ইনসাইড বাংলাদেশ

কি কারণে আমাদের স্যাংশন দিল: প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর


প্রকাশ: 15/05/2023


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কি কারণে আমাদেরকে স্যাংশন দিল। যাদেরকে দিয়ে আমরা সন্ত্রাস দূর করলাম। যখন সারাবিশ্ব জঙ্গিবাদে জর্জরিত, সবাই আতঙ্কগ্রস্থ। সেই সময়ে আমাদের দেশে একটা ঘটনা ঘটেছে ‘হলি আর্টিজান’। অনেকেই বলেছিল, এটা বাংলাদেশ একা সামাল দিতে পারবে না। কিন্তু আমাদেরতো ২৪ ঘন্টাও লাগেনি। তার মধ্যেই আমরা সেটা উদ্ধার করলাম, সেখান থেকে আমরা জীবিত মানুষ উদ্ধার করলাম। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের উপর আমরা আঘাত হানলাম। তারপর থেকে বাংলাদেশে এমন বড় ঘটনা আর ঘটতে পারেনি। কারণ আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এমনভাবে নজরদারি করেছে যে, তারা আর কোনো ঘটনা ঘটাতে পারেনি। এরপরে স্যাংশন কিসের জন্য, সেটি হলো আমার প্রশ্ন।’           

তিনি বলেন, ‘আমি এ কারণে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অর্থ মন্ত্রণালয়কে বলে দিয়েছি, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে বলে দিয়েছি, আমাদের যারা স্যাংশন দিয়েছে- তাদের কাছ থেকে কোনো কেনাকাটা আমরা করব না। এতে ভয়ের কি আছে। আমরাতো কারো উপর এখন নির্ভরশীল নই। আমাদের যা প্রয়োজন তা আমরা উৎপাদন করতে পারি। আমাদের এতো ভয় কিসের?’

সোমবার (১৫ মে) গণভবনে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি মনে করে পদ্মা সেতুর পেইন্টিং নিয়ে গেলেন? বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাসের হাতে পদ্মা সেতুর পেইন্টিং হস্তান্তরের পর যে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল এবং তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে আপনার মনে কি প্রতিক্রিয়া হয়েছিল? সম্প্রতি ডলার সঙ্কট নিয়ে আমাদের দেশে এখনও আলোচনা হচ্ছে, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, জাপান সফরের পর এই সঙ্কটটি নিরসন হতে পারে বলে আমরা কি আশা করতে পারি? এছাড়া আপনি ফিরে আসার পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর একটা স্যাংশন দেওয়ার ব্যাপারে আপনি এসব দেশ থেকে সব ধরনের কেনাকাটা বন্ধ করে দেওয়ার বক্তব্য দিয়েছেন, সেইক্ষেত্রে আমরা আন্তর্জাতিকভাবে ভীত হবার কোনো কারণ আছে কিনা? - সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।    

প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘পেইন্টিং আমি এ কারণে নিয়ে গেছি, চমৎকার পেইন্টিং করে বাংলাদেশ, সেইটা জানানোর জন্য। তাদের কারো যদি পেইন্টিংয়ের প্রয়োজন হয়, আমাদের কাছে চাইতে পারবে। পদ্মা সেতুর পেইন্টিংয়ের বিষয়বস্তু এইটা ছিল, বাংলাদেশের মানুষের পেইন্টিংয়ের সবচেয়ে ভালোবাসার জায়গাটা হচ্ছে পদ্মা সেতু। এছাড়া আমার অন্য কোনো উদ্দেশ্য নাই।’

তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় প্রশ্নটি হচ্ছে ডলার সঙ্কট। এটাতো বিশ্বব্যাপী, শুধু বাংলাদেশে নয়। প্রথম হলো করোনা অতিমারি, তারপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। সেই যুদ্ধের সাথে হচ্ছে স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন। যার ফলে আজকে সারাবিশ্বে মুদ্রাস্ফীতি। দ্বিতীয় হচ্ছে পরিবহন, পরিচলন ব্যয় বেড়ে গেছে। যার ফলে ডলার সঙ্কট সারাবিশ্বেই সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘করোনা অতিমারির সময় যেটা হয়েছিল আমদানি-রপ্তানি বন্ধ। বিদেশে যাতায়াত বন্ধ। সবকিছু বন্ধ থাকাতে খরচও আমাদের কমেছিল। শুধু ভ্যাকসিন কিনতেই যা খরচ হয়েছিল, বাকি আমরা সব ভালোভাবেই রিজার্ভ রাখতে পেরেছিলাম। এরপর যখন এটা উন্মুক্ত হলো, তখন খুব স্বাভাবিকভাবেই ডলার খরচ হচ্ছে এবং এটা হবেই। তার চেয়েও বড় কথা, আমরা মানুষকে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিচ্ছি, গ্যাস দিচ্ছি। এখানে উন্নয়ন হচ্ছে, বিনিয়োগ হচ্ছে। কাজেই ডলারের উপরে চাপ পড়বে। ৯৬ সালেও আমরা ক্ষতায় এসেছিলাম, তখন আমাদের রিজার্ভ কত ছিল। আমাদের যেটা থাকা দরকার, আমাদের যদি খাদ্য ঘাটতি হয়, অন্তত তিন মাসের খাদ্য কেনার রিজার্ভ যেন আমাদের হাতে থাকে।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রিজার্ভ নিয়ে বলতে বলতে সবার মাথায় এটা ঢুকে গেছে। আমাদের রিজার্ভ এখনও যা আছে তাতে অন্তত এটুকু বলতে পারি, আমাদের এমন কোনো সংকট এভাবে নাই। তবে আমরা সব সময় রিজার্ভ ধরে রাখারই চেষ্টা করি। এখন সবার রিজার্ভের দিকেই নজর। রিজার্ভ নিয়েই এখন সবাই কথা বলে। কারও উপর নির্ভর করবে না বাংলাদেশ। যা রিজার্ভ আছে তাতে আগামীতে সংকট হবে না।’  

তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালে যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ ছিল শূন্য দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার, এখন ৩১ বিলিয়ন ডলার আছে। দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।’   



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭