কোর্ট ইনসাইড

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কর ফাঁকি মামলার শুনানি আজ


প্রকাশ: 23/05/2023


Thumbnail

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেল জয়ী ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ১১শ’ কোটি টাকা কর ফাঁকির মামলা হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়েছে। গত বুধবার (১৭ মে) বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে বিচারাধীন এই মামলা শুনানি শুরু হয়। আজ (২৩ মে) আবারও  শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ৯ মে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ১১শ’ কোটি টাকা কর ফাঁকির মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছিলেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। গত ৭ মে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১১শ’ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন বলে হাইকোর্টকে জানায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। হাইকোর্টকে এনবিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১২ থেকে  ২০১৭ এই পাঁচ বছরে ১১শ’ কোটি টাকা কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে।

মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট, ফ্যামিলি ট্রাস্ট এবং ইউনূস সেন্টারের নামে ৭৭ কোটি ৩৭ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা স্থানান্তরিত হয়েছে বলে অভিযোগ বিচারাধীন আছে। এসব অর্থ তিনি দান করেছেন বলে দাবি করেছিলেন ড. ইউনূস। যা কর আইন ১৯৯০ এর ৪ ধারা অনুযায়ী অব্যাহতিযোগ্য নয় বলে সে সময় আয়কর বিভাগ জানিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর তিন বছরের আয়কর রিটার্নের বিরুদ্ধে দান করা সেই মামলা চালু করে ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি সর্বোমোট ১৫ কোটি ৪১ লক্ষ ১৬ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা ধার্য্য করে।

মুহাম্মদ ইউনূস জরিমানা আদেশের বিরুদ্ধে আপীল করেন এবং তার আপীল একই বছরের ৩০ এপ্রিল খারিজ করা হয়। এরপর কর আপীলাত কর্তৃপক্ষের আপীল আদেশের বিরুদ্ধে আপীলাত ট্রাইব্যুনালে পুনঃরায় আপীল করেন তিনি। আপীলাত ট্রাইবুনালের ডিভিশন ১ নং বেঞ্চ  আপীল খারিজের আদেশ বহাল রাখে। 

আইনী বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৩ কোটি ৬১ লক্ষ ৭০ হাজার ৪৪৮ টাকা জরিমানার প্রেক্ষিতে সুপ্রীম কোর্টের ডিভিশনের জন্য ২০১৫ সালের ৫ মার্চ পৃথক ৩ টি রেফারেন্স দায়ের করান (যার নম্বর -১০৮, ১০৯ , ১১০/২০১৫ইং)। 

উক্ত রেফারেন্সের আলোকে মহামান্য হাইকোর্ট ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি নিস্পত্তি হবার পূর্ব পর্যন্ত জরিমানা তথা কর দাবী আদায়ের উপর স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। 

অন্যদিকে নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদের ব্যক্তিগত এবং তার প্রতিষ্ঠিত ৯টি প্রতিষ্ঠানের কর সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে এনবিআরের কাছে চিঠি দিয়েছে দুদক। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এনবিআরের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সংশ্লিষ্ট সার্কেল এবং জরিপ দপ্তরকে মৌখিক নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

এনবিআরে পাঠানো দুদকের চিঠি থেকে আরও জানা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে অনুসন্ধানের জন্য উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানকে দলনেতা করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে দুদক। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ৯টি প্রতিষ্ঠানের কর সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে এনবিআরের কর অঞ্চল ১৪-এর আওতাধীন সার্কেল ২৮৭-এর উপকর কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে এই কমিটি। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ কল্যাণ ট্রাস্ট, গ্রামীণ নিটওয়্যার, গ্রামীণ শিক্ষা, গ্রামীণ হেলথ কেয়ার সার্ভিস এবং গ্রামীণ ফ্যাশন অ্যান্ড ফেব্রিকসের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে। আর ড. মুহাম্মদ ইউনূস, প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট এবং ইউনুস ফ্যামিলি ট্রাস্টের দান করা অর্থ সম্পর্কিত তথ্য চেয়েছে অনুসন্ধান কমিটি।

এনবিআরের কর অঞ্চল ১৪ এর সার্কেল ২৮৭ মূলত কোম্পানির আয়কর সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্ব পালন করে। উল্লেখিত কোম্পানিগুলো এই সার্কেলে রিটার্ন দাখিল করে। এ কারণেই দুদক থেকে সরাসরি এই সার্কেলের উপকমিশনারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এনবিআর কর্তৃক মুহাম্মদ ইউনূসের আয়কর মামলা বর্তমান আদালতে বিচারাধীন একটি বিষয়। এখন এনবিআর দুদক এবং আদালতের মাধ্যমে বিষয়টির সমাধানের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭