ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

নাটকীয় সিদ্ধান্ত আসতে পারে বিএনপিতে


প্রকাশ: 19/05/2023


Thumbnail

নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের সাথে কথা বলছেন তারেক জিয়া। বিএনপি যখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে এবং এই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন রকম কর্মসূচি নতুন করে ঘোষণা করছে, ঠিক সেইসময় নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের মতামত নিচ্ছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া।

একাধিক সূত্র বলছে পালাক্রমে প্রতি রাতে তিনি বিভিন্ন উপজেলার স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে খোলামেলা মতবিনিময় করছেন। আগামী নির্বাচন কিভাবে হওয়া উচিত, নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে বিএনপি'র কি হবে এবং নির্বাচনে যদি অংশগ্রহণ করা হয় তাহলে বিএনপি’র সম্ভাবনা কতটুকু ইত্যাদি বিষয় নিয়েই তিনি কথা বলছেন।

মজার ব্যাপার হল এখন পর্যন্ত তিনি সিলেট, নোয়াখালী, ফেনীর একাধিক উপজেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেছেন, যেখানে বেশিরভাগ তৃণমূলের কর্মীরা আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে অংশগ্রহণ করার কথা বলেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেছে যদি বিএনপি শেষ পর্যন্ত আগামী নির্বাচন ঠেকাতে না পারে তাহলে দল অস্তিত্বের সংকটে পড়বে। তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ এটাও বলেছে যে নির্বাচন ঠেকানোর মত যে নেতৃত্ব এবং আন্দোলনের শক্তি দরকার সে নেতৃত্ব এবং আন্দোলনের শক্তি বিএনপির নেই। সুতরাং বিএনপিকে সবার আগে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। আর শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলার জন্য বিএনপিকে নির্বাচনে যেতে হবে। তারেক জিয়া অবশ্য এসব কোনো বৈঠকেই কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি শুধু শুনেছেন এবং নোট নিয়েছেন।

এই বৈঠকে সিলেটের একজন স্থানীয় বিএনপি নেতা বলেছেন যে, এটাই আওয়ামী লীগের শেষ নির্বাচন। এর পর শেখ হাসিনা আর নির্বাচন করবেন না। তাদের সামনে সুযোগ রয়েছে। এবার যদি বিএনপি নির্বাচন করে তাহলে আন্তর্জাতিক মহল এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে এবং অন্যান্যবারের মতো নির্বাচনে কারচুপিও আওয়ামী লীগ করতে পারবে না। কাজেই এই নির্বাচনে একটি নীরব ভোট বিপ্লব হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ওই নেতা এটিও দাবি করেন যে, বিএনপি’র জনপ্রিয়তা আগের চেয়ে বেড়েছে, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কমেছে। কাজেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত।

ওই উপজেলার একজন নেতা তারেক জিয়াকে বলেছেন যে, আন্দোলন করার বাস্তব পরিস্থিতি এখন আর নেই এরকম আন্দোলন করে সরকারকে ফেলে দেওয়া যাবে না। কাজেই আন্দোলনের চাপ রেখে নির্বাচনে যাওয়াটাই উত্তম।

ফেনীর নেতারাও সরকার বিরোধী আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা বলেছেন। তারা বলেছেন যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করা আমাদের জন্য সম্ভব নাও হতে পারে। কারণ এরকম দাবি আদায় করার জন্য যে পরিমাণ সময় দরকার সে পরিমাণ সময় এখন বিএনপি'র হাতে নেই। তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের ভূমিকারও প্রশংসা করেছেন।

নোয়াখালী থেকে একজন উপজেলা পর্যায়ের নেতা তারেক জিয়াকে অভিযোগ করেছেন যে, যে সমস্ত বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা সূচক কথাবার্তা বলছেন, তারাই আসলে গোপনে সরকারের সাথে আতাত করে এবং এদের কারণেই কোনদিন আন্দোলন সফল হবে না। তারা এই সরকারকে হঠানোর জন্য আগে নেতৃত্বের পরিবর্তনের কথা বলেছেন।

তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে যাবে কি যাবে না সেই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে তারেক জিয়ার উপর নির্ভর করছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, নির্বাচন হলেই বড় ধরনের মনোনয়ন বাণিজ্য হবে এবং নানারকম দরকষাকষি হবে। এই সুযোগটি তারেক কাজে লাগাতে চায়। আর এ কারণেই তিনি নির্বাচনের লক্ষ্যে তৃণমূলের সাথে সংলাপের নাটক করছেন। দেখার বিষয় এই নাটকের ফলাফল শেষ পর্যন্ত কি হয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭