ইনসাইড বাংলাদেশ

সহিংস রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র কি তাহলে সবুজ সংকেত দিলো


প্রকাশ: 22/05/2023


Thumbnail

গতকাল হঠাৎ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের চলাফেরার ব্যাপারে সতর্কবার্তা জারি করেছে। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস থেকে ‘ডেমোনস্ট্রেশন অ্যালার্ট’ শিরোনামে প্রচারিত হালনাগাদ ভ্রমণ সতর্কবার্তায় এই পরামর্শ দেয়া হয়। এতে বলা হয়েছে মার্কিন নাগরিকদের জন্য জারি করা এই সতর্কবার্তা ঢাকা এবং অন্যান্য শহরগুলো জন্য প্রযোজ্য হবে। মার্কিন দূতাবাস থেকে এই সতর্কবার্তায় মার্কিন নাগরিকদের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে তারা যেন বাংলাদেশের আগামী সাধারণ  নির্বাচনের আগে চলাফেরার ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করেন। ওই বার্তায় বলা হয় যে আগামী সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে বা ওই সময় অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ওই নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলের সমাবেশ, নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসবে রাজনৈতিক সমাবেশ এবং বিক্ষোভের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে পারে। তাই সম্ভাব্য এই সব পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের আগাম সতর্কবার্তা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

বার্তায় এটিও বলা হয়েছে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ গুলো যেকোনো সময় সংঘাতময় হয়ে উঠতে পারে। এগুলো মুহূর্তের মধ্যে সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। এটা মার্কিন নাগরিকদের মনে রাখা উচিত। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন নাগরিকদের বড় সমাবেশ ও বিক্ষোভ এর স্থান গুলো এড়িয়ে চলতে হবে। যেকোনো বড় সমাবেশ এর আশেপাশে যাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। মার্কিন নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করতে হবে বলেও ওই সতর্কবার্তা বলা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতা দৃশ্যমান নয়। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক কর্মসূচি চালু আছে। এই অবস্থায় হঠাৎ করে যুক্তরাষ্ট্র কেন সতর্কবার্তা ঘোষণা করলো এই নিয়ে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক অঙ্গনেও প্রশ্ন উঠেছে। 

বিএনপি এখন নতুন করে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করেছে এবং এই আন্দোলনকে আস্তে আস্তে তীব্র গণআন্দোলনের রূপ দেওয়া হবে বলে বিএনপি নেতারা ঘোষণা করেছে। এমনকি বিএনপির পক্ষ থেকে এখন হরতাল-অবরোধের মতো ধ্বংসাত্মক জ্বালাও-পোড়াওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও বলা হয়েছে। বিএনপির কোনো কোনো নেতা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। বিএনপি মনে করছে যে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করার জন্য তাদের হাতে সময় ফুরিয়ে আসছে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে এই দাবিতে তারা চূড়ান্ত আন্দোলন গড়ে তুলতে চায়। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বিএনপিকে সহিংস রাজনীতির পথ পরিহার করা, জ্বালাও-পোড়াও ভাঙচুর এবং সন্ত্রাসী আন্দোলন না করার পরামর্শ দিয়েছে। এ ব্যাপারে  যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে কঠোর বার্তাও দিয়েছিল। কিন্তু এখন মার্কিন দূতাবাস থেকে দেওয়া এই বিবৃতি নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তাহলে কি যুক্তরাষ্ট্র জানে যে বিএনপি এখন আবার অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি শুরু করবে এবং এ ব্যাপারে কি তাদের সবুজসংকেত রয়েছে? 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ের জন্য বিএনপির মধ্যে থেকে কেউ কেউ সহিংস রাজনীতির কথা বলছেন। তারা বলছেন রাজনীতি সহিংস না হলে সরকারের টনক নড়বে না। শুধুমাত্র বিক্ষোভ সমাবেশ করে সরকারকে চাপে ফেলা যাবে না। আর তাই বিএনপির মধ্যে একটা পরিকল্পনা আছে যে আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে বড় ধরনের নাশকতার কর্মসূচি গ্রহণ করার। আর সেই কর্মসূচির ব্যাপারে কি তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে সবুজসংকেত দিয়েছে? মার্কিন দূতাবাসের সাম্প্রতিক বিবৃতি সেই  ধারণাকেই আরও পাকাপোক্ত করে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭