ইনসাইড পলিটিক্স

গুলশান উপনির্বাচন: আলোচনায় আন্দালিব রহমান পার্থ


প্রকাশ: 19/05/2023


Thumbnail

আওয়ামী লীগের এমপি এবং চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যুর কারণে গুলশান-১৭ আসনটি শূন্য ঘোষিত হয়েছে। ইতিমধ্যে আগামী ১২ আগস্টের মধ্যে নির্বাচন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়েছে। নির্বাচন কমিশন খুব শীঘ্রই এই আসনের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর কোনো সংসদ সদস্যের অনাকঙ্খিত মৃত্যু না হলে গুলশান আসনের এই উপনির্বাচনটি জাতীয় সংসদের শেষ উপনির্বাচন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই উপনির্বাচন নানা কারণেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র তিন মাস আগে- এই উপনির্বাচনে অনেক কিছুই নির্ভর করছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই এই উপনির্বাচনে মনোনয়ন লাভের জন্য আগ্রহী। তারা ইতিমধ্যে ছুটাছুটি এবং দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। কিন্তু গুলশানের উপনির্বাচনকে আওয়ামী লীগ একটি মডেল নির্বাচন করতে চায়। এই নির্বাচনের মাধ্যমে যেন সকল রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ উন্মুক্ত হয়, সেই পথ সুগম করতে চায় আওয়ামী লীগ। জয়-পরাজয় বড় কথা নয়, বরং এই নির্বাচনকে একটি মডেল নির্বাচন হিসেবে উপস্থাপন করে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করাই আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগের বাইরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যেন এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, সেজন্যই আওয়ামী লীগ মনোযোগী। 

গুলশানের এই আসনটিতে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ২০ দলীয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আন্দালিব রহমান পার্থ অংশগ্রহণ করেছিলেন। যদিও তিনি বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। তবে ওই নির্বাচনের ফলাফল তিনি মেনে নেননি। কিন্তু ওই নির্বাচনের পর তিনি চুপচাপ বসেও থাকেননি। ঢাকাকেন্দ্রিক একটি কর্মী বাহিনী গড়ে তুলেছেন, সংগঠন গড়ে তুলেছেন। কিছুদিন আগে একটি গণমিছিলের মাধ্যমে আন্দালিব রহমান পার্থ শোডাউনও করেছেন। বেজেপির এই নেতা ২০ দল থেকে বেরিয়ে গিয়ে স্বতন্ত্র অবস্থা গ্রহণ করেছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশগ্রহণ করবেন কি করবেন না- এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণাও দেননি। কাজ করছেন নীরবে, নিভৃতে। 

আওয়ামী লীগ এখন আগামী নির্বাচনের জন্য যে দুটি বিকল্প নিয়ে কাজ করছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে বিএনপিকে বাদ দিয়ে অন্যান্য সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীতায় মাঠে নামানো। আর সেই লক্ষ্যেই একদিকে যেমন ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে কথা বলছে, অন্যদিকে বিভিন্ন ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোকেও নির্বাচনমুখী করা চেষ্টা করছে। সেই চেষ্টার অংশ হিসেবেই আন্দালিব রহমান পার্থ গুলশানের উপনির্বাচনে যেন প্রার্থী হতে পারেন, সেজন্য চেষ্টা চলছে। 

পার্থের দল ছোট। কিন্তু পার্থের একটি জাতীয় ইমেজ তৈরি হয়েছে। তিনি বিশেষত তরুণদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। যে ক’জন তরুণ নেতা বাংলাদেশের রাজনীতিতে সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছিলেন, তার মধ্যে পার্থই এখন পর্যন্ত টিকে আছেন। একজন ভালো বাগ্মী হিসেবে এবং বিভিন্ন হাস্যরসাত্মক কথার মধ্য দিয়ে তিনি তরুণদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছেন। আর ২০১৮’র পর থেকে নীরবে, নিভৃতে তিনি সংগঠনও গুছিয়ে ফেলেছেন। ঢাকার গুলশানে এখন আওয়ামী লীগের পরপরই পার্থের বিজেপির সংগঠনের শক্তি রয়েছে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। এই বিবেচনা থেকে আগামী নির্বাচনে পার্থ গুলশান উপনির্বাচনের প্রার্থী হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে তার যদি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়, সেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলেই অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন। 

গুলশানের উপনির্বাচনটি নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ এবং ঢাকার অভিজাত এলাকায় এই নির্বাচনের দিকে নজর থাকবে আন্তর্জাতিক মহলের। বিশেষত বিদেশি কুটনীতিকরা এই নির্বাচনকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। কাজেই আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ উৎসবমুখর করে ফেলতে চায়। আর সেরকম করার ক্ষেত্রে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে আন্দালিব রহমান পার্থ ভালো একজন প্রার্থী- যিনি এই নির্বাচনকে জমিয়ে ফেলতে পারবেন। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭