ইনসাইড পলিটিক্স

জাহাঙ্গীরের পরিণতি কি সাদিক আব্দুল্লাহ বরণ করতে চাচ্ছেন?


প্রকাশ: 16/05/2023


Thumbnail

গাজীপুরের পর আওয়ামী লীগের মনোযোগ এখন বরিশালের দিকে। গাজীপুরে যেমন দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল তারা মিটিয়েছে কঠোরভাবে। গতকাল জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কার করে বিদ্রোহ দমনের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ এর প্রকাশ ঘটিয়েছে। ঠিক তেমনি একই ঘটনা বরিশালে ঘটতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

বরিশালের বর্তমান মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহকে এবার আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তার বদলে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে খোকন সেরনিয়াবাতকে। যিনি আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর ছোট ভাই এবং সাদিক আব্দুল্লাহ চাচা। কিন্তু চাচাকে মনোনয়ন দেওয়াটা সাদিক আব্দুল্লাহ পছন্দ করেননি। তিনি এখন খোকন সেরনিয়াবাতকে হারানোর জন্য নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন। তিনি সেখানে হাতপাখা মার্কাকে প্রকাশ্য এবং গোপনে সমর্থন দিচ্ছে—এমন অভিযোগ বরিশালে মুখে মুখে। আর এই কারণেই হাতপাখা আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত এর বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। 

শুধু তাই নয়, বরিশাল আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এখন প্রকাশ্য সংঘাতে রূপ নিয়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নের পর বিভেদ আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হচ্ছে এবং তা সহিংস রূপ ধারণ করেছে। যারা খোকন সেরনিয়াবাত এর পক্ষে মাঠে নামছেন তাদেরকে ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে, মারধর করা হচ্ছে। সাদিক আব্দুল্লাহর লোকজনই এমন করছেন—এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে সর্বত্র। 

গত রোববার আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর তিন কর্মীকে মারধর করে গুরুতর জখম করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে এবং এই অভিযোগের পরপরই পুলিশ এটা নিয়ে অ্যাকশনে যায় এবং ছাত্রলীগের নেতা রইস আহম্মেদ মান্নাকে গ্রেপ্তার করে। এই গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আবার নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি এই ঘটনাকে পরিকল্পিত বলে মনে করেছেন। নগর আওয়ামী লীগ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সাদিক আব্দুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত। বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে এসেছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নিজে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং যদি শেষ পর্যন্ত নগর আওয়ামী লীগ এবং অন্যরা খোকন সেরনিয়াবাতকে সমর্থন না দেন তাহলে গাজীপুরের মতো তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে বরিশালে খোকন সেরনিয়াবাত এর বিরুদ্ধচারণকারীদের একাধিক ধরনের গ্রহণ করার কথা চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। প্রথমত, শেষ পর্যন্ত বরিশালের পরিস্থিতি যদি ভালো না হয় তাহলে সেখানকার কমিটিগুলো বিলুপ্ত করে দেওয়া হতে পারে নির্বাচনের আগে। দ্বিতীয়তঃ সাদিক আব্দুল্লাহ যে খোকন সেরনিয়াবাত এর বিরুদ্ধাচারণ করছেন—এ বিষয়টি যদি প্রমাণিত হয় সেক্ষেত্রে তাকেও কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং এমনকি বহিষ্কারাদেশের মতো শাস্তি দেওয়া হতে পারে বলে একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন। 

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা যেন খোকন সেরনিয়াবাত এর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করে। আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছে যে বরিশাল নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে যারাই কাজ করবে তাদেরকে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি গ্রহণ করা হবে। 

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন যে সিটি নির্বাচনে জয়-পরাজয় মূল বিষয় নয়। মূল বিষয় হল দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলগুলোকে মিটমাট করা এবং নির্বাচনের আগে এমন একটি বার্তা দেওয়া যে দলের বিরোধিতা করলে দল তাকে ছুড়ে ফেলে দেয়। আর এই বার্তাটা দেওয়ার জন্য গাজীপুরের পর বরিশালের দিকে নজর রাখছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। ফলে সাদিক আব্দুল্লাহর রাজনীতির ভবিষ্যতও জাহাঙ্গীরের মধ্য হতে পারে বলে কেউ কেউ শঙ্কা প্রকাশ করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭