ইনসাইড পলিটিক্স

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মির্জা আজম-এসএম কামালের কারিশমা


প্রকাশ: 20/05/2023


Thumbnail

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সমাগত। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় এখন গাজীপুরে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। যদিও প্রতিদিনই গাজীপুরে বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের মা'র পক্ষে বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম নানা রকম অভিযোগ করছেন। কিন্তু এসব অভিযোগকে পাত্তা দিচ্ছেন না। বরং বিভিন্ন প্রার্থীর প্রচারণায় গাজীপুর সরগরম। 

গাজীপুরে নির্বাচনের ফলাফল কি হবে তা বোঝা যাবে ২৫ মে। কিন্তু গাজীপুরের রাজনীতিতে এই নির্বাচন একটি বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া ফেলেছে। এই নির্বাচনে যেই জিতুক যেই হারুক না কেন এই নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়েছে, সংঘটিত হয়েছে এবং নিজেদের শত্রুদেরকে চিহ্নিত করতে পেরেছে। এটিই আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্জন। আর এটি সম্ভব হয়েছে আওয়ামী লীগের দুই সাংগঠনিক সম্পাদকের কারিশমার কারণে। এরা হলেন মির্জা আজম এমপি এবং এসএম কামাল হোসেন। এই দুই সাংগঠনিক সম্পাদক শুরু থেকেই গাজীপুর নির্বাচনের ব্যাপারে কাজ করছেন। তবে যেনতেন প্রকারে দলীয় প্রার্থীকে নির্বাচিত করা নয় বরং আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং ভবিষ্যতে যেন কোনো অপশক্তি আওয়ামী লীগের ভেতর ঢুকে আওয়ামী লীগকে ক্ষতিগ্রস্থ না করতে পারে সেটি নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্যে তারা সফল হয়েছেন।

মির্জা আজম ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বে। সেই হিসেবে গাজীপুরের সাংগঠনিক দেখভালের দায়িত্ব তার। তিনি ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সংগঠনকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শুধু গাজীপুর নয়, ঢাকা বিভাগের সব জায়গায় তিনি তৃণমূল থেকে সংগঠনকে গড়ে তোলার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই গাজীপুরে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদেরকে সামনে নিয়ে আসা হয় এবং তাদের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়। যার ফল এখন ভোগ করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লাহ। এই ওয়ার্ড পর্যায় কমিটিগুলো যদি না হতো তাহলে গাজীপুরে আওয়ামী লীগে যে বড় ধরনের একটি বিভক্তি হতো তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু আজমত উল্লাহকে এবার যখন প্রার্থী করা হয় তখন দেখা যায় যে মূল ধারার আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো বিভাজন নেই, তারা ঐক্যবদ্ধ। আর ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রধান কারণ হলো শক্তিশালী কমিটি। 

গাজীপুরের রাজনীতিতে আগে যেমন জাহাঙ্গীর আলমের একটি আলাদা ধারা ছিলো মির্জা আজম তা ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিলেন। আর এবারের সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে এই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখে নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করেন এসএম কামাল। তিনি আওয়ামী লীগের যে সমস্ত ত্যাগী নেতাকর্মী রয়েছেন তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার নির্দেশ দেন। নির্বাচন বিষয়ে এক ধরনের বিশেষজ্ঞতা অর্জন করেছেন এসএম কামাল। তিনি বিভিন্ন এলাকার নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি এই সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন নির্বাচনী প্রচারণায়। আওয়ামী লীগের জয়ের সহজ সূত্রটি তিনি জানেন। এই সূত্রটি হলো আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তাহলে কোনো শক্তি তাকে পরাজিত করতে পারে না। আর গত কয়েকদিন ধরে অবিরত গাজীপুরে গিয়ে তিনি আওয়ামী লীগকে উদ্বুদ্ধ করছেন, উজ্জীবিত করছেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে গাজীপুরে যে বিভাজন এবং বিরুদ্ধ মত ছিলো তা কেটে গেছে। এখন পুরো দল ঐক্যবদ্ধ। আর এটির ফলাফল হবে সুদূরপ্রসারী। নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ গাজীপুরের জন্য একটি বড় সম্পদে পরিণত হচ্ছে। আর এর কৃতিত্ব অবশ্যই এই দুই সাংগঠনিক সম্পাদক পেতেই পারেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭