রীসহ) তারা কোনো নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পর মুহূর্ত থেকে। পাশাপাশি এই সময় যদি তারা কোনো নির্বাচনী প্রচারণা অংশগ্রহণ করে তাহলে সেক্ষেত্রে তারা সরকারি কোনো প্রটোকল গ্রহণ করবেন না। এমপিরা যেন নির্বাচনে বাড়তি কোনো প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেটিও নিশ্চিত করা হবে। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন সক্রিয় এবং স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য একটি আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। 

নির্বাচনের আগেই এই আইনটি চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদের সবাইকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেয়ার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে নির্বাচনের অন্যতম একটি বড় ইস্যু হল বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। কিন্তু এই দাবি অগ্রহণযোগ্য বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ বলছে যে নির্বাচন হতে হবে বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও একইভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ করা না করা তাদের দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু করণীয় নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে যে নির্বাচনের আগে বিএনপি সাথে সংলাপ হবে কিনা। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ভয়েস অব আমেরিকার সাক্ষাৎকারে সংলাপের সম্ভাবনাকে সরাসরি নাকচ করে না দিলেও সেই সম্ভাবনা যে ক্ষীণ্ন তা স্পষ্ট করেছেন। তিনি অতীতের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন এবং বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও ইত্যাদির বণর্ণা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন যে তাদের সাথে সংলাপ করতে গেলে পোড়া লাশের গন্ধ পাওয়া যায়। স্পষ্টতই বিএনপি যদি নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত না আসে তাহলে তাদের বাদ দিয়ে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে এগুচ্ছে আওয়ামী লীগ। সেই বার্তাটি কূটনীতিকদের আওয়ামী লীগ এখন আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়া শুরু করেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭