ইনসাইড বাংলাদেশ

অনিয়ম হলেই ভোট বন্ধ করবে নির্বাচন কমিশন


প্রকাশ: 24/05/2023


Thumbnail

গাজীপুরসহ আগামী পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন শুধু আওয়ামী লীগ-বিএনপির জন্য অগ্নিপরীক্ষা নয়, নির্বাচন কমিশনের জন্য অস্তিত্বের পরীক্ষাও- এমনটি মনে করছেন নির্বাচন কমিশনারগণ। আর এ কারণেই এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে নির্বাচন কমিশন। 

আগামীকাল গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনে কোনো রকম অনিয়ম, ত্রুটি-বিচ্যুতি, পক্ষপাতিত্ব প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনকি নির্বাচনে যদি কোনো রকম অনিয়ম বা বিভ্রান্তি দেখা যায় নির্বাচন কমিশন সাথে সাথে গাইবান্ধার মতো ভোট বন্ধ করে দিবে। নির্বাচন কমিশন মনে করছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের নিরপেক্ষতা প্রমাণের জন্য এটিই শেষ সুযোগ। 

এবার নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে নতুন আইনের আওতায়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় বিএনপি নিজেদেরকে গুটিয়ে রেখেছিল। এখন পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে এই নির্বাচন কমিশনকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় নাই। বিএনপির এই স্বীকৃতি না পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার জন্য বদ্ধপরিকর। নির্বাচন কমিশন যেন স্বতন্ত্র, নিরপেক্ষ, স্বাধীনভাবে কাজ করে- সেজন্য আন্তর্জাতিক মহলও তৎপর। নির্বাচন কমিশনের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলো দফায় দফায় বৈঠক করেছে। এই সমস্ত বৈঠকে নির্বাচন কমিশন তাদেরকে আশ্বস্ত করেছে যে, তারা কখনই পক্ষপাত দোষে দুষ্ট হবে না।

ইতিমধ্যেই নানা কারণে নির্বাচন কমিশন আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে। বিএনপিকে সংলাপে ডাকার পরও নির্বাচন কমিশনের সংলাপে বিএনপি আসেনি। এটি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কিছু কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে সুশীল বুদ্ধিজীবীরা আপত্তি করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অধীনে যে কয়টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সবগুলো নির্বাচনই ভালো নির্বাচন হয়েছে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে বিগত নির্বাচন কমিশনের মতো বিতর্কিত, পক্ষপাতপূর্ণ নির্বাচন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটিও হয়নি। 

এই নির্বাচন কমিশন সবচেয়ে প্রশংসিত হয়েছিল, গাইবান্ধা নির্বাচনের ভোট বাতিল করে। আর এই ধারাটি অব্যাহত রাখতে চায় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের সূত্রগুলো বলছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নানা কারণে তাদের জন্য অগ্নিপরীক্ষা। এই নির্বাচন যদি তারা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ করতে পারে, তাহলে আন্তর্জাতিক মহলে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে এবং নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাযোগ্যতাও বৃদ্ধি পাবে। আবার এই নির্বাচন যদি প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন সরকারের অনুগত- এমন সমালোচনা তীব্র হবে। তাই নির্বাচন কমিশন কখনই এই সমালোচনা কাঁধে নিতে চায় না।

নির্বাচন কমিশন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও নির্বাচন কমিশনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সবুজসঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে যেন কোনো অবস্থাতে কারচুপি না হয় এবং নির্বাচন কমিশন যেমনটি মনে করবে সেভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের আছে। আর তাই গাজীপুর সিটি নির্বাচন- নির্বাচন কমিশনের জন্য অগ্নিপরীক্ষা। 

যদি গাজীপুর সিটি নির্বাচন এবং অন্য চারটি সিটি নির্বাচন বর্তমান কমিশন সুষ্ঠু করতে পারে, তাহলে বিএনপির ওপর একটি বড় ধরনের চাপ তৈরি হবে এবং জাতীয় সংসদের আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়বে। আন্তুর্জাতিক মহলও নির্বাচন কমিশনকে গ্রহণযোগ্যতা দিবে। এরকম একটি পরিস্থিতির মধ্যে আগামীকালের নির্বাচন কিভাবে কমিশন পরিচালনা করে সেটাই দেখার বিষয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭