ইনসাইড বাংলাদেশ

নিষিদ্ধকালে সমুদ্রে মৎস্য আহরণ বন্ধে মনিটরিং জোরদার করতে হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী


প্রকাশ: 11/05/2023


Thumbnail

বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় নিষিদ্ধকালে মৎস্য আহরণ বন্ধে মনিটরিং জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
 
বৃহস্পতিবার (১১ মে) সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সকল প্রকার মৎস্য নৌযান দিয়ে যেকোন প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রস্তুতিমূলক সভায় নিষিদ্ধকাল বাস্তবায়নে সম্পৃক্তদের এ নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। সভায় মন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন।

এ বিষয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, সমুদ্রগামী সকল প্রকার মৎস্য নৌযান ট্র্যাকিং এর আওতায় আনা হচ্ছে। নিষিদ্ধকালে আমাদের সমুদ্রসীমায় কোনভাবেই যেন বিদেশি নৌযান প্রবেশ করে মাছ ধরতে না পারে সে বিষয়ে  ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে  বাংলাদেশের প্রায় সমপরিমাণ জলসীমা অর্জিত হয়েছে। এ জলসীমায় পূর্বের চেয়ে গতবছর নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, র‌্যাবসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকাল বাস্তবায়নে অনেক সাফল্য দেখিয়েছে। এ সাফল্য এবারও ধরে রাখতে হবে। তবে কখনো কখনো দুর্বৃত্তরা বেপরোয়া হয়ে উঠে, এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।  

মন্ত্রী আরও বলেন, মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন এলাকায় বরফকল বন্ধ রাখা গেলে এবং কঠোরভাবে বাজার তদারকি করতে পারলে নিষিদ্ধ সময়ে মৎস্য আহরণ বন্ধ করা যাবে। এ জন্য সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা, বাজার ও বরফকল কঠোর মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে হবে। 

তিনি আরও যোগ করেন, সামুদ্রিক জলসীমায় ৬৫ দিন মৎস্য আহরণ বন্ধ রাখলে সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সমুদ্রে মাছ বড় হলে মৎস্যজীবীরাই লাভবান হবেন। সমুদ্রগামী জেলেরাই এ মাছ আহরণ করবে। ফলে তাদের স্বার্থেই নিষিদ্ধকালে মৎস্য আহরণে তাদের নিবৃত্ত করতে হবে। মাছের উৎপাদন বাড়লে দেশের মানুষের মাছের চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। খাবারের একটি বড় যোগান আসবে এ মাছ থেকে। তাই মাছ নিধন করলে খাবারের যোগান নষ্ট হবে। মৎস্য খাতে সম্পৃক্ত জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ব্যাহত হবে। এজন্য দেশের মৎস্য খাতকে সম্মিলিতভাবে পরিচর্যা করতে হবে।

শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, নিষিদ্ধকাল বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধিদেরও সম্পৃক্ত করা হবে। তাদের মাধ্যমে এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে। সমুদ্রে মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকাকালে সে সব এলাকার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের শ্রমিকসহ অন্যান্যদের সরকারি সহায়তার আওতায় আনার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

৬৫ দিন সমুদ্রে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকালে মৎস্য অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি তৎপর থাকার জন্য এ সময় নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল, আব্দুল কাইয়ূম ও মো. তোফাজ্জেল হোসেন, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (ব্লু ইকোনমি) ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশালের বিভাগীয় কমিশনারগণ, সমুদ্র উপকূলীয় ১৪ জেলার জেলা প্রশাসকগণ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, র‌্যাব, বন বিভাগ এবং মৎস্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ, মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন ও মৎস্যজীবী সমিতির প্রতিনিধিগণ সভায় অংশগ্রহণ করেন। 

গতবছরের ন্যায় এবারও বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন সকল প্রকার মৎস্য নৌযান কর্তৃক যে কোন প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ থাকবে। গতবছর ২৪ এপ্রিল সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০২০ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। উপকূলীয় বিভাগ চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনার ১৪ টি জেলার ৬৭ টি উপজেলা ও চট্টগ্রাম মহানগরে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধের এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। নিষিদ্ধকাল বাস্তবায়নকালে ৩ লাখ ১১ হাজার ৬২ জন সমুদ্রগামী জেলের জন্য ১ম ধাপে ১৭ হাজার ৪১৯ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এ সময় ভিজিএফ-এর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য সরকার উপকরণ সহায়তা প্রদান করবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭