ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনকালীন সরকার: আওয়ামী লীগের পাঁচ শর্ত


প্রকাশ: 20/05/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে—এ নিয়ে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে এখন রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে। এরকম পরিস্থিতির মধ্যে কূটনীতিকরা একটি সমঝোতার চেষ্টা করছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার না এবং দলীয় সরকারও না, মাঝামাঝি একটি অবস্থানে আসার জন্য তারা দুই পক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা বলছেন। এর মধ্যে নির্বাচনকালীন সরকারের একটি ফর্মুলাও তারা খুঁজে বের করেছেন যা সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই। আর এই নির্বাচনকালীন সরকার কাঠামো নিয়ে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির সঙ্গে কূটনীতিকরা কথা বলছেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে পাঁচটি শর্ত দিয়েছে। এই পাঁচটি শর্তের আওতায় নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হতে পারে এবং তাতে আওয়ামী লীগের সম্মতি থাকবে বলেও জানা গেছে। যে পাঁচটি শর্ত নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে; 

১. প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে: নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অবস্থান হলো প্রধানমন্ত্রীকে বাদ দেয়া যাবেনা। সংসদ নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী সরকারপ্রধান থাকবে। এই জায়গায় আওয়ামী লীগ কোনরকম সমঝোতা এবং ছাড় দেবেনা। কূটনীতিকরা অবশ্য প্রধানমন্ত্রীকে  প্রধানমন্ত্রীকে রেখেই নির্বাচনী সমঝোতার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকলে তারা নির্বাচন করবেন না এমন অবস্থানে অনড় থাকার কথা বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে।

২. সংসদ বহাল থাকবে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন যে ওয়েস্টমিনিস্টার ডেমোক্রেসি স্টাইলে বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্র। কাজেই ব্রিটেনে যেভাবে নির্বাচন হয় ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের নির্বাচন হবে। অর্থাৎ নির্বাচনকালীন সময়ে কোনো অবস্থাতেই সংসদ ভেঙে দেওয়া যাবে না। অতীতে যেটা হতো সংসদ ভেঙে দেয়া হতো তারপর নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ গঠন করা হতো। কিন্তু '৭২ এর সংবিধান পুনঃস্থাপিত হওয়ার পর এখন সংসদ ভাঙার রীতি নেই। বরং নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেয়ার মাধ্যমে পূর্বের সংসদ ভেঙে যায়। এটির প্রধান প্রধান কারণ হলো এর ফলে কোনো সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হয় না এবং কোনো তৃতীয় পক্ষ অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারে না। আওয়ামী লীগ কোনো অবস্থায় এই জায়গা থেকে সরে আসবে না বলে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে। 

৩. উপদেষ্টা নিয়োগ: নির্বাচনকালীন সরকারের উপদেষ্টা নিয়োগের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ইতিবাচক। তবে যারা বিতর্কিত, যারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলে, বিভক্তিকরণ করতে চায়, নিরপেক্ষ নয় বরং একটি বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায় এ ধরনের ক্রিয়াশীল সুশীল বুদ্ধিজীবীদেরকে আওয়ামী লীগ কোন অবস্থাতেই নির্বাচনকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে রাখবেনা। 

৪. বিদেশী দূতাবাসের দেশীয় পর্যবেক্ষক নয়: নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের একটি সুস্পষ্ট অবস্থান হলো যে নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদেরকে অনুমতি দেওয়া হবে। তবে বিদেশী পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে দেশি পর্যবেক্ষকদের গ্রহণ করা হবে না। যে সমস্ত বিদেশী দূতাবাস পর্যবেক্ষক নিয়োগ করবে তাদেরকে বিদেশি পর্যবেক্ষকই দিতে হবে, দেশি পর্যবেক্ষকরা বিদেশি দূতাবাসের ছায়ায় আসতে পারবেন না। 

৫. নির্বাচন আইনের কঠোর বাস্তবায়ন: নির্বাচন কমিশন নির্বাচন আইনের কঠোর বাস্তবায়ন করতে চায়। সেনা মোতায়নসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার যে ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে এবং নির্বাচন আইনে রয়েছে তারই বাস্তবায়ন করতে চায়। নতুন করে আইনের কোনো ব্যাঘাত ঘটাতে চায় না। 

এই পাঁচটি শর্ত বহাল রেখে নির্বাচনের ব্যাপারে যেকোনো সমঝোতায় যেতে রাজি আওয়ামী লীগ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭