প্রকাশ: 16/05/2023
গ্রীষ্মের এই দিনে লক্ষ্মীপুর জেলায় তালের শাঁস খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। তাই সবার হাতে পোঁছে যায় কঁচি তালের শাঁস। সদর উপজেলার পোদ্দারহাট, পাটওয়ারি হাট, মান্দারী বাজার, জকসিন বাজার, চন্দ্রগঞ্জ বাজার, দাশেরহাট, দিগুলি বাজার, চর লরেন্স বাজার, চর আলেকজান্ডার বাজার, তোরাবগঞ্জ বাজার, মীরগঞ্জ বাজার, কালিবাজার, পালেরহাট, চরবংশী বাজার, রায়পুর পৌরসভা বাজারেও লক্ষ্মীপুর পৌরসভা বাজার গিয়ে দেখা যায়, তালের শাঁস বর্তমানে এর চাহিদা অনেক বেড়েছে। বিক্রেতা শাঁস কেটে সারতে পারছে না, ক্রেতারা দাড়িয়ে রয়েছে শাঁস নিতে।
লক্ষ্য
করা গেছে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও রায়পুর উপজেলার
গৃহস্তদের গাছের তালের শাঁস যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী
জেলাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। শিশু সহ সকল
বয়সী লোকের মধ্যে এই তালের শাঁসের
কদর দিন দিন বেড়েই
চলেছে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই তাল গাছ রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর
সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়ন চৌধুরী কাছারি বাজারের তাল শাঁস বিক্রেতা
খোকন মেম্বার পোল্ট্রি ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম ও শ্যামল মজুমদার বাংলা ইনসাইডারকে জানান, প্রতি বছরই এ সময়ে
তালের শাঁস বিক্রি করে
সংসার চালান। গ্রাম অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে তাল
ক্রয় করে গাছ থেকে
পেরে এনে শাঁস বিক্রি
করেন। তবে গাছ ওঠে,
বাঁধা ধরে পাড়া সবচেয়ে
কষ্টকর। বৈশাখ থেকে জৈষ্ঠ্যের অর্ধেক
পর্যন্ত এ দেড় মাস
চলবে তালের শাঁস বিক্রির কাজ।
প্রতিদিন প্রায় ৩শ থেকে ৪শ
শাঁস বিক্রি করা যায়।
অনেকেই
জানান, তালের শাঁস একটি সুস্বাদু
ফল। গরম থেকে এসে
তালের শাঁস খেতে ভালই
লাগে মনটা জুরে যাই।
ফলে এর চাহিদা দিন
দিন বেড়েই চলছে। তবে তাল গাছ
এক পায়ে দাড়িয়ে, সব
গাছ ছাড়িয়ে উকি মারে আকাশে,
কবির সে কবিতার মতো
সারি সারি তাল গাছ
রাস্তার দু'ধারে এমন
দৃশ্য খুব একটা বেশি
চোখে পড়েনা। কালের বিবর্তনে লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকার তাল গাছ দিন
দিন হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় মানুষ
সখ করে বাড়ির পাশে
কিংবা রাস্তার ধারে তালের বীজ
বপন করতো। কিন্তু এখন আর তা
চোখে তেমন পড়ে না।
প্রচন্ড
গরমে স্বস্তি পেতে কাঁচা তালের
কোন জুড়ি নেই ।
তালের শাঁস খাওয়ার জন্য
ছোট-বড় সব বয়সের
মানুষ তালের দোকানে ভিড় জমাচ্ছে। ফলে
তীব্র গরমে প্রতিনিয়ত গ্রামে
বা শহরে সব জায়গায়
কাঁচা তালের শাঁস চাহিদা বাড়ছে
। বাজারে প্রতি পিচ শাঁস বিক্রি
হচ্ছে ১৫ টাকা থেকে
২০ টাকায়।
সরেজমিনে গিয়ে
দেখা যায় লক্ষ্মীপুর সদর
উপজেলার রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি কমলনগর, উপজেলার
বিভিন্ন হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ ও রাস্তার
মোড়ে কাঁচা তালের শাঁস বিক্রি করতে
দেখা গেছে । লক্ষ্মীপুর
সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের পাটোয়ারী হাট তালের
লেপা বিক্রেতা দফেদার রুবেল বলেন , বর্তমান
কাঁচা তাল বিক্রির মৌসুম
চলছে । রামগতি, কমলনগর,
রায়পুর রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন
গ্রাম থেকে কাঁচা
তাল কিনে গ্রামের হাট-
বাজারে , শহরের অলি-গলিতে বিক্রি
করি। তবে বেশি ভাগ
কাঁচা তালের শাঁস কিনতে দেখা
গেছে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের এখন চলছে মধু
মাস। আর এই মধু
মাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হরেক রকমের সুস্বাদু
ফল। এই ফলের তালিকায়
রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল,
লিচু ছাড়াও অন্যতম আরেকটি ভিন্নধর্মী ফল তালের শাঁস।
তাল ফলের নরম অংশটি
খুবই সুস্বাদু। গ্রাম্য ভাষায় এটি “তালের লেপা নামে
বেশি পরিচিত। প্রচন্ড গরমে তালের এই
শাঁসটি শহর কিংবা গ্রামের
মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
বর্তমান
সময়ে শহর থেকে শুরু
করে গ্রামের বিভিন্ন অলি-গলি, পাড়া-মহল্লাতে এই মৌসুমী ফল
তালের লেপা বিক্রি বেড়ে
গেছে। অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ীরা
তাল গাছ থেকে অপরিপক্ত
তাল ফল পাইকারী কিনে
এনে কেটে কেটে বিভিন্ন
দামে বিক্রয় করে থাকে। তবে
নরম অবস্থায় তাল শাঁসের দাম
অনেক বেশি। কিন্তু, দিন যতই যেতে
থাকে এই তাল শাঁস
ততই শক্ত হতে থাকে।
তখন শাঁসের দাম কমতে থাকে
এবং এক সময় তাল
পরিপক্ত হয়ে গেলে তখন
আর এই শাঁস খাওয়া
সম্ভব হয় না।
লক্ষ্মীপুর
জেলার, লক্ষ্মীপুর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি, কমলনগর, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ তালের শাঁস বিক্রি বেড়ে
গেছে। মধু মাসের এ
ফলকে কেউ বলে তালের
শাঁস, কেউ বলে তালের
বিচি কেউ
বলে তালের আটি আবার কেউ
বলে তালের লেপা । গরমের
মধ্যে তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালের শাঁস
অনেক উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে
অনেক গুণাগুণ। তাই জৈষ্ঠ্যের এ
মধু মাসে বাজারে নানা
ফল উঠলেও লক্ষ্মীপুরে
জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তালের
শাঁস।
তালের
ফল এবং বীজ দুইই
বাঙালি খাদ্য। কাঁচা তালের শাঁস খুবই জনপ্রিয়
একটি খাবার। লক্ষ্মীপুর জেলায় তালের
ব্যাপক চাষ হলেও ফলটির
আদি নিবাস আফ্রিকা।
তাল
উদ্ভিদ প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা থেকে গাছকে রক্ষা
ও ভূমির ক্ষয় রোধ করে।
বহুকাল আগে এই দেশে
তার আগমন। তাল গাছ খুবই
ধীরে বাড়ে। দীর্ঘ হয়ে ফল দিতে
সময় নেয় অন্তত আঁট
থেকে দশ বছর। বসন্তের
শেষে ফুল ধরে ফল
হয়। তালের যে বীজও খাওয়া
হয় তা তালশাঁস নামে
বেশি পরিচিত। প্রতিটি তালে দুই থেকে
তিনটি শাঁস হয়। গ্রীষ্মের
সময় কচি অবস্থায় তালের
শাঁস ব্যাপক চাহিদা থাকে গ্রাম থেকে
শহর পর্যন্ত।
গরমে
তালের শাঁস খেলে বিভিন্ন
রোগ থেকে মুক্তি মিলবে।
সেই সঙ্গে বাড়বে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
শুধু গ্রীষ্মকালেই বাজারে কচি তাল দেখতে
পাওয়া যায়। এর নরম
কচি শাঁস খেতে ছোট
বড় সবাই পছন্দ করে।
তালের
শাঁসকে নারিকেলের মতই পুষ্টিকর বলে
বিবেচনা করা হয়। এটি
খেতে খুবই সুস্বাদু। এতে
প্রচুর পরিমাণ পানিও থাকে। যা অনেকটা ডাবের
পানির মতো। এতে প্রচুর
পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, ফাইবার এবং খনিজ উপাদান
থাকে।তাই আমাদের সকলকে এই তালের চারা
রোপণের উৎসাহিত করতে হবে। পরিবেশ
বান্ধব এই গাছটি পরিবেশের
জন্য অতি প্রয়োজন সংশ্লিষ্টরা
মনে করেন।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭